নতুন বছরের সুচনা দিনে শুরু হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ পণ্যমেলা। যা ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা হিসেবে পরিচিত।
ঢাকায় এ মেলা চলছে দুই যুগ ধরে। এর মধ্যে গত ১৮ বছর ধরে মেলায় অংশ নিচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। অন্যান্যবারের মতো এবারও বিশেষ চমক থাকছে এ প্রতিষ্ঠানের।
এবার বাণিজ্য মেলায় তিন-তলা বিশিষ্ট দুটি নয়নাভিরাম সুদৃশ্য প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন থাকছে ওয়ালটনের। এতে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ খ্যাত এ প্রতিষ্ঠানের নানা প্রযুক্তি পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রি করা হবে।
তিনতলা প্যাভিলিয়ন দুটির প্রবেশদ্বারের ডিজাইনে থাকছে নান্দনিক টেরা-কোটা। আরো থাকছে ১৬/১২ ফুটের বড় পর্দার এলইডি স্ক্রিন। বলা চলে সর্বাধিক সংখ্যক মডেল এবং লেটেস্ট প্রযুক্তি পণ্য নিয়ে মেলার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হতে যাচ্ছে ওয়ালটনের প্যাভিলিয়ন।
প্যাভিলিয়ন দুটির প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় প্রদর্শন ও বিক্রির জন্য থাকছে ফ্রিজ, টিভি, ওয়াশিং মেশিন, মোবাইল ফোন, এসি, ল্যাপটপ, ডিজিটাল ডিভাইস অ্যান্ড এক্সেসরিজ, লিফট, কম্প্রেসার, জেনারেটর, ইন্ডাস্ট্রিয়াল সলিউশনস, ইলেকট্রিক ও মাইক্রোওয়েব ওভেন, ইন্ডাকশন কুকার, ব্লেন্ডার, গ্যাসস্টোভ, বৈদ্যুতিক পাখা, ইলেকট্রিক সুইস-সকেট, এসিড লেড রিচার্জেবল ব্যাটারিসহ কয়েক শতাধিক মডেলের বিশ্বমানের ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল ও হোম অ্যাপ্লায়েন্সেস। থাকছে হেল্প ডেস্ক। এছাড়া তৃতীয় তলায় থাকছে সুবিশাল স্টোর।
বাণিজ্য মেলায় ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, প্রতিবারই ওয়ালটন বাণিজ্য মেলায় ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের জন্য নতুন নতুন চমক দিয়ে থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এবার আমাদের বড় চমক হচ্ছে দুটি প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন। যা মেলার দুই যুগের ইতিহাসে অন্যতম। প্যাভিলিয়নের বাইরের দিকে যে দুটি বড় পর্দার এলইডি স্ক্রিন তৈরি করা হয়েছে সেখানে ওয়ালটন পণ্যের অত্যাধুনিক উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং কর্পোরেট ডক্যুমেন্টারি প্রদর্শিত হবে। এতে করে, মেলায় আগত ক্রেতা-দর্শণার্থীরা ওয়ালটন পণ্যের উৎপাদান সম্পর্কে বাস্তুব জ্ঞান পাবেন।
প্যাভিলিয়ন দুটিতে বিপুলসংখ্যক ক্রেতা, দর্শণার্থীর চাপ মোকাবেলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে অধিক জোর দিয়েছে ওয়ালটন। কাঠামো নির্মাণ, অভ্যন্তরীন সাজসজ্জ্বায়, বৈদ্যুতিক সংযোগ স্থাপনে ব্যবহার করা হয়েছে ফায়ার রেসিস্ট্যান্ট ক্যাবলস, স্টিলের কাঠামো, এসিপি (অ্যালুমিনিয়াম কম্পোজিট প্যানেল) বোর্ড, গ্লাস ইত্যাদি। প্যাভিলিয়নের বিভিন্ন ফ্লোরে যাতায়াতের জন্য থাকছে সুপরিসর লিফট। ওয়ালটনের তৈরি এই লিফট প্রদর্শন ও বিক্রিও করা হবে।
এছাড়া মেলায় ওয়ালটন পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রিতে একশ সেলস্ এক্সিবিটর কাজ করবে। দেশি-বিদেশি ক্রেতা, দর্শনার্থীদের কাছে বাংলাদেশে তৈরি প্রযুক্তি পণ্যের উচ্চ গুণগতমান ও অন্যান্য বিশেষ দিক তুলে ধরতে এক্সিবিটরদের দেয়া হয়েছে উচ্চতর প্রশিক্ষণ। পণ্যে ব্যবহৃত অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান দিতে তাদের ওয়ালটন কারখানা ঘুরে দেখানো হয়েছে বলেও জানান নির্বাহী পরিচালক হুমায়ুন কবীর।
প্যাভিলিয়ন বিষয়ে স্থপতি শাদী মোহাম্মদ রুম্মান জানান, ওয়ালটনের যে দুটি দৃষ্টিনন্দন প্যাভিলয়ন হচ্ছে তার প্রতিটির আয়তন ৭ হাজার ৫’শ বর্গফুট। নির্মাণ কাজে অনুসরণ করা হয়েছে গ্রিন টেকনোলজী মেথড। মেলা শেষে এসব ম্যাটেরিয়ালস দীর্ঘস্থায়ী কাঠামো নির্মাণেও কাজে লাগবে। স্টিল ও এসিপি বোর্ডগুলোর ৯০ শতাংশই পরবর্তীতে ব্যবহারযোগ্য। ইন্টেরিয়র ডেকোরেশনে ব্যবহার করা হচ্ছে ফায়ার রেসিস্ট্যান্ট এসিপি (অ্যালুমিনিয়াম কম্পোজিট প্যানেল), গ্লাস এবং স্টিলের ফ্রেম। প্যাভিলিয়নে বাইরে থাকছে সবুজের সমারোহ।
মেলার প্রস্তুতি প্রসঙ্গে ওয়ালটন প্যাভিলিয়ন (নম্বর-২৬ ও ২৯) নির্মাণের দায়িত্বে নিয়োজিত সেলিম রেজা জানান, বাইরের কাঠামোর কাজ শেষ। চলছে অভ্যন্তরীণ সাজ-সজ্জার কাজ। প্রযুক্তি পণ্যে ওয়ালটন দেশের এক নম্বর ব্র্যান্ড। যে কারণে ওয়ালটনের প্রতি সবার একটি বাড়তি আকর্ষণ থাকে এবং সবাই পণ্য কিনতে বা দেখতে আসেন। একসঙ্গে যাতে অনেক ক্রেতা-দর্শনার্থী প্রবেশ এবং বের হতে পারে সেজন্য ২০ ফুট প্রশস্ত প্রবেশদ্বার করা হচ্ছে। নিচতলা থেকে দ্বিতীয় তলায় ওঠার সুবিধার্থে থাকছে অত্যাধুনিক সুপরিসর লিফট। পাশাপাশি থাকবে ৫ ফুট চওড়া সিঁড়ি।
অন্যদিকে ভেতরের আলোকসজ্জায় ব্যবহার করা হয়েছে ওয়ালটনের নিজস্ব কারখানায় তৈরি এলজিপি সিট। এর ফলে অতিরিক্ত আলোতে ক্রেতা ও দর্শনার্থীদের চোখের কোন ক্ষতি হবে না বলে জানান মেলায় ইন্টেরিয়র কো-অর্ডিনেটর হাসান জাহান।
উল্লেখ্য, বাণিজ্য মেলায় এ পর্যন্ত ১২ বার শীর্ষ ভ্যাটদাতার সম্মান অর্জন করেছে ওয়ালটন। এছাড়া প্রায় প্রতিবছরই সেরা প্যাভিলিয়নের পুরস্কার পেয়ে আসছে। দেশের এক নম্বর ব্র্যান্ড হিসেবে ওয়ালটনের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি পণ্যের প্রতি ক্রেতা-দর্শণার্থীদের বাড়তি আকর্ষণ থাকে। সে কারণে প্রযুক্তিপ্রেমীরা ভিড় করেন ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে।