রাত নামলেই শীতের সাথে পড়ছে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় সমান হওয়ায় শীতের তীব্রতা একই রকম অনুভূত হচ্ছে। ফলে জনজীবনে দুর্ভোগ বেড়েছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র জানায়, শনিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় প্রায় ১ ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে।
তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও বাস্তব অবস্থা ভিন্ন। বিগত দিনের চেয়ে শনিবার দুপুরের পর থেকে ঠান্ডার মাত্রা আরো বেড়ে গেছে। কনকনে ঠান্ডায় হাত-পা বাইরে রাখাটাই মুশকিল হয়ে পড়েছে।
ঠান্ডার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষেরা। পুরনো কাপড় দিয়ে এবারের চলতি শীত কোন ভাবেই মোকাবেলা করতে পারছেন না তারা। সামান্য আয়ে গরম কাপড় কেনার টাকা না থাকায় সন্তানদের নিয়ে বিপদে পড়েছেন। কনকনে ঠান্ডায় কাজে যেতে না পারায় আরো বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবিরা।
কুড়িগ্রামের নদ-নদী বেষ্টিত চরাঞ্চলগুলোর বাসিন্দাদের অবস্থা আরো করুণ। জেলার দারিদ্র মানুষের প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ বসবাস করেন এই চরাঞ্চলে। চরবাসীরা তাদের সাধারণ কাপড়-চোপড়ে কোন ভাবেই কনকনে ঠান্ডা মোকাবেলা করতে পারছেন না। তাই পরিবার পরিজন নিয়ে এবারের ঠান্ডায় খুবই কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তারা।
উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন জানান, আমার হাতিয়া ইউনিয়নে চরাঞ্চলসহ মোট জনসংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার। এরমধ্যে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। এসব দরিদ্র মানুষের জন্য সরকারিভাবে মাত্র সাড়ে ৪শ কম্বল বরাদ্দ পেয়েছি। যা মাত্র সাড়ে ৪শ পরিবারকে একটি করে কম্বল দেয়া সম্ভব হয়েছে। বেসরকারিভাবেও এখন পর্যন্ত কেউ কম্বল বা শীত বস্ত্র দিতে আসেননি। এই দরিদ্র মানুষগুলো শীত কষ্টে দিন পার করছে।
জেলা শহরের আদর্শ পৌর-বাজারে বাজার করতে আসা মানুষজন বলছেন, এবার মনে হয় ঠান্ডার মাত্রাটা অনেক বেশি। এখনই বাইরে হাত-পা বের করলে অবশ হয়ে যায়। আরো সামনের দিনে যে কি হবে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোছা: সুলতানা পারভীন জানান, কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলায় এরই মধ্যে সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া ৫১ হাজার ৫শ ১৪ পিস কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এখনো নতুন করে কোন বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।