পাকিস্তানে আগামী সফরটি যাতে সংক্ষিপ্ত হয় সে জন্যই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দুটি ম্যাচ বাদ দিয়ে শুধু তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলতে আগ্রহী বিসিবি। নিরাপত্তা ব্যবস্থা যেমনই থাকুক না কেন বাংলাদেশ সাত দিনের বেশি পাকিস্তানে থাকবে না বলে পিসিবিকে ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে। আর তিনটি টি-টোয়েন্টি একটি নির্দিষ্ট ভেন্যুতেই খেলার ইচ্ছা। ইতিমধ্যে পছন্দের ভেন্যুর কথাও পিসিবিকে জানিয়ে দিয়েছে বিসিবি, যদিও নিজাম উদ্দিন চৌধুরী এখনই ভেন্যুটির নাম বলতে চান না।
নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘সবসময় পিসিবির সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে। আমরা ইতিমধ্যে তাদের জানিয়েছি, দীর্ঘ সময় পাকিস্তানে অবস্থান করার পক্ষপাতী আমরা নই। টেস্ট দুটি অন্য কোনো নিরপেক্ষ ভেন্যুতে আয়োজিত হলে খেলবো। তবে তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে এই ম্যাচগুলো নির্দিষ্ট ভেন্যুতে খেলতে চাই। ইতিমধ্যে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে নির্দিষ্ট ভেন্যুর নাম জানিয়ে দিয়েছি। নিরাপত্তার সার্বিক দিক বিবেচনা করে পিসিবি হয়তো বিষয়টি বিবেচনা করবে।’
পাকিস্তানে বাংলাদেশের লম্বা সফরে যাওয়ার অনীহার কারণটি নিজাম উদ্দিন জানিয়ে দিয়েছেন, ‘সংক্ষিপ্ত সময় আর দীর্ঘ সময় থাকার মধ্যে কতটা পার্থক্য আছে- নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা ভালোই বুঝতে পারবেন। দীর্ঘ সময় ধরে নির্দিষ্ট একটি গন্ডির মধ্যে থাকা, চলাফেরায় সীমাবদ্ধাতাসহ নানা ইস্যুতে আমরা সংক্ষিপ্ত সফর করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
গত বুধবার বাংলাদেশের আসন্ন সফর নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলে পিসিবি। সেখানে বিসিবির পূর্ণাঙ্গ সফরে যেতে না চাওয়ার ব্যাপারে পরিষ্কার বিরক্তি প্রকাশ করেন পিসিবির প্রধান নির্বাহী ওয়াসিম খান। সংবাদমাধ্যমকে ওয়াসিম খান জানান, তারা কড়া ভাষায় বিসিবিকে চিঠি দিয়ে এটির কারণ জানতে চেয়েছেন। এ ব্যাপারে নিজাম উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পিসিবিকে বোঝানোর চেষ্টা করছে বিসিবি, ‘আমাদের সঙ্গে তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি তাদের বোঝাতে। অবশ্যই তারা চাইবে পুরো সিরিজ খেলাতে। কিন্তু আমরা কেন খেলতে চাইছি না সেটা তাদের জানিয়েছি। আশা করি তারা আমাদের সমস্যা বুঝতে পারবে।’
গত অক্টোবরে বাংলাদেশের নিরাপত্তা প্রতিনিধি দল ঘুরে এসেছে পাকিস্তান। তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে অক্টোবর-নভেম্বরে বাংলাদেশের মেয়েরা সেখানে তিনটি টি-টোয়েন্টি ও দুটি ওয়ানডে খেলে এসেছে । একই সময়ে পাকিস্তানে খেলে এসেছে অনূর্ধ্ব-১৬ দলও। তাই নতুন করে আর পর্যবেক্ষক দল পাঠানো হবে না বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাহী। আগের পর্যবেক্ষণ রিপোর্ট এবং পাকিস্তানের বাংলাদেশ হাইকমিশনের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ীই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এছাড়া আইসিসি নিয়োজিত ম্যাচ অফিসিয়ালদের পরামর্শও নেবে বিসিবি, ‘কয়েক মাস আগে সরকারী প্রতিনিধি দল পাকিস্তান সফর করেছিলো। ওই রিপোর্টকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছি। ওই রিপোর্টের উপরই নির্ভর করেই আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবো। নতুন করে কোনো নিরাপত্তা পর্ববেক্ষক পাঠানোর পরিকল্পনা নেই। হাইকমিশন ও আইসিসির স্বাধীন মতামতকে আমরা গুরুত্ব দেবো।’
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে পাকিস্তান সফরে যা্ওয়া শ্রীলঙ্কা টেস্ট দলের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর নিরাপত্তা শঙ্কায় আর কোনো দল সেখানে টেস্ট খেলতে যায়নি।পাকিস্তানে টেস্ট ক্রিকেট ফেরানোর ‘লড়াইয়ে’ সেই শ্রীলঙ্কা দলকেই পাকিস্তান বড় বন্ধু হিসেবে পেয়েছে পিসিবি। ১০ বছর পর শ্রীলঙ্কা দলই আবার পাকিস্তানে গিয়ে এখন টেস্ট খেলছে।