২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | দুপুর ২:০০

টাকা দিয়ে প্রেমিক কিনছে চীনা মেয়েরা

কিফেং। উনিশ বছর বয়সী চীনা তরুণী। ছদ্ম নামধারী এই তরুণী এক হাজার ইউয়ান ব্যয় করে একজন ভার্চুয়াল প্রেমিক কিনেছেন। ভার্চুয়াল প্রেমিকের সঙ্গে দিনের একটা বড় সময় পার করেন কিফেং। হাসি-কান্না-বেদনা সব কিছুই সে শেয়ার করে প্রেমিকের সঙ্গে।

কিফেং-এর ভার্চুয়াল প্রেম বানানো গল্প নয়। তার মতো লাখো চীনা তরুণী এখন ভার্চুয়াল প্রেমে মজেছেন। অর্থাৎ টাকা দিয়ে প্রেমিক কিনছেন তারা। চীনা তরুণীদের কাছে ভার্চুয়াল প্রেমিকের কদর এখন অনেক বেশি।

ভার্চুয়াল প্রেমিক হচ্ছে অনেকটা ফ্রেন্ডশিপ কলসেন্টারের মতো। এই প্রেমিকেরা টাকার বিনিময়ে আপনার সঙ্গে কথা বলবে। আপনাকে সঙ্গ দিবে। আপনার কষ্ট দূর করবে। তবে আপনার টাকা শেষ তো তাদের মিষ্টি কথাও শেষ। যারা সাম্প্রতিক সময়ে বলিউডের ব্যবসা সফল সিনেমা ‘ড্রিমগার্ল’ দেখেছেন তারা ভার্চুয়াল প্রেমিকের অর্থ বুঝতে পারবেন। এই সিনেমার নায়ক ভার্চুয়াল একজন প্রেমিকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।

চীনে ভার্চুয়াল প্রেমিকের এখন রমরমা ব্যবসা চলছে। চাহিবা মাত্র নারী ক্রেতাদের তা সরবরাহ করা হচ্ছে। ভার্চুয়াল প্রেমিকদের দামের রকমফেরও আছে। কয়েক ইউয়ান থেকে শুরু করে কয়েক হাজার ইউয়ান পর্যন্ত তাদের প্রেমের মূল্য।

জুহানসান জু এমনই এক ভার্চুয়াল প্রেমিকের ভূমিকায় অভিনয় করা তরুণ। বাইশ বছর বয়সী জু এএফপি-কে বলেন, আমার প্রেমিকাদের অধিকাংশই উনিশ থেকে বাইশ বছরের তরুণী। বিভিন্ন চাহিদা নিয়েই তারা আমাদের কাছে আসে। কেউ বন্ধুসুলভ উপদেশ চায়, কেউ আবার প্রেম চায়। তাদের সব ধরনের চাহিদা আমরা পূরণ করি।

কিন্তু কেন? কিসের নেশায় চীনা নারীরা রক্ত-মাংসের মানুষ ফেলে এমন অদৃশ্য প্রেমের পিছনে অর্থ ঢালছেন? বিষয়টি নিয়ে কয়েক বছর ধরে গবেষণা করছেন নানজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ক্রিস টান। তার মতে এটা চীনা নারীবাদের নতুন ধরন। তাছাড়া দীর্ঘকাল ধরে চীনে এক সন্তান নীতি চালু থাকার ফলে অধিকাংশ পিতা-মাতা তাদের মেয়েদের অনেকটা ছেলেদের মতো করে মানুষ করেছেন। এই মেয়েরা অনেক বেশি কর্ম সচেতন। তারা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চায়। ফলে বাস্তব জীবনের প্রেম-ভালোবাসা তাদের ততটা আকর্ষণ করে না। বাস্তব প্রেমীকের সাথে রোমান্স তাদের ভালো লাগে না। তাই তারা টাকা দিয়ে প্রেমিক কিনতে চায়। ঘণ্টা-দিন-সপ্তাহ চুক্তি করে প্রেমীকের সঙ্গে। চুক্তি অনুযায়ী তার সঙ্গে হাসি-কান্না-বেদনা সব কিছু শেয়ার করে। এরপর কাজে ফিরে যায়।

অধ্যাপক ক্রিসের কথার সত্যতা মেলে আটাশ বছরের যুবতী লিসার বক্তব্যে। লিসা একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক। লিসার মতে ভার্চুয়াল প্রেমে পিছুটান নেই। যখন খুশি তখন তা কেনা যায়। ভালো না লাগলে সম্পর্ক ভাঙা যায়। বাস্তব প্রেমিকের মতোই তাদের সঙ্গ উপভোগ করা যায়।

প্রকাশ :ডিসেম্বর ১১, ২০১৯ ১:৪৯ অপরাহ্ণ