দেশে দুর্নীতি সর্বগ্রাসী রূপ ধারণ করেছে বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুধু আর্থিক খাতে নয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক দুর্নীতিও চলছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। এসব দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব।
সোমবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) পূর্ণাঙ্গ কমিটির নেতাদের নিয়ে দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানো শেষের সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ফখরুল।
ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে এসে আমরা শপথ নিয়েছি যে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য জনগণের যে সংগ্রাম তা অব্যাহত রাখবো।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমনের উদ্দেশে একটা পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক দুর্নীতি দমনের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের যে দুর্নীতি সর্বগ্রাস করেছে তার বিরুদ্ধে জনগণের রুখে দাঁড়ানো দরকার।’
‘আমাদের দেশে সমস্ত দুর্নীতি শুরু হয়েছে। আজকে আর্থিক দুর্নীতি এমন এক পর্যায়ে গিয়েছে, যেখানে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্যের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হচ্ছে।’
ফখরুল বলেন, ‘আমরা দেখেছি শুদ্ধি অভিযানের নাম করে ছোটখাটো দুর্নীতির সাথে যারা জড়িত শুধু তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা বড় দুর্নীতিবাজ, রুই কাতলা, সমস্ত সমাজকে গ্রাস করছে তাদের সম্পর্কে কিছু আলোচনা হচ্ছে না।’
‘বাংলাদেশের অর্থনীতিকে দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। একটি-দুটি সেক্টরে নয়। শেয়ারবাজার দুর্নীতি, ব্যাংক কেলেঙ্কারি, বিদ্যুতের পাওয়ার প্ল্যান্ট দুর্নীতি, মেগা প্রজেক্টের নামে মেগা দুর্নীতি। এইগুলো এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন প্রায় শূন্যের কোঠায় এসে পৌঁছিয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দুর্নীতির সবচেয়ে বড় কারণ, দুর্নীতির মধ্য দিয়ে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ধ্বংস করে দিয়ে বর্তমান সরকার ক্ষমতা দখল করে আছে। এই বিষয়ে জনগণ সচেতন হয়ে উঠছে। তারা প্রতিবাদ করছে। সকল ধরনের দুর্নীতি প্রতিরোধ করার জন্য তারা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি আন্দোলন-সংগ্রামে ব্যর্থ হয়ে এখন বিদেশিদের কাছে নালিশ করছে- এর জবাব দেনও বিএনপির মহাসচিব। বলেন, ‘তাদের এগুলো পুরনো কথা। এসব কথা গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছে। এগুলো বলা ছাড়া তাদের কোনো উপায় নেই। এসব চটকদার কথা না বলে তো তারা মিডিয়াতেও টিকে থাকতে পারবে না।’
আওয়ামী লীগের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, ‘জনগণের কাছে তাদের কোনো জায়গা নেই। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাদের কোনো ভিত্তি নেই। তারা জোর করে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে রয়েছে। আওয়ামী লীগের উচিত এখন জনগণের কাছে যাওয়া।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘তারা যদি মনে করে তারা এত জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল, তাহলে নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে একটা নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন দিক। নির্বাচন দিলেই তো তা প্রমাণ হয়ে যায়। জনগণ ও তাদের প্রতিনিধিত্বমূলক একটি সরকার পাবে।’