দেশজনতা অনলাইন : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের রিপোর্ট চূড়ান্ত হলেও তা সরকারের হস্তক্ষেপে বন্ধ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
দলটি বলছে, প্রধানমন্ত্রীর গতকালের বক্তব্য রায়ের শুনানিতে বাধা প্রদান করেছে। তার বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘রিপোর্ট চূড়ান্ত হয়েছে এবং সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপে তার জামিন হতে দেওয়া হয়নি। গতকাল প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা বিচার বিভাগের উপর হস্তক্ষেপের শামিল, আদালত আবমাননার শামিল। তিনি এবং তার সরকার চান না যে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হোক।’
সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির মহাসচিব আরো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রীকে গডফাদার বলেছেন। বলেছেন খালেদা জিয়া রাজার হালে আছেন। এর মাধ্যমে তিনি বিএসএমএমইউ কে ভয় দেখিয়েছেন।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিষয়টি কাকতালীয় কিনা জানিনা। একদিকে সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার বিরুদ্ধে চার্জশিট অনুমোদন করা হয়েছে, অপরদিকে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য। তার এ বক্তব্যে আদালতের উপর থ্রেট করা হয়েছে বলে মনে করি। এটা ফ্যাসিজমের একটি রূপ। তারা ভয় দেখাতে চায়।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আপিল শুনানি সাত দিন পিছিয়ে দেওয়ায় এবং তার আইনজীবীদের মৌখিক আবেদন গ্রহণ না করায় সমগ্র জাতি শুধু হতাশই নয় বিক্ষুব্ধ হয়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অত্যন্ত বিস্ময় এবং উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে মামলার শুরু থেকেই সাধারণ মানুষ যে সুযোগ-সুবিধা পান তাকে সে সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়নি। এ ধরনের মামলায় ৭ দিনের মধ্যে সাধারণত জামিন পান। কিন্তু তার ক্ষেত্রে এটা হয়নি। তার জামিনে পদে পদে বাধা দেয়া হচ্ছে। তার জামিন না দেওয়াটা প্রচলিত রীতি-নীতির বিরুদ্ধেই শুধু নয়, অমানবিকও বটে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য প্রতিবেদন উপস্থাপন না করে আদালত অবমাননা করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার পরবর্তী চিকিৎসা না হলে তার মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। তার চিকিৎসার ক্রমাবনতি ও চিকিৎসা না হওয়ার দায় দায়িত্ব এই সরকার প্রধানকে বহন করতে হবে।’
এদিকে খালেদা জিয়ার জামিনের শুনানি পেছানোর ঘটনায় রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ করেছে বলে জানান বিএনপির মহাসচিব।
নয়া পল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। প্রেস ব্রিফিংয়ের পর একটি গাড়িতে করে চলে গেছেন বিএনপি মহাসচিব। কার্যালয়ে সামনে পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। মহাসচিব কার্যালয় থেকে নামার আগে একটি ব্যানার নিয়ে কয়েকজন দাড়িয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।পুলিশ এগিয়ে এলে তারা দৌড়ে পালান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।