২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৫:৫১

পেঁয়াজের মূল্য বেড়েছে পাঁচশ ভাগ

যতই দিন যাচ্ছে, ততই বাড়ছে পেঁয়াজের মূল্য। দেশি ও আমদানি করা—দুই ধরনের পেঁয়াজের মূল্যই বেড়ে চলেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের কেজিতে বেড়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা। আর আমদানি করা পেঁয়াজের মূল্য বেড়েছে কেজিপ্রতি ৩০ টাকারও বেশি। শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায়। অথচ ২০১৮ সালের নভেম্বরে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। এই হিসাবে গত এক বছরে পেঁয়াজের মূল্য বেড়েছে পাঁচশ ভাগের বেশি। নিত্যপ্রয়োজনীয় এ পণ্যটির মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় রাজধানীর অনেক খুচরা ও মুদি দোকানদার পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে মানিকনগর এলাকার মুদি দোকানদার ইউসুফ আলী বলেন, ‘মোকামে পেঁয়াজ কম, মূল্যও বেশি। এ কারণে এখন আর পেঁয়াজ বিক্রি করছি না। কেনা মূল্যেও মানুষ পেঁয়াজ নিতে চায় না। বেশি মূল্যের কথা শুনলে অনেকেই গালি দেন। তাই বাধ্য হয়ে পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি।’ একই সুর মানিকনগর জামে মসজিদ সংলগ্ন এক মুদি দোকানদারেরও। তিনিও অস্বাভাবিক মূল্য বেড়ে যাওয়ায় পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছেন।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায়ও একই পরিস্থিতি। তবে যেসব দোকানদার নিয়মিত পেঁয়াজ বিক্রি করছেন, তারা বলছেন, আগে প্রতিদিন এক থেকে দেড় মণ পেঁয়াজ বিক্রি হলেও এখন সারা দিনে ২০ কেজি পেঁয়াজও বিক্রি হয় না।

জানতে চাইলে উত্তর কমলাপুর এলাকার দোকানদার রবিউল করিম বলেন, ‘পেঁয়াজ পাইকার থেকেই কম আসছে।’ তিনি বলেন, ‘দেশি পেঁয়াজ ২৫০ টাকায় বিক্রি করছি। দেশি ভালো পেঁয়াজের মূল্য আরও বেশি। এ কারণে তিনি সেই পেঁয়াজ আনেননি বলেও জানান।

এদিকে, শুক্রাবাদসহ রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আমদানি করা মিসরের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়। মিয়ানমারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৬০ টাকা কেজি দরে। তবে ভালো পেঁয়াজ (দেশি) ২৬০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

যদিও পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে ঢাকায় টিসিবি এখন প্রতিদিন ৫০টি ট্রাকে ১ হাজার কেজি করে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। টিসিবি’র পেঁয়াজ অবশ্য ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, টিসিবি’র তথ্য বলছে, এক বছর আগে অর্থাৎ ২০১৮ সালের নভেম্বরে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকায় এবং আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছিল ২০ থেকে ৩০ টাকায়। এই হিসাবে গত এক বছরে দেশি পেঁয়াজের মূল্য বেড়েছে ৫৪৬ দশমিক ১৫ শতাংশ। আর গত এক মাসের ব্যবধানে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটির মূল্য বেড়েছে ৮২ দশমিক ৬১ শতাংশ। এক বছরে আমদানি করা পেঁয়াজের মূল্য বেড়েছে ৫৪০ শতাংশ।

এ প্রসঙ্গে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘অতি লোভী ব্যবসায়ীদের কারণে পেঁয়াজের মূল্য কমছে না। তবে, মূল্য না কমার আরেকটি কারণ হলো চাহিদার তুলনায় আমদানি কম হওয়া।’ তিনি বলেন, ‘নতুন পেঁয়াজ উঠলে এমনিতেই বাজার স্বাভাবিক হবে। ব্যবসায়ীদের অনেকেই বলছেন, কিছু দিনের মধ্যেই নতুন পেঁয়াজ আসা শুরু হবে। তখন হয়তো মূল্য কমবে।’ নতুন পেঁয়াজ না আসা পর্যন্ত পেঁয়াজের মূল্য কমার কোনও সম্ভাবনা নেই।

প্রকাশ :নভেম্বর ৩০, ২০১৯ ১২:০৭ অপরাহ্ণ