আদালত প্রতিবেদক : ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির জবানবন্দির ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার মামলায় সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় এটি প্রথম কোনো রায়। আসামি মোয়াজ্জেম রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায় পড়ার সময় বিচারক বলেন, ‘নুসরাতের ভিডিও ধারণ করা অবৈধ। কারও অনুমতি ছাড়া ভিডিও ধারণ করা আইনত দণ্ডনীয়।’
সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত গত মার্চ মাসে তার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেন। সেসময় সোনাগাজী থানায় তার জবানবন্দি নেন তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন।
তার কয়েক দিন পর মাদ্রাসার ছাদে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের গায়ে আগুন দিলে সারাদেশে আলোচনা শুরু হয়। তখন নুসরাতের ওই জবানবন্দির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হলে গত ১৫ এপ্রিল ওসি মোয়াজ্জেমকে আসামি করে ঢাকায় বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
পরিদর্শক মোয়াজ্জেমই ওই ভিডিও ছড়িয়েছেন- পিবিআইয়ের এমন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চার মাস আগে এ মামলার বিচার শুরু হয়। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ২৮ নভেম্বর রায়ের দিন রেখেছিলেন বিচারক।
গত ১৪ নভেম্বর ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারা অনুযায়ী মামলার একমাত্র আসামি পুলিশ পরিদর্শক মোয়াজ্জেম হোসেন আত্মপক্ষ সমর্থন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে তিনি সেদিন বিচারককে বলেন, ‘এই অভিযোগে যত বড় শাস্তিই দেন না কেন, তার চেয়ে বড় শাস্তি আমি পেয়ে গেছি।’
উল্লেখ্য, নুসরাতকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় তার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ ১৬ জনকে গত ২৪ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ড দেয় ফেনীর নারী ও শিশুনির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। সেই রায় ডেথ রেফারেন্স হিসেবে শুনানির জন্য হাইকোর্টে রয়েছে।