আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ হংকং-এর স্থানীয় নির্বাচনে ভূমিধস জয় পেয়েছে অঞ্চলটির গণতন্ত্রপন্থীরা। প্রায় ৯০ শতাংশ আসনে বিজয় ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছে তারা। বিপরীতে দৃশ্যত ভরাডুবি হয়েছে চীনপন্থীদের। এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ফল ঘোষণা করা না হলেও প্রাথমিক ফলাফলে ১৮টি পৌরসভার ১৭টিতেই বিজয়ী হয়েছে গণতন্ত্রপন্থীরা। অথচ আগের মেয়াদে পৌরসভায় তাদের আসন ছিল শূন্যের ঘরে। হংকং-এর সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম আরটিএইচকে-এর বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে ভয়েস অব আমেরিকা।
৪৫৩টি কাউন্সিলর পদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২৭৮টিতে জয় পেয়েছে গণতন্ত্রপন্থীরা। চীনপন্থীরা জয় পেয়েছে ৪২টিতে। এমনকি প্রভাবশালী বেইজিংপন্থী নেতাদেরও ভরাডুবি হয়েছে রাজনীতিতে প্রায় নতুন গণতন্ত্রপন্থীদের কাছে। এই ব্যালট বিপ্লবের মধ্য দিয়ে হংকং-এর মানুষ বেইজিং-এর প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট করেছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।স্থানীয় নির্বাচন হলেও এবারের নির্বাচনে ব্যাপক ভোটার উপস্থিতি ছিল। সকালের মধ্যেই হংকংজুড়ে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে হাজির হয় ১০ লাখেরও বেশি ভোটার। নির্বাচনটিকে অঞ্চলটির চীনপন্থী শাসক ক্যারি ল্যাম-এর জন্য একটি পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছিল। দৃশ্যত এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
ছয় মাস ধরে হংকং-এ তীব্র চীনবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যেই রবিবার এ ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনের বিজয়ী হওয়ার মাধ্যমে চীনকে একটি বার্তা দিতে চেয়েছিল অঞ্চলটির গণতন্ত্রপন্থীরা। ভোটগ্রহণ কার্যক্রমে কোনও ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করতে তাই সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছিল তারা। শেষ পর্যন্ত সহিংসতা ছাড়াই ভোটগ্রহণ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। যদিও পরে ঝামেলা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় আগেভাগেই ভোটকেন্দ্রে হাজির হয়েছিলেন হংকং-এর বাসিন্দারা।
এবারের নির্বাচনে ৪৫৩টি আসনে কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন রেকর্ড সংখ্যক এক হাজার ১০৪ জন প্রার্থী। মোট ভোটার সংখ্যা ৪১ লাখ ৩২ হাজার ৯৭৭ জন। হংকং-এর দীর্ঘ চীনবিরোধী বিক্ষোভের বাস্তবতায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও এ নির্বাচনের ফলাফলের স্বতন্ত্র তাৎপর্য রয়েছে।
আঞ্চলিক এ নির্বাচনে বিজয়ী কাউন্সিলরদের হাতে খুব বেশি ক্ষমতা থাকে না। কিন্তু এবারের নির্বাচন অন্য কারণে গুরুত্বপূর্ণ। জুনে শুরু হওয়া সরকারবিরোধী আন্দোলনের পর এটাই প্রথম নির্বাচন। আর তাতেই ভরাডুবি ঘটলো চীনপন্থীদের। হংকং বাপ্টিস্ট ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক কেনেথ জান বলেন, ‘হংকংয়ের জনগণ নির্বাচনকে মত প্রকাশের আরেকটি মাধ্যম হিসেবে দেখছে।’ সূত্র: ভয়েস অব আমেরিকা, রয়টার্স, বিবিসি।