অল্প শ্রম ও কম পয়সা খরচে বেশি লাভ হওয়ায় সুপারি চাষে ঝুঁকছে অনেকে। জেলার বিভিন্ন হাটগুলো সুপারি কেনাবেচা জমজমাট।
প্রতিদিন এসকল হাটগুলোতে জেলা ও জেলার বাইরে থেকে ভীড় জমাচ্ছেন শত শত কৃষক এবং পাইকার। কেনা-বেচা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার সুপারি। সেপ্টেম্বর মাস থেকে সুপারি পাকা শুরু হয় চলে পুরো জানুয়ারি মাস পর্যন্ত।
পান বিলাসীদের কাছে সুপারি একটি অতি প্রয়োজনীয় ফল। এক সময় ফিলিপাইন ও নিকোবর থেকে আমদানীকৃত এশীয় পামগাছ এরিকা কাটচু জাতের এ ফলটি বাংলাদেশের প্রায় সব জেলায় আবাদ হলেও বরিশাল বিভাগে বেশি জন্মে।
কৃষকরা জানিয়েছেন, একবার এ গাছ লাগালে তেমন কোন পরিচর্যা ছাড়াই ৩০-৩৫ বছর ফলন দেয় আয় হয় ধানের চেয়ে তিন-চার গুণ বেশি। তাই এ অঞ্চলের কৃষকরা সুপারি চাষের দিকে বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছে ।
তাছাড়া সুপারি বাগানে অনায়াশে লেবু, হলুদসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করা যায়। তাইতো ঝালকাঠির কয়েক হাজার পরিবার সুপারি চাষে তাদের ভাগ্য বদল করেছে। কৃষি বিভাগও নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন চাষিদের।
জলায় চলতি মৌশুমে প্রায় ৫৫০ হেক্টর জমিতে সুপারির আবাদ হয়েছে। জেলার চার উপজেলার মধ্যে রাজাপুরে সুপারির বাগান রয়েছে বেশি। বরিশাল বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বড় সুপারির হাট এখানে।
রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া সুপারির হাটে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকার সুপারি কেনাবেচা হয়। পাইকাররা এখান থেকে সুপারি কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানের মজুদদারদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করে থাকেন। এমনকি ভারতেও রপ্তানি করা হয় এখানের সুপারি। প্রতি শতক (স্থানীয় ভাবে ১০০ ঘা বলে এতে ১০০০ টি সুপারি থাকে) সুপারি ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
সাতুরিয়া সুপারি হাটে আসা বিক্রেতা আলী হোসেন বলেন, ‘এই হাট দক্ষিণাঞ্চলের মধ্যে সব চেয়ে বড় হাট। এখানে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকার সুপারি বিক্রি করা হয়। প্রায় তিন মাস চলে সুপারির মৌসুম।
সুপারি চাষি আলতাফ হোসেন বলেন,‘ধান বা অন্য ফসলের চেয়ে সুপারি চাষ করলে বেশি লাভবান হওয়া য়ায়। তাই এখন অনেকেই ঝুঁকছেন সুপারি চাষের ওপরে।
ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ফজলুল হক বলেন,‘লাভজনক বিধায় এ ফসল গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখছে। আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সুপারি চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শসহ অন্যান্য সহযোগিতা করে আসছি। এই জেলায় সুপারি চাষ আরও বেশি সম্প্রসারিত হবে, সাবলম্বী হবে প্রতিটি মানুষ এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা ।