দেশজনতা অনলাইনঃসুপার সাইক্লোন সিডরের ১২ বছর পূর্ণ হয়েছে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর)। সিডরের আঘাতে মৃত্যু হয়েছিল কয়েক হাজার মানুষের। মারা গেছে অসংখ্য গৃহপালিত ও বন্য প্রাণী। চাষের অনুপযোগী হয়ে গেছে হাজার হাজার হেক্টর ফসলি জমি। দুমড়ে-মুচড়ে গেছে ঘর-বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা। এক যুগেও সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি উপকূলবাসী। স্বাভাবিক হয়নি বরগুনাসহ সিডর বিধ্বস্ত উপকূলীয় এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ভয়াবহ সিডরের আঘাতে উপকূলীয় এলাকার জীবন-জীবিকা, পরিবেশ-প্রতিবেশ, অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের কিনারে ঠেলে দিয়েছিল। দিন দিন কমে যাচ্ছে কাজের সুযোগ। খাবারের উৎসও হারিয়ে যাচ্ছে। সুপেয় পানির সংকটে সিডর বিধ্বস্ত উপকূলীয় জনজীবন ক্রমশ দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্রমশ এই ভয়াবহতা বেড়েই চলছে। সিডরের আঘাতে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় নোনা পানি ঢুকে বাড়ছে লবণাক্ততা। বরগুনাসহ উপকূলীয় চরাঞ্চলের জমিতে ধান চাষ অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের অধিবাসী সোহেল রানা বলেন, ‘১২ বছর আগে সিডর আঘাত হানলেও এখন পর্যন্ত এই এলাকার মানুষ এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এই দিনটি এলে স্বজনহারা মানুষের কান্নার শব্দে এসব এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। এই দিনটি বরগুনাবাসীর জন্য একটি অভিশপ্ত দিন। যেদিন শিশু হারিয়েছে পিতাকে, বাবা হারিয়েছে সন্তান, স্ত্রী হারিয়েছে স্বামীকে, স্বজনরা হারিয়েছে তার আপনজনদের।
বরগুনার ১০ নং নলটোনা ইউনিয়নের তুলাতলা গ্রামের বাসিন্দা ধীরেন সরকার বলেন, ‘সিডরে সহায়তা পেয়েছি অনেক, কিন্তু আতঙ্কের কথা ভুলতে পারিনি এখনও। সুস্থ জীবন যাপন হয়ে ওঠেনি আর। প্রতি রাতে আঁতকে উঠি বিষখালী নদীর গর্জনে। আবার কখন কেড়ে নেবে আমাদের জীবন।’
সূত্র জানায়, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার ১২ জেলায় সিডর আঘাত হানে। বরগুনা, পটুয়াখালী, বাগেরহাট ও পিরোজপুর জেলা এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ঝালকাঠি, সাতক্ষীরা, খুলনা, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, বরিশাল ও ভোলা। সরকারি হিসাবে সিডরে এসব জেলার তিন হাজার ৪০৬ জন লোক নিহত হয়। নিখোঁজ হয় আরও এক হাজার তিন জন, মারাত্মক আহত হয় ৫৫ হাজার।
এর মধ্যে শুধু বরগুনা জেলায় সরকারি হিসাবে এক হাজার ৩৪৫ জন নিহত হয়েছিল। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে ১৫৬ জন। তবে বেসরকারি হিসাবে এ জেলায় নিহতের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। আহতের সংখ্যা ২৮ হাজার ৫০ জন। দুই লাখ ১৩ হাজার ৪৬১ পরিবারের ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে এক লাখ ৮৯ হাজার ৭৮৫টি। ফসলের ক্ষতি হয়েছে দুই লাখ ৪৩ হাজার ৩৯৩ একর। গবাদিপশু মারা গেছে ৩০ হাজার ৪৯৯টি। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এক হাজার ২৩৫। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা ৪২০ কিলোমিটার। তবে বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্য আরও বেশি।
বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, ‘বরগুনাসহ সিডর বিধ্বস্ত উপকূলীয় জনপদের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ব্যাপক বরাদ্দ হলেও তার অধিকাংশই চলে গেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এনজিওদের পকেটে। তাই সিডর বিধ্বস্ত এই জনপদের মানুষের মধ্যে ত্রাণ কিংবা ঋণ বিতরণ করা হলেও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে তেমন কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর স্মরণকালের ভয়াবহ সুপার সাইক্লোন সিডরের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় উপকূলীয় এলাকা। হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর পাশাপাশি গৃহহীন হয়ে পড়ে হাজার হাজার পরিবার। ধ্বংস হয়ে যায় উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ‘সিডর বাংলাদেশের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে অন্যতম। যা কেড়ে নিয়েছে উপকূলবাসীর সহায়-সম্বল ও আপনজনদের। এই ক্ষতি অপূরণীয়।’
সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো ত্রাণের পাশাপাশি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করলে উপকূলবাসী কিছুটা হলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে বলে তিনি জানান।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর ভয়াবহ সিডরের আঘাতে উপকূলীয় এলাকার জীবন-জীবিকা, পরিবেশ-প্রতিবেশ, অর্থনীতিকে বিপর্যয়ের কিনারে ঠেলে দিয়েছিল। দিন দিন কমে যাচ্ছে কাজের সুযোগ। খাবারের উৎসও হারিয়ে যাচ্ছে। সুপেয় পানির সংকটে সিডর বিধ্বস্ত উপকূলীয় জনজীবন ক্রমশ দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্রমশ এই ভয়াবহতা বেড়েই চলছে। সিডরের আঘাতে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় নোনা পানি ঢুকে বাড়ছে লবণাক্ততা। বরগুনাসহ উপকূলীয় চরাঞ্চলের জমিতে ধান চাষ অসম্ভব হয়ে পড়ছে।
বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের অধিবাসী সোহেল রানা বলেন, ‘১২ বছর আগে সিডর আঘাত হানলেও এখন পর্যন্ত এই এলাকার মানুষ এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এই দিনটি এলে স্বজনহারা মানুষের কান্নার শব্দে এসব এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে। এই দিনটি বরগুনাবাসীর জন্য একটি অভিশপ্ত দিন। যেদিন শিশু হারিয়েছে পিতাকে, বাবা হারিয়েছে সন্তান, স্ত্রী হারিয়েছে স্বামীকে, স্বজনরা হারিয়েছে তার আপনজনদের।
বরগুনার ১০ নং নলটোনা ইউনিয়নের তুলাতলা গ্রামের বাসিন্দা ধীরেন সরকার বলেন, ‘সিডরে সহায়তা পেয়েছি অনেক, কিন্তু আতঙ্কের কথা ভুলতে পারিনি এখনও। সুস্থ জীবন যাপন হয়ে ওঠেনি আর। প্রতি রাতে আঁতকে উঠি বিষখালী নদীর গর্জনে। আবার কখন কেড়ে নেবে আমাদের জীবন।’
সূত্র জানায়, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার ১২ জেলায় সিডর আঘাত হানে। বরগুনা, পটুয়াখালী, বাগেরহাট ও পিরোজপুর জেলা এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ঝালকাঠি, সাতক্ষীরা, খুলনা, গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, বরিশাল ও ভোলা। সরকারি হিসাবে সিডরে এসব জেলার তিন হাজার ৪০৬ জন লোক নিহত হয়। নিখোঁজ হয় আরও এক হাজার তিন জন, মারাত্মক আহত হয় ৫৫ হাজার।
এর মধ্যে শুধু বরগুনা জেলায় সরকারি হিসাবে এক হাজার ৩৪৫ জন নিহত হয়েছিল। এখন পর্যন্ত নিখোঁজ রয়েছে ১৫৬ জন। তবে বেসরকারি হিসাবে এ জেলায় নিহতের সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। আহতের সংখ্যা ২৮ হাজার ৫০ জন। দুই লাখ ১৩ হাজার ৪৬১ পরিবারের ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে এক লাখ ৮৯ হাজার ৭৮৫টি। ফসলের ক্ষতি হয়েছে দুই লাখ ৪৩ হাজার ৩৯৩ একর। গবাদিপশু মারা গেছে ৩০ হাজার ৪৯৯টি। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এক হাজার ২৩৫। ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা ৪২০ কিলোমিটার। তবে বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্য আরও বেশি।
বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, ‘বরগুনাসহ সিডর বিধ্বস্ত উপকূলীয় জনপদের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে ব্যাপক বরাদ্দ হলেও তার অধিকাংশই চলে গেছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এনজিওদের পকেটে। তাই সিডর বিধ্বস্ত এই জনপদের মানুষের মধ্যে ত্রাণ কিংবা ঋণ বিতরণ করা হলেও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে তেমন কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর স্মরণকালের ভয়াবহ সুপার সাইক্লোন সিডরের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে যায় উপকূলীয় এলাকা। হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর পাশাপাশি গৃহহীন হয়ে পড়ে হাজার হাজার পরিবার। ধ্বংস হয়ে যায় উপকূল রক্ষা বেড়িবাঁধ।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ‘সিডর বাংলাদেশের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে অন্যতম। যা কেড়ে নিয়েছে উপকূলবাসীর সহায়-সম্বল ও আপনজনদের। এই ক্ষতি অপূরণীয়।’
সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাগুলো ত্রাণের পাশাপাশি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করলে উপকূলবাসী কিছুটা হলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে বলে তিনি জানান।