খুলনা
খুলনার সাতটি উপজেলায় ৩৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৫০ জন মানুষের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু সাত উপজেলার বিপদাপন্ন মানুষের সংখ্যা ৫ লাখ ১৭ হাজার ২৩৫ জন। ফলে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৫ জন মানুষ আশ্রয়হীন থাকার শঙ্কা রয়েছে। তাদের জন্য বিভিন্ন স্কুল, কলেজসহ উঁচু স্থাপনাকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র করে সেখানে নিয়ে যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক নির্দেশ দিয়েছেন। সাত উপজেলায় মোট জনসংখ্যা ১৪ লাখ ৫১ হাজার ১৩০ জন।.
খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন জানিয়েছেন, এরই মধ্যে সাতটি উপজেলার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে আহ্বান জানানো হয়েছে। এজন্য মাইকিংও করা হচ্ছে। ইসলামি ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় প্রতিটি মসজিদ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। সাড়ে ৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবকও তৎপর রয়েছে। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার মজুত রাখা রয়েছে।
তবে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের কারণে খুলনায় ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারির পরও আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে চাচ্ছেন না লোকজন। নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বারবার মাইকিং করা হলেও শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত কেউই আশ্রয়কেন্দ্রে যায়নি। এ ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ করতে কেউ এগিয়ে গেলে তাকে পাল্টা শুনতে হচ্ছে ‘আপনি যাচ্ছেন না কেন?’।
কয়রা সদরের হারুনুর রশীদ বলেন, ‘বৃষ্টিসহ দমকা হাওয়া বইছে। এ অবস্থায় আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। কিন্তু মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছেন না। আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বললে তারা উল্টো প্রশ্ন করছেন।’
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিমুল কুমার সাহা বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সার্বিক প্রস্তুতি রয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। মানুষকে এখনও উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। প্রয়োজন হলে ফোর্স করা হতে পারে।’
ভোলা
ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় ভোলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলার সবখানে রাস্তায়-বেড়িবাঁধে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রচার-প্রচারণা ও মাইকিং চলছে। চরাঞ্চলের লোকদের কাছের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হচ্ছে। শুরুতে অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে না চাইলেও ১০ নম্বর বিপদ সংকেত ঘোষণার পর আসতে শুরু করেছেন। জেলায় ৬৬৮টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ১২ হাজার স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রয়েছেন বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।
শুক্রবার বিকাল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভোলার সব রুটে লঞ্চ চলাচল এবং ভোলা-লক্ষ্মীপুর ও ভেদুরিয়া-লাহারহাট রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। জেলায় প্রশাসনের আটটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু রয়েছে।
জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম সিদ্দিক জানান, দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারি কোষাগার থেকে নগদ ১০ লাখ টাকা, ২০ মেট্রিক টন চাল এবং দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে পুরো ভোলা জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ভোলা সংলগ্ন মেঘনা-তেতুলয়া নদী উত্তাল, সেই সঙ্গে বেড়েছে পানির উচ্চতা।
পটুয়াখালী
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ শক্তিশালী হয়ে উপকূলের কাছাকাছি চলে আসায় পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে। ফলে শনিবার সকাল থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়া শুরু করেছেন লোকজন। সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ও আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে জেলার বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং ও প্রচারণা চালাচ্ছেন জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার স্বেচ্ছাসেবকরা। পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বশির আহমেদ জানান, ‘শনিবার দুপুরে পায়রা বন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে অবস্থান করছিল বুলবুল। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃহস্পতিবার রাত থেকে আজ শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৩৭.৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। কুয়াকাটা সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত জেলেদের নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।’
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জেলার বিভিন্ন উপজেলায় মোট ৪০৩টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সার্বিক বিষয় মনিটরিং করতে ১১টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ১০০ মেট্রিক টন চাল, দুই লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ১৬৬ বান্ডিল টিন এবং ৩৫০০ কম্বল মজুত রাখা হয়েছে।
বরিশাল
জোর করে হলেও মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার। ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় শনিবার বেলা সাড়ে ১২টায় বরিশাল সার্কিট হাউজে বিভাগীয় পর্যায়ের জরুরি সভায় এই নির্দেশ দেন তিনি। এ সময় বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, ভোলা, পিরোজপুর, ঝালকাঠিতে দুর্যোগকালীন বাসাবাড়িতে অবস্থানরতদের সাইক্লোন শেল্টারসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় দিতে বলা হয়। একইসঙ্গে যেসব এলাকায় মহাবিপদ সংকেত দেখানো হয়েছে, সেখানকার বাসিন্দাদের দুপুর ২টার মধ্যে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসার নির্দেশ দেন বিভাগীয় কমিশনার ইয়ামিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘উপকূলীয় কিছু কিছু এলাকায় মানুষ মালামাল ছেড়ে সাইক্লোন শেল্টারে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা দেখাচ্ছে। বরিশাল বিভাগে দুই হাজার ১১টি সাইক্লোন শেল্টার সেন্টার রয়েছে। যেখানে ১৭ লাখ ৮৩ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন। দুর্যোগ পরবর্তী জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য ৩১৭টি মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। এছাড়া সব জেলার সংশ্লিষ্ট সব দফতরকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
বরিশাল জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, দুর্যোগকালীন জনগণের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বরিশাল জেলার ১০ উপজেলায় ২৩২টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকারি অবকাঠামো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হবে। এমনকি আশ্রয় নিতে আসাদের জন্য খাবারেও ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত নির্দেশ স্ব-স্ব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র বরিশাল নৌ-বন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদা মিঠু সরকার জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড়ে কারণে নৌ-দুর্ঘটনা রোধে প্রস্তুতি রয়েছে বিআইডব্লিউটিএ’র। উদ্ধারকারী নৌযান সতর্ক রাখা হয়েছে। শুক্রবার থেকে বরিশাল বিভাগে নৌযান চলাচল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
বরগুনা
১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ঘোষণার পরপরই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন জেলার নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারীরা। ঘূর্ণিঝড়ে আঘাত হানার ঝুঁকিতে রয়েছেন ছয়টি উপজেলার দুই লাখ মানুষ। এদিকে জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে জোর প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
বরগুনায় ‘বুলবুলে’ কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে রয়েছে সদর উপজেলার নলটোনা, বালিয়াতলী, বদরখালী, নিশানবাড়িয়া, বড়ইতলা, মাঝেরচর, গুলিশাখালী, আয়লা পাতাকাটা, বুড়িরচর এলাকা। বেতাগী উপজেলার দক্ষিণ কালিকাবাড়ি, আলিয়াবাদ, উত্তর কালিকাবাড়ি, ভোড়া এলাকা। আমতলী উপজেলার বৈঠাকাটা, পশুরবুনিয়া, জেলেপাড়া, কলাগাছিয়া, আমতলী পৌরসভার আম্মুয়ার চর। তালতলী উপজেলার খোটকারচর, তেতুলবাড়িয়া, নলবুনিয়া, আশারচর, সখিনা ও আমখোলা। পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া ইউনিয়নের কাকচিড়া। বামনা উপজেলার রামনা, তালেশ্বর এলাকার মানুষও জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ৫০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র, ৪২টি মেডিক্যাল টিম, আটটি জরুরি কন্ট্রেল রুম খোলা হয়েছে।
মাঝেরচর এলাকার বাসিন্দা আবজাল বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বরগুনায় এখন যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তা দেখে মনে হয় সিডরের মতো ভয়াবহ হতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। মাইকিং করে আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলা হয়েছে, কিন্তু কীভাবে কী করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যাবো, নাকি ঘরের মধ্যেই অবস্থান করবো?’
বরগুনার পোটকাখালী এলাকার আবুল হোসেন বলেন, ‘এখানে কাছে কোনও আশ্রয়কেন্দ্র নেই যেখানে গিয়ে আমরা আশ্রয় নেবো। এখন একমাত্র ভরসা আল্লাহ। মাইয়া-পোয়াগুলো কোনোরহম শেল্টারে পাঠামু, হেরপর আইয়া এইহানেই থাকমু।’
একই এলাকার ময়না রানী বলেন, ‘স্বাভাবিক জোয়ারেও মোগো এইসব এলাকা তলায়ে যায়। এরমধ্যে যদি বইন্যা আয় হেলে মোরা হরমু কী?’
দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) বরগুনা সদর উপজেলার টিম লিডার জাকির হোসেন মিরাজ বলেন, ‘বরগুনা সদরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সিপিপির সদস্যরা মাইকিং করে মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাচ্ছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রশাসনের পাশাপাশি সিপিপির কর্মীরা তৎপর রয়েছেন।’
বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ‘জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সিপিপি, রেডক্রিসেন্ট কর্মীরা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। দুর্যোগ আঘাত হানার আগেই বেড়িবাঁধের বাইরের লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা সম্ভব হবে।’ তিনি আরও জানান, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তারা যেন মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসে।’
চট্টগ্রাম
ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে চট্টগ্রামে খোলা হয়েছে প্রায় চার হাজার আশ্রয়কেন্দ্র। এসব কেন্দ্রে যেতে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। তবে সাড়া নেই উপকূলবাসীর। নিজের ঘরবাড়ি ছেড়ে তারা আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে চাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় উপকূলীয় বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে কাজ করছেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসহান মুরাদ তিনি বলেন, ‘আমরা গতকাল রাত থেকে উপকূলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে মাইকিং করছি। ট্যুরিস্ট পুলিশ, সিটি করপোরেশনের লোকজনও প্রচারণা চালাচ্ছেন। কিন্তু এখনও মানুষ নিরাপদে সরে যাচ্ছে না। নগরীতে আমাদের ৭২টির মতো আশ্রয় কেন্দ্র আছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে এখনও কেউ আসেনি। তবে আমরা ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলার ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে উপকূলবর্তী এলাকায় সর্বাত্মক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। ঝড়ো বৃষ্টি শুরু হলে তখন হয়তো মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে শুরু করবে।’.
এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। শুকনো খাবার, পানি চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের স্টাফ অফিসার তানভীর ফরহাদ শামীম।
দ্বীপ উপজেলা সন্দ্বীপে দুটি উপজেলার কিছু লোকজন আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। তবে অনেকই ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে সরতে রাজি হচ্ছেন না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিদর্শী সম্বোধি চাকমা জানান, ‘আমরা কাল রাত থেকে মাইকিং করে আসছি। সকালে আমরা উড়ির চর ইউনিয়নের প্রায় চার হাজার বাসিন্দাকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে এনেছি। বেঁড়িবাদ সংলগ্ন অন্যান্য এলাকার বাসিন্দাদেরও সরিয়ে আনতে আমরা সর্বাত্মক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু তারা কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে আসছেন না।’
জেলা প্রশাসক ইলিয়াস হোসেন জানান, চট্টগ্রামে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ৪৭৯টি আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও দুই হাজার ২৬৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং এক হাজার ২৫০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। সম্ভাব্য দুর্যোগে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অধিদফতরের বরাদ্দকৃত ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা জিআর ক্যাশ, ৩৪৯ মেট্রিক টন জিআর চাল, ৬৮১ বান্ডিল ঢেউটিন, দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ৫০০ তাঁবু প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
লক্ষ্মীপুর
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জন্য ৯ নম্বর সতর্কতা জারি হলেও লক্ষ্মীপুরের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এখনও আসেনি। মেঘনা নদী সংলগ্ন রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় ১০০টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হলেও কোনও মানুষজন সেখানে যাননি। স্থানীয় প্রশাসন থেকে মাইকিং করেও তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া যাচ্ছে না। শনিবার দুপুর ১২টা থেকে পুরো জেলায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। মেঘনা নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি উঁচু টেউ হচ্ছে।
রামগতি উপজেলার নির্বাহী অফিসার আব্দুল মমিন জানান, ‘দ্বীপ ইউনিয়ন চরআব্দুল্লাহ, চরগজারিয়া থেকে লোকজনকে আনার জন্য ছয়টি ট্রলার পাঠানো হয়েছে। এখনও তারা আসেনি। আশা করছি সন্ধ্যায় আগে ওখান থেকে জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে আনা যাবে।’