দেশজনতা অনলাইনঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে অলিপুরা থেকে শান্তিরবাজার পর্যন্ত সড়ক সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নিম্নমানের বালু, কংকর ও বিটুমিন ব্যবহার করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ করার পরও সংশ্লিষ্টরা কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) সোনারগাঁ কার্যালয় সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০ দশমিক ২২ কিলোমিটার সড়কের কার্যাদেশ পায় এম আর এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এরপর গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করে। আগামী দুই মাসের মধ্যে এ কাজ শেষ করে এলজিইডি সোনারগাঁ কার্যালয়ের দায়িত্বশীলদের কাছে হস্তান্তরের কথা রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, সংস্কার কাজ শুরু করার পর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে নিম্নমানের পাথর, ইট, সুরকি, খোয়া, পিচ ব্যবহার করা হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, সঠিক মানের সামগ্রী দিয়ে এ সড়ক সংস্কার করা হোক। তা না হলে তারা সড়ক অবরোধের ঘোষণায় যাবেন।
স্থানীয়রা আরও জানান, অলিপুরা থেকে শান্তিরবাজার পর্যন্ত সড়ক দিয়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ চলাচল করেন। দীর্ঘ ১৫ বছর পর এ সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু যে মানের সামগ্রী ব্যবহার করে সড়ক সংস্কার করা হচ্ছে, তাতে অল্প সময়ের মধ্যেই সড়কের ইট-সুরকি ওঠে গিয়ে সড়ক ভেঙে যাবে। সড়কের দুই পাশে বাড়িঘর রয়েছে। বৃষ্টি হলে বাড়িঘরের পানি সড়কের মধ্যে গিয়ে পড়ে। ঢালাই কাজে যে পরিমাণ বিটুমিন ব্যবহার করা হচ্ছে, অল্প বৃষ্টিতে পানি জমে সড়ক ভেঙে যাবে। এতে চলাচলে সমস্যা হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, শান্তিরবাজার থেকে দৌলরদী বাগেরপাড়া পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে পিচ ঢালাই হয়েছে। বাগেরপাড়া গ্রামের পাশে শ্রমিকরা ঢালাইয়ের কাজ করছেন। এখানে যে পরিমাণ বিটুমিন ব্যবহার করা উচিত, সেই পরিমাণ ব্যবহার হচ্ছে না। এ ছাড়া, সংস্কার কাজে ব্যবহৃত ইটের সুরকি হাতে নিয়ে চাপ দিলেই গুড়ো হয়ে যাচ্ছে।
বারদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আব্দুল করিম জানান, দীর্ঘ ১৫ বছর পর এ সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। গত ৮-১০ বছর ধরে এ সড়ক দিয়ে মানুষ কষ্ট করে চলাচল করেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক সংস্কার করছে। অল্প পরিমাণ বিটুমিন ব্যবহার করায় একটু পানি পেলেই সড়ক ভেঙে যাবে।
আড়াইহাজার সরকারি সফর আলী কলেজের ছাত্র সাব্বির রহমান বলেন, ‘নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সড়ক সংস্কার হচ্ছে। ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই সড়কটি ভেঙে যাবে। মানসম্মত সামগ্রী ব্যবহার করে সড়ক সংস্কারের জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। মানহীন সামগ্রী দিয়ে সড়ক সংস্কার না হলে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে যাবো।’
বারদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল হক বলেন, ‘নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে সড়ক সংস্কারের বিষয়টি এলজিইডি সোনারগাঁ কার্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারকে জানিয়েছি।’
অভিযোগ অস্বীকার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এম আর এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. টুটুল মিয়া বলেন, ‘ইঞ্জিনিয়ার সাইডে নিয়ে পরীক্ষা করে কাজ করছি আমি। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছে না।’
এলজিইডি সোনারগাঁ কার্যালয়ের প্রকৌশলী আলী হায়দার খাঁন বলেন, ‘কিছু ম্যাটারিয়াল খারাপ এসেছিল। আমরা সাইডে গিয়ে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। পরে সঠিক মানের সামগ্রী ব্যবহার করে সংস্কার করা হচ্ছে।’