গাইবান্ধা : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল পল্লিতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও হত্যার তিন বছর পূর্ণ হলো আজ। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর ভয়াবহ সেই হামলার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত শেষে ৯০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। কিন্তু হামলার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত দোষীদের বাদ এবং পিবিআইয়ের ‘পক্ষপাতমূলক’ ভূমিকার অভিযোগে সেই চার্জশিট প্রত্যাখ্যান করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতালরা। এ নিয়ে আদালতে নারাজি পিটিশন দাখিল করেছেন মামলার বাদী। ফলে আলোচিত এ হামলার ঘটনার বিচার কার্যক্রম নিয়ে ক্ষুব্ধ নিহত-আহতের স্বজন ও ক্ষতিগ্রস্তরা।
এছাড়া বারবার আশ্বাসের পরও বাপ-দাদার সম্পত্তি ফেরত না পাওয়ায় শঙ্কা বেড়েছে সাঁওতালদের। ঘটনার তিন বছর হলেও সেই তাণ্ডবের কথা আজও ভুলতে পারেননি সাঁওতালরা। আর কোনও আশ্বাস নয়, বাপ-দাদার ভিটেমাটি ফেরত ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকার দ্রুত উদ্যোগ নেবে- এমনটাই চান এখানকার সাঁওতাল পল্লির বাসিন্দারা। দিনটিকে ‘সাঁওতাল হত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করেন স্থানীয় সাঁওতালরা। এ উপলক্ষে আজ সেখানে স্মরণসভা ও সমাবেশসহ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করেছেন তারা।
এদিকে উচ্ছেদ ঘটনার পর থেকে মাদারপুর ও জয়পুরপাড়ায় ঝুপড়ি ঘর তুলে বসবাস করলেও এরই মধ্যে চিনিকলের জমি দখল করে আবারও অর্ধশতাধিক বসতি গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে সাঁওতালদের বিরুদ্ধে। হামলা-মামলার ঘটনার পর জমি দখলের ঘটনা নিয়ে আবারও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে। তবে চিনিকলের জমি দখল করে বসতি নির্মাণের ঘটনায় সাঁওতালদের সঙ্গে বৈঠক করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর রংপুর চিনিকলের জমিতে আখ কাটাকে কেন্দ্র করে চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ও পুলিশের সঙ্গে সাঁওতাল ও বাঙালিদের কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয় সাঁওতালদের বসতিতে। পরে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় কয়েক শ’ বাড়িঘর। পুলিশের গুলিতে মারা যান শ্যামল, মঙ্গল ও রমেশ নামে তিন সাঁওতাল। এ সময় আহত হন পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন। হামলার শিকার অনেকে বেঁচে আছেন শরীরে ক্ষত চিহ্ন নিয়ে।
হামলা, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠ তদন্ত, জড়িতদের বিচার, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনসহ সম্পত্তি ফেরত দেওয়ার দাবিতে জোরালো বিক্ষোভ শুরু হয়। ঘটনার তিন বছর পার হলেও ভয়াল সেই হামলার ঘটনা এখনও তাড়া করছে তাদের। সব হারিয়ে উচ্ছেদ হওয়া সাঁওতাল পরিবারগুলো আজও সেই ছোট টিনের ছাপড়া আর ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছেন। সুষ্ঠ বিচার ও জমি ফেরতের আশায় দিন গুনছেন তারা। শুধু তাই নয়, মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু না হওয়া এবং বাপ-দাদার সম্পত্তি ফেরত পেতে প্রশাসনের উদ্যোগ না থাকায় ক্ষুব্ধ ক্ষতিগ্রস্তরা।
মামলার বাদী থমাস হেমব্রন বলেন, ‘হামলা ও হত্যার ঘটনায় সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদসহ ৩৩ জন নামীয় ও অজ্ঞাত ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছি। মামলার পর তদন্ত শেষ করতেই পার হয় আড়াই বছর। তদন্ত শেষ করে চলতি বছরের জুলাই মাসে পিবিআই ৯০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।’
তার অভিযোগ, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল ১১ আসামিকে চার্জশিটে বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঘটনা আড়াল ও পক্ষপাতিত্ব করে আদালতে ক্রটিপূর্ণ চার্জশিট দাখিল করে পিবিআই।’ এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি ও পুনঃতদন্তের দাবি জানিয়ে আদালতে পিটিশন দাখিল করেছি। দ্বিতীয় দফায় আগামী ২৩ ডিসেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। আলোচিত এ মামলার বিচার কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রতা ও বাপ-দাদার ভিটেমাটি ফেরত পাওয়া নিয়ে অনিশ্চতায় দেখা দিয়েছে।’
সাঁওতাল নেতা ফিলিমন বাক্সে বলেন, ‘উচ্ছেদের পর অন্যের জায়গায় নানা কষ্টে বসবাস করে আসছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। চিনিকলের জমিতে কিছু ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন তারা। তবে জমি দখলের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়েছে। মানবিক বিবেচনায় সাঁওতালদের বসবাস নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি।
তবে সাঁওতালদের অভিযোগ অস্বীকার করে পিবিআই -এর গাইবান্ধার ইনচার্জ আবদুল হাই সরকার বলেন, ‘সুষ্ঠ তদন্তে সব তথ্য-উপাত্ত যাচাই, সরেজমিনে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ৯০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে আদালতে।’
এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতালদের আশ্রয়ে গুচ্ছগ্রাম, রাস্তা ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় তাদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া খামারের জমি দখল করে ঘর নির্মাণের বিষয়ে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।
এদিকে উচ্ছেদ ঘটনার পর থেকে মাদারপুর ও জয়পুরপাড়ায় ঝুপড়ি ঘর তুলে বসবাস করলেও এরই মধ্যে চিনিকলের জমি দখল করে আবারও অর্ধশতাধিক বসতি গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে সাঁওতালদের বিরুদ্ধে। হামলা-মামলার ঘটনার পর জমি দখলের ঘটনা নিয়ে আবারও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে চিনিকলের শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে। তবে চিনিকলের জমি দখল করে বসতি নির্মাণের ঘটনায় সাঁওতালদের সঙ্গে বৈঠক করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বর রংপুর চিনিকলের জমিতে আখ কাটাকে কেন্দ্র করে চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারী ও পুলিশের সঙ্গে সাঁওতাল ও বাঙালিদের কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয় সাঁওতালদের বসতিতে। পরে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় কয়েক শ’ বাড়িঘর। পুলিশের গুলিতে মারা যান শ্যামল, মঙ্গল ও রমেশ নামে তিন সাঁওতাল। এ সময় আহত হন পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন। হামলার শিকার অনেকে বেঁচে আছেন শরীরে ক্ষত চিহ্ন নিয়ে।
হামলা, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠ তদন্ত, জড়িতদের বিচার, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনসহ সম্পত্তি ফেরত দেওয়ার দাবিতে জোরালো বিক্ষোভ শুরু হয়। ঘটনার তিন বছর পার হলেও ভয়াল সেই হামলার ঘটনা এখনও তাড়া করছে তাদের। সব হারিয়ে উচ্ছেদ হওয়া সাঁওতাল পরিবারগুলো আজও সেই ছোট টিনের ছাপড়া আর ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছেন। সুষ্ঠ বিচার ও জমি ফেরতের আশায় দিন গুনছেন তারা। শুধু তাই নয়, মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু না হওয়া এবং বাপ-দাদার সম্পত্তি ফেরত পেতে প্রশাসনের উদ্যোগ না থাকায় ক্ষুব্ধ ক্ষতিগ্রস্তরা।
মামলার বাদী থমাস হেমব্রন বলেন, ‘হামলা ও হত্যার ঘটনায় সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদসহ ৩৩ জন নামীয় ও অজ্ঞাত ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছি। মামলার পর তদন্ত শেষ করতেই পার হয় আড়াই বছর। তদন্ত শেষ করে চলতি বছরের জুলাই মাসে পিবিআই ৯০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।’
তার অভিযোগ, ‘ঘটনার সঙ্গে জড়িত মূল ১১ আসামিকে চার্জশিটে বাদ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঘটনা আড়াল ও পক্ষপাতিত্ব করে আদালতে ক্রটিপূর্ণ চার্জশিট দাখিল করে পিবিআই।’ এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি ও পুনঃতদন্তের দাবি জানিয়ে আদালতে পিটিশন দাখিল করেছি। দ্বিতীয় দফায় আগামী ২৩ ডিসেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। আলোচিত এ মামলার বিচার কার্যক্রমে দীর্ঘসূত্রতা ও বাপ-দাদার ভিটেমাটি ফেরত পাওয়া নিয়ে অনিশ্চতায় দেখা দিয়েছে।’
সাঁওতাল নেতা ফিলিমন বাক্সে বলেন, ‘উচ্ছেদের পর অন্যের জায়গায় নানা কষ্টে বসবাস করে আসছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। চিনিকলের জমিতে কিছু ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন তারা। তবে জমি দখলের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়েছে। মানবিক বিবেচনায় সাঁওতালদের বসবাস নিশ্চিতের জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানান তিনি।
তবে সাঁওতালদের অভিযোগ অস্বীকার করে পিবিআই -এর গাইবান্ধার ইনচার্জ আবদুল হাই সরকার বলেন, ‘সুষ্ঠ তদন্তে সব তথ্য-উপাত্ত যাচাই, সরেজমিনে সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ৯০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে আদালতে।’
এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামকৃষ্ণ বর্মন বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত সাঁওতালদের আশ্রয়ে গুচ্ছগ্রাম, রাস্তা ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় তাদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া খামারের জমি দখল করে ঘর নির্মাণের বিষয়ে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান তিনি।