চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম দিনে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন আরো ৭৫ জন বাংলাদেশী। শুক্রবার রাত ১১.২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্স এসভি ৮০৪ ফ্লাইটে দেশে ফেরেন তারা। এ নিয়ে গত তিনদিনে মোট ৩৩২ জন বাংলাদেশীকে ফিরতে হলো।
বরাবরের মতো শুক্রবারও ফেরত আসা কর্মীদের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ী পৌঁছানোর জন্য জরুরি সহায়তা প্রদান করা হয়।
শুক্রবার রাতে ফেরত আসা নরসিংদীর সজিব হোসেন বলেন, তিনি ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা খরচ করে আলফালা কোম্পানিতে গিয়ে ছিলেন মশা নিধন কর্মী হিসেবে কাজ করতে। কিন্তু গিয়ে কাজ পান একটি সাপ্লাই কোম্পানিতে। কিন্তু এক বছরেও কোন বেতন পাননি। উপায়ন্তর না দেখে বাড়ি থেকে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে শুন্য হাতে দেশে ফিরলেন।
ফরিদপুরের মামুন মিয়া জানান, সাড়ে চার বছর ধরে সৌদি আরবে ছিলেন। আকামা নবায়নের জন্য কফিলকে (নিয়োগকর্তা) টাকাও দিয়েছিলেন। কিন্তু কফিল আকামা নবায়ন করেননি। অভিযানে গ্রেফতার হলে কফিল তার দায়িত্বও নেয়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাসুম মিয়ার অভিযোগ, আট মাসের আকামার মেয়াদ থাকলেও রাস্তা থেকে ধরে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে পাঠানো হয়েছে তাকে।
তিনি বলেন সৌদি আরবে নয় বছর বৈধ আকামা নিয়ে কাজ করতেন। কেন তাকে পাঠানো হলো জানেন না। মোঃ জুয়েলের বাড়ি বাড়ী মৌলভীবাজার। তিনি জানান, মাত্র এক মাস আগে গিয়েছিলেন। কিন্তু ধরপাকড়ের অভিযানে তাকেও শুন্য হাতে দেশে ফিরতে হলো। একইভাবে ফেনীর মিজবাহ আড়াইমাস, গাইবান্ধার মাহাবুব পাঁচ মাস, সাদিরুল সাত মাস, কুমিল্লার জুয়েল আট মাস আগে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। কিন্তু ধরপাকড়ে তাদের খালি হাতে দেশে ফিরতে হয়।
ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, চলতি বছর এখন পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার বাংলাদেশিকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। সেপ্টেম্বর থেকে ধরপাকড়ের পরিমাণ অনেক বেড়েছে। শুক্রবার রাতে যারা ফেরত এসেছেন তাদের মধ্যে এমন অনেকে রয়েছেন যারা কয়েকমাসে আগে সেখানে গিয়েছিলেন। অনেকে জানিয়েছেন, তাদের যে কাজ দেয়ার কথা ছিল সেই কাজ পাননি। দীর্ঘদিন ধরে থাকা কয়েকজন বলছেন কেন তাদের পাঠানো হলো জানেন না। কয়েকজন বলছেন আকামা নবায়নের জন্য তারা টাকা দিয়েছিলেন কিন্তু নিয়োগকর্তা সেটি নবায়ন করেনি। এখন পুলিশ ধরলেও তারা দায়িত্ব নিচ্ছেন না। এই ধরনের প্রতিটা ঘটনায় দায়ীদের জবাবদিহিতা জরুরী।