শনিবার (৫ অক্টোবর) দুপুর ২টা পর্যন্ত সরেজমিনে পাওয়া তথ্য অনুসারে, ভোট প্রদানের হার ২০ ভাগেরও কম।
সকাল থেকে রংপুরের মাহিগঞ্জ, তাজহাট, লালবাগ, হরিদেবপুর, নিসবেতগঞ্জ, মমিনপুর, নবদীগঞ্জ, পাগলাপীর, মডার্ন, মুলাটোল, সেনপাড়া, গুপ্তপাড়া, লালকুঠি এলাকার বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, সকালে অল্প কয়েকজন ভোটার থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কমে গেছে। দুপুরে ভোটকেন্দ্রগুলো একেবারেই ফাঁকা হয়ে যায়।
বেলা ১১টায় মাহিগঞ্জের মহেন্দ্র ফতা কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ২৫২৬ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে ২৫১টি। পার্শ্ববর্তী মাহিগঞ্জ কলেজে গিয়ে দেখা যায়, ২৪৮৯ ভোটের মধ্যে পড়েছে ১৯৪টি।
বেলা ১২টায় তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, চারটি বুথের তিনটি ফাঁকা। একজন নারী বুথে ভোট দিচ্ছেন আর তিন জন তার পেছনে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। এই ভোটকেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘সুষ্ঠুভাবে ভোট হচ্ছে কিন্তু ভোটারের উপস্থিতি কম।’
দুপুর দেড়টায় নিশবেতগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ভোটকেন্দ্র ফাঁকা। কোনও লাইন নেই। ২৩৮৩ ভোটের মধ্যে পড়েছে মাত্র ১৩২টি ভোট।
এই কেন্দ্রে ভোট দিতে আসা সদর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম দুলাল বলেন, ‘স্থানীয় প্রার্থী নেই। তাই নির্বাচন নিয়ে মানুষের আগ্রহ কম। আর যারা প্রার্থী হয়েছেন, তারাও জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারেননি।’
এদিকে দুপুর তিনটায় হরিদেবপুর ইউনিয়নের শিবের বাজার ভোটকেন্দ্রে গিয়েও একই ধরনের দৃশ্য চোখে পড়ে। দেখা যায়, ভোটগ্রহণকারী কর্মকতা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন অলস সময় কাটাচ্ছেন। ভোটারের উপস্থিতি নেই। প্রিজাইডিং অফিসার আমির হোসেন জানান, ৪০১২ ভোটের মধ্যে ৪০৯টি ভোট পড়েছে।
ভোটের হার কম হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হয় রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুবরণ চন্দ্র সরকারের কাছে। তিনি বলেন, ‘প্রার্থিতায় জনপ্রত্যাশার প্রতিফলন হয়নি। তাই মানুষের ভোট নিয়ে আগ্রহ নেই। তাছাড়া ক্ষমতাসীন দল সরাসরি নির্বাচনে না থাকায় তাদের নেতাকর্মীরাও মাঠে নেই, তাই নির্বাচনও জমেনি।’
রংপুরের লালবাগ, চকবাজার এবং মডার্ন এলাকার ভোটকেন্দ্র কারমাইকেল কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজ। সেখানে দায়িত্ব পালনকারী প্রিজাইডং অফিসার শহীদার রহমান জানান, ভোটারদের সাড়া নেই বললেই চলে। দুপুর ১টা পর্যন্ত এখানে ২৩৮৩ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে মাত্র ১৪৫টি। দুপুরের পরও পাল্টায়নি পরিস্থিতি।
বিভিন্ন কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, থেমে থেমে বা দীর্ঘ সময় পর একজন-দুজন ভোটার কেন্দ্র আসছেন এবং ভোট দিয়ে চলে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া এই আসনে উপনির্বাচনে লড়ছেন ছয়জন প্রার্থী। সকাল ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকাল ৫টায় শেষ হয়েছে।
রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে লাঙল মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের পুত্র রাহগীর আল মাহী ওরফে সাদ এরশাদ, বিএনপির প্রার্থী রিটা রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী এরশাদের ভাতিজা মকবুল শাহরিয়ার ওরফে আসিফ (আসিফ শাহরিয়ার), গণফোরামের কাজী মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ, খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল ও এনপিপি’র শহিদুল আলম।