৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ ইং | ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১০:৫৭

তীব্র স্রোতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় আজও লঞ্চ বন্ধ

পদ্মা নদীর তীব্র স্রোতের কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল আজও বন্ধ রয়েছে। এতে দৌলতদিয়া প্রান্তে নদী পারের অপেক্ষায় সড়কে আটকা পড়েছে কয়েক শ পণ্যবাহী ট্রাক ও বেশ কিছু যাত্রীবাহী বাস। লঞ্চে পার হওয়া যাত্রীরা ফেরিতে করে পারাপার হচ্ছেন।

পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধিতে দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরি ঘাট এলাকায় তীব্র স্রোত বইছে। ফলে স্রোতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লঞ্চ ও ফেরি চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। স্রোতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে গেলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। যে আশঙ্কায় রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক গতকাল লঞ্চ চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। স্রোতের গতি এখনো তীব্র থাকায় আজও লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।

জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া গেজ স্টেশন পয়েন্টে পদ্মা নদীর পানি ৫ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। হঠাৎ পদ্মার পানি বৃদ্ধিতে জেলার প্রায় ৪ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে।

শনিবার সকাল ১০টার দিকে দৌলতদিয়ায় বাস ও গোয়ালন্দ সড়কে পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে সিরিয়ালে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।

দৌলতদিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, কয়েক দিন ধরে পদ্মার তীব্র স্রোতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ ও ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। নদী পার হতে সময় লাগছে আগের তুলনায় দ্বিগুণ। যে কারণে দৌলতদিয়ায় যানবাহনের সিরিয়াল তৈরি হচ্ছে। এছাড়া স্রোতের কারণে ভাঙন দেখা দিয়েছে ফেরি ঘাট এলাকায়। ফলে ১ ও ২ নং ফেরি ঘাট বন্ধ রয়েছে এবং ভাঙন রোধে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

বর্তমানে এ রুটে ১৬টির মধ্যে ১০টি ফেরি চলাচল করছে। তবে স্রোতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সবগুলো ফেরি চলতে পারছে না। এছাড়া দৌলতদিয়া প্রান্তের ছয়টি ফেরি ঘাটের চারটি ঘাট চালু রয়েছে। স্রোতে এ রুটে লঞ্চ চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় গতকাল শুক্রবার দুপুর থেকে রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেন। লঞ্চের যাত্রীদের ফেরিতে পারাপার হওয়ার জন্য বলা হয়।

গত বৃহস্পতিবার দৌলতদিয়া ১ নম্বর ফেরিঘাট ও ২ নম্বর ফেরিঘাটের মাঝে থাকা সিদ্দিক ব্যপারীর পাড়া গ্রামের বিশাল অংশ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে করে অন্তত ২০০ পরিবার তাদের বসতভিটা হারিয়েছে এবং বন্ধ হয়ে গেছে ওই দু’টি ফেরি ঘাট।

ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড যে বালুর বস্তা ফেলছে তা কোনো কাজেই আসছে না। পূর্বের স্থাপন করা বালুভর্তি জিও ব্যাগ আগেই নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের সবগুলো ঘাট নদী গর্ভে বিলীন হয়ে চলে যাবে।

জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত তিন কিলোমিটার এলাকায় যাত্রীবাহী বাস পারের অপেক্ষায় সিরিয়ালে আছে। এছাড়াও গোয়ালন্দ ঘাট থেকে কয়েক কিলোমিটার পেছনে গোয়ালন্দ মোড় থেকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার জামাই পালের মাজার পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় সিরিয়ালে আটকে রাখা হয়েছে পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান।

এ সময় বাস চালকেরা জানান, দৌলতদিয়া ঘাটে এখন যাত্রী নিয়ে দীর্ঘ সময় বসে থাকতে হচ্ছে। তারপর পাওয়া যাচ্ছে না ফেরি।

দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের সুপার ভাইজার মো. মোফাজ্জেল হোসেন জানান, তীব্র স্রোতের কারণে গতকাল দুপুর থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আজ সকালেও তা চালু হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে লঞ্চ চলাচল ফের চালু করা হবে।

প্রকাশ :অক্টোবর ৫, ২০১৯ ১২:৩৪ অপরাহ্ণ