ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসের নেতৃত্বে সংগঠনটির বেশ কিছু নেতাকর্মী এই হামলা করেছে বলে জানা গেছে। হামলায় একজন সাংবাদিকও আহত হয়েছেন।
সোমবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহত নেতাকর্মীদের নামপরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তাদের কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেলে আর কয়েকজনকে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলে ভর্তিদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
সংঘর্ষে আহত হয়েছেন আনিসুর রহমান নামে এক সাংবাদিক। তিনি স্টুডেন্ট জার্নাল বিডি’র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি। তাকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, দুপুরের দিকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে যায়। এ সময় ছাত্রলীগের ঢাবি সভাপতি সঞ্জিত দাসের অনুসারীরা সেখানে গেলে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মধুর ক্যান্টিন ছেড়ে হাকিম চত্ত্বর এলাকায় যায়। সেখানে গিয়ে ছাত্রদলের কর্মীদের ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যেতে বলেন সঞ্জিতের অনুসারীরা।
হাকিম চত্বর থেকে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় লাইব্রেরির সামনে গেলে ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জিতের অনুসারীরা পেছন থেকে তাদের ওপর হামলা করে। পরে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা টিএসসি এলাকায় গিয়ে হামলার বর্ণনা দিতে থাকলে জসীম উদ্দিন হলের ছাত্রলীগ নেতা মহসিন আলম তালুকদার ও সূর্যসেন হলের শফিউর রহমান শফুর নেত্বত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর ফের হামলা চালানো হয়। এ সময় ছবি তুলতে গেলে এক সাংবাদিককেও পেটায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
আহত সাংবাদিক আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমি ক্লাস শেষ করে টিএসসি এলাকায় গিয়ে মারামারির ছবি তুলতে গেলে ছাত্রলীগের কর্মীরা আমাকে মারধর করতে থাকে। সাংবাদিক বলার পরও তারা আমাকে মারধর করে। এ সময় তারা আমার মোবাইল ফোনটিও ছিনিয়ে নেয়।’
ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল বলেন, ‘নিয়মিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আমরা মধুর ক্যান্টিনে গেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসের উপস্থিতিতে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করা হয়। এতে আমাদের বেশ কিছু নেতাকর্মী আহত হয়।’
তবে হামলার সময় নিজে উপস্থিত ছিলেন না বলে জানিয়েছেন ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস। সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে গিয়ে সঞ্জিত বলেন, ‘আমি তখন লাইব্রেরিতে ছিলাম। কিছু অতি উৎসাহী ছেলে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এজন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।’
হামলার ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের যারা জড়িত ছিল তাদের চিহ্নিত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবেও জানান সঞ্জিত।
এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘আমরা ঘটনাটি শুনেছি। প্রক্টরিয়াল টিমকেও ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রক্টর আরও বলেন, একজন ছাত্রের ব্যক্তিগত অন্য পরিচয় থাকতে পারে। তাই বলে একজন ছাত্র আরেকজনকে মারধর করবে সেটা কাম্য নয়। তিনি সবাইকে সংযত থাকার আহ্বান জানান।