বুধবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে উপজেলার উজিরপুর গ্রামে চেয়ারম্যান ফয়েজের ব্যক্তিগত কার্যালয়ের পেছনের ফাঁকা মাঠে এই ঘটনা ঘটে।
নির্মম পাশবিকতার শিকার রুবেলের বাড়ি নয়লাভাঙ্গা ইউনিয়নের রানীহাটি গ্রামে। তার বাবার নাম খোদাবক্স। রুবেল একজন আম ব্যবসায়ী। বৃহস্পতিবার ভোরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রুবেল জানায়, চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে উজিরপুর গ্রামের হোসেন আলী ও জিয়া নামে দুইজন ছুরি দিয়ে তার হাত কেটে দিয়েছেন। তবে চেয়ারম্যানের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত বিরোধ নেই বলে জানান।
রুবেল জানান, তার চাচাতো ভাই আবদুস সালাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক। শিবগঞ্জ সীমান্তের চরপাকা গরুর খাটাল নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য ও ইউপি চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিনের সঙ্গে তার বিরোধ রয়েছে। আর চাচাতো ভাই হিসেবে সালামের সঙ্গে রুবেলের ভালো সম্পর্ক। আর এ কারণেই চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার সমর্থকরা তার হাত কেটেছে।
রুবেল আরও জানান, বুধবার রাত ১০টার দিকে তিনি এবং তার দুই বন্ধু রবিউল ও হাবু চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। চেয়ারম্যান তখন তার লোকজন দিয়ে তাদের আটকান। এরপর চেয়ারম্যান তাদের একটি ঘরে নিয়ে যান। রুবেল ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করলে চেয়ারম্যান তাকে চুপচাপ বসে থাকতে বলেন। এরপর রাত দুইটার দিকে রুবেলকে হাত বেঁধে স্কুলের পেছনে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন চেয়ারম্যান তার হাতে কেটে ফেলার নির্দেশ দেন। এরপর হোসেন আলী ও জিয়া রুবেলের দুই হাত কেটে ফেলেন। ঘটনার পর চেয়ারম্যান ও তার ক্যাডাররা রুবেলকে ফেলে রেখে চলে যান। পরে চিৎকার শুনে রুবেলের বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
স্থানীয় বেশ কয়েকজন জানান, চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিন সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক। তিনি ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত। ২০১৭ সালে তার ইউপির নয়জন সদস্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন যে, চেয়ারম্যান তাদের গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। এলাকার এক আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের একটি মামলায় এ বছরের মার্চে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছিল।
রুবেলের হাত কেটে ফেলার বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার ফোন করা হলেও চেয়ারম্যান ফয়েজ উদ্দিন ধরেননি। তাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
শিবগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার খবর শুনে সকালে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে এ নিয়ে কাউকে আটক করা যায়নি। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা তারা তদন্ত করে দেখছেন। মামলা হলে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।