বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক প্রেস কনফারেন্সে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ ও রবি গত ২২ বছর ধরে নিয়মিতভাবে ভ্যাট, ট্যাক্স ও বিটিআরসির পাওনা পরিশোধ করে আসছিল। এরমধ্যে, বিভিন্নভাবে গ্রামীণের কাছে চার থেকে সাড়ে চার হাজার ও রবির কাছে আটশ’ থেকে সাড়ে আটশ’ কোটি টাকার দাবি আছে। এ দুটি অপারেটরের কাছে আবার বিটিআরসির পাওনা সুদসহ আট হাজার কোটি টাকা।
তিনি বলেন, রাজস্ব বাবদ গ্রামীণের কাছে যে চার হাজার কোটি টাকা পাওনা, তা এডিআরের মাধ্যমে নিষ্পত্তির অপেক্ষা আছে। আর বিটিআরসির যে পাওনা, তা আলোচনার ভিত্তিতে নিষ্পত্তি হবে। আমরা মনে করেছি, আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসা উচিত।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, কিছু ভুল বোঝাবুঝির কারণে দুই অপারেটরের সঙ্গে সরকারের সম্পর্কের অবনতি ঘটতে যাচ্ছিল। এ অবস্থা চলমান থাকলে আমাদের ক্ষতি হতো, আমরা রাজস্ব হারাতাম। তারা ব্যবসা করবে, আমরা নিজেদের পাওনা বুঝে নেবো। তারা (দুই অপারেটর) যে মামলা করেছে, সে মামলা তারা প্রত্যাহার করে নেবে। অপরদিকে সরকারের তরফ থেকে যে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল, তা প্রত্যাহার করা হবে।
অর্থমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে আমরা যে সিদ্ধান্ত নেবো, তা কখনোই দেশের স্বার্থের বিপক্ষে যাবে না।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, গতকাল থেকে দৃশ্যপট বদলে গেছে, বিটিআরসির সঙ্গে দেনা-পাওনার বিরোধ আমরা খুব অল্প সময়ের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে মিটিয়ে নেবো। মোবাইল কোম্পানিগুলো জাতীয় অর্থনীতিতে এবং যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিশাল ভূমিকা রাখছে। গত ২২ বছরে এ দুটি অপারেটরের সঙ্গে এই পাওনা ছাড়া আর কোনও বিষয় নিয়ে বিরোধ হয়নি। আমরা ব্যবসার সুস্থ পরিবেশ নিশ্চিত করতে চাই, তবে জাতীয় স্বার্থ উপেক্ষিত হতে পারে না। পারস্পরিক আলোচনার মধ্য দিয়ে আমরা বিষয়টি নিশ্চিত করবো।
এনবিআরের চেয়ারম্যান জানান, গ্রামীণফোন চেয়েছিল আরবিট্রেশনের মাধ্যমে বিরোধ মীমাংসা করতে। তবে বিটিআরসির আইনে আরবিট্রেশনের কোনও সুযোগ না থাকায়, তাদের প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়নি। আমরা তাদের পরামর্শ দিয়েছি, বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য অতিদ্রুত টেলিনরের সঙ্গে কথা বলতে। তারা আমাদের পরামর্শ গ্রহণ করেছে।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস, গ্রামীণফোনের সিইও মাইকেল ফোলি এবং রবির সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ।