২১শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৭:৫২

ইলিশে স্বস্তি, সবজির দাম বাড়ছেই

দেশজনতা অনলাইন  : খুচরা কিংবা পাইকারী, সব বাজারেই ইলিশ মাছের সরবরাহ এখন অনেক বেশি। যে কারণে ইলিশের দাম কিছুটা কমেছে সত্য তবে বেড়েই চলেছে সবজির দাম।

গত কয়েকদিনে বাজারে ইলিশের দাপটই বেশি লক্ষ্য করা গেছে। বাজারে ঢুকলেই দেখা যাচ্ছে ইলিশের পসরা নিয়ে বসে আছেন দোকানী। তবে সরবরাহের তুলনায় যে হারে মূল্য হ্রাস হওয়ার প্রত্যাশা ছিলো ক্রেতাদের সেই হারে কিন্তু কমেনি। সপ্তাহ খানেক আগে এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১৫/১৬ শত টাকায়। এখন তা পাওয়া যাচ্ছে ১১/১২ শত টাকায়। কোথাও কোথাও আবার এক হাজার টাকায়ও কেজি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে ঘুরে ঘুরে ইলিশের দামের গড়পড়তা ধারণায় গ্রামপ্রতি শতটাকা বলা যায়। মানে, একশত গ্রাম ইলিশের দাম একশত টাকা। আটশত গ্রামের ইলিশ হলে আটশত টাকা। এক কেজি হলে এক হাজার টাকা। তবে দেড় কেজি বা তারচেয়ে বেশি হলে দাম হাঁকা হচ্ছে অনেক বেশি। দেড় থেকে দুই কেজি সাইজের ইলিশের দাম কেজি প্রতি ১৮/২২ শত টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

অন্যদিকে সবজির দাম লাগামহীনভাবে বেড়েই যাচ্ছে। ঈদের আগ থেকেই সবজির দাম ছিলো চড়া। ঈদের দুই সপ্তাহ পরেও সেখানে কোন হেরফের নেই! উল্টো কিছু কিছু সবজির দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে দোকানীদের বাহানারও শেষ নেই।

হালে একমাত্র কাঁচাকলা আর পেঁপে ছাড়া কোন সবজিই কেজি প্রতি ৫০ টাকার নিচে পাওয়া যচ্ছে না। মূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে খুচরা ও পাইকাররা দিচ্ছেন নানা অজুহাত। কেউ বলছেন, সরবরাহ কম, কেউ দিচ্ছেন বন্যার দোহাই আবার অনেকেই বলছেন ঈদের ছুটি শেষ করে এখনও শতভাগ পাইকাররা তাদের ব্যবসা শুরু করতে পারেননি। যে কারণে দাম বেশি।

মোহাম্মদ জুবায়ের হোসেন সকালে গিয়েছেন রাজধানীর জিগাতলা কাঁচাবাজারে সবজি কিনতে। কিন্তু দামের অবস্থা দেখে তার মাথায় হাত। তিনি বলেন, ঈদের সময় থেকেই বিক্রেতারা বলে আসছেন সরবরাহ কম তাই পাইকারি বাজারে দাম বেশি। কিন্তু এখনতো দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সরবারাহ ঠিকঠাক হচ্ছে তাহলে এখন কেন দাম এতো বেড়েছে?

তিনি অভিযোগ করে বলেন, সরবরাহের বিষয়টি মূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রধান কারণ হতে পারেনা। সবজির বাজার হয়তো একটা সিন্ডিকেটের হাতে নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। তাই আমাদের মতো সাধারণ মানুষের কাছে কাঁচাবাজারে প্রয়োজন আর পছন্দমত সবজি কেনা দিন দিন নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। তবে সরকার বা সিটি করপোরেশন যদি এ দিকে নজর দেয় তাহলে হয়তো নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে উত্তরাঞ্চলে বন্যার কারণে পাইকারি বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজিসহ কাঁচা মালামালের সরবরাহ কমেছে। তাই দামও বেশি।

শনিবার রাজধানীর ঝিগাতলা, রায়েরবাজার, নিউমার্কেট কাঁচাবাজার, মিরপুর ১ নং কাঁচাবাজার, শেওড়াপাড়া বাজার ঘুরে দেখা গেছে সব ধরণের সবজির দামই বাড়তি।

বাজারগুলোতে মাত্র ৩ দিনের ব্যবধানে সবজির প্রকার বেঁধে কেজিতে দাম বেড়েছে প্রায় ৭ থেকে ১২ টাকার মতো।

খুচরা বাজারগুলোতে প্রতিকেজি টমেটো প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। গাজর ১১০ টাকা, ঝিঙা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, বেগুন প্রকারভেদে ৭০ থেকে ৯০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁডস ৪০ থেকে ৬০ টাকা, শসা ৭০ থেকে ১২০ টাকা, কচুরছড়া ৬০ টাকা, কচুরলতি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

তাছাড়া প্রতি পিস বাঁধাকপি ও ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাঁচকলার হালি ৩০ টাকা, লাউ প্রতিপিস ৫০/৬০ টাকা। প্রতি আঁটি লালশাক ১০ থেকে ১৫ টাকা, লাউশাক ৪০ টাকা, কুমড়ার শাক ৩০ টাকা, পুঁইশাক ৩০ টাকা।

বাজারে সবজির দাম বাড়ার বাতাস মাছ আর মুরগিতেও লেগেছে। ইলিশ ছাড়া অন্যান্য মাছের দাম বেশ খানিকটা বেড়ে গেছে। দেশি মুরগি প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা, বয়লার প্রতিকেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। অবশ্য খাসি আর গুরুর মাংসের দামে তেমন কোন হেরফের নেই। গরুর মাংস ৫৫০ টাকা কেজি আর খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা।

প্রকাশ :আগস্ট ৩১, ২০১৯ ৩:৩২ অপরাহ্ণ