২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৯ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | সন্ধ্যা ৭:২১

জীবিত মাকে মৃত দেখিয়ে জমি বিক্রির চেষ্টা

দেশজনতা অনলাইন : খুলনার দৌলতপুর সাব রেজিস্ট্রার অফিসে অবৈধ কর্মকাণ্ডের কারণে হয়রানিতে পড়েছেন এক নারী। প্রবাসী ছেলে তাকে মৃত দেখিয়ে জমি বিক্রির চেষ্টা করছেন। তিনি দৌলতপুর সাব রেজিস্ট্রার অফিসের মাধ্যমে এক ব্যবসায়ীকে জমি বিক্রির ক্ষমতার্পণ (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি) করেছেন। ছেলের এই তৎপরতার কারণে ভিটেমাটি হারানোর শঙ্কায় ছুটে বেড়াচ্ছেন প্রবাসী সৈয়দ মুনির আক্তার মুরাদের মা হাসিনা আক্তার। তিনি ছেলেন বিরুদ্ধে আদালতে ভরণপোষণ মামলাও করেছেন।দৌলতপুর সাব রেজিস্ট্রার অফিসের ১নং বহির ১৪৪৮ ক্রমিক নম্বরের ১৪৩৬/১৯ নম্বর দলিল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ জুন ক্ষমতার্পণ (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি) দলিলটি করা হয়। ওই দলিলে সৈয়দ মুনির আক্তার মুরাদ জমি বিক্রির ক্ষমতা অর্পণকারী হিসেবে রয়েছেন। সেখানে তার পরিচিতির ক্ষেত্রে বাবার নামের পাশাপাশি মায়ের নামও উল্লেখ করেছেন মৃত হিসেবে। অথচ মা হাসিনা আক্তার জীবিত। জমি বিক্রির পাওয়ার অব অ্যাটর্নি পেয়েছেন এস এম সাইফুল ইসলাম নামে একজন। দলিলে জমি বিক্রয় বায়না চুক্তি করা হয়েছে। অথচ ওই জমিতে মুরাদের মা হাসিনা আক্তার বসবাস করছেন। এছাড়াও জমির মালিকানা নিয়ে বড় ভাই আবুল কালাম আজাদ নিজেই বাদী হয়ে সৈয়দ মুনির আক্তার মুরাদের নামে আদালতে বছর খানের আগে মামলাও করেছেন। তবে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি পাওয়া গ্রহিতা জমির দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। তার লোকজন প্রতিনিয়ত পাবলার ওই জমিতে যাচ্ছেন এবং হাসিনা আক্তারকে বাড়ি খালি করার জন্য শাসাচ্ছেন। ওই জমিতে পাওয়ার অব অ্যাটর্নির লাগানো সাইনবোর্ড তুলে ফেলায় সন্ত্রাসীরা সম্প্রতি আবুল কালাম আজাদকে মারপিটও করেছে।

এ বিষয়ে হাসিনা আক্তার বলেন, ‘জমির মালিক আমার বড় ছেলে আবুল কালাম আজাদ। তার কাছ থেকে জমি কেনার দেনাপাওনা সমাধান না করার কারণে আজাদ বাদী হয়ে মুরাদের নামে আদালতে মামলা দায়ের করে। এ অবস্থায় আমেরিকা থেকে সম্প্রতি খুলনায় এসে মুরাদ জমি বিক্রি করার চেষ্টা করে। সফল হতে না পেরে অন্য একজনের সঙ্গে জমি বিক্রির বায়না করার নামে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি প্রদান করে। কিন্তু সাব রেজিস্ট্রার অফিস তদন্ত না করেই ওই দলিলটি গ্রহণ করায় বিপত্তি সৃষ্টি হয়েছে। ওই দলিলে আমি জীবিত থাকলেও আমাকে মৃত দেখানো হয়েছে। এটা কী ধরনের কাজ?’

আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সাব রেজিস্ট্রার অফিস থেকে দলিল তৈরির সময় তদন্ত করে দেখার নিয়ম রয়েছে। বায়না দলিল করার ক্ষেত্রে তদন্ত করা হলে এ দলিলটি করা অসম্ভব হতো। কারণ তদন্তে আসলেই তারা জমিটি নিয়ে চলমান মামলা সম্পর্কে জানতে পারতেন। একইসঙ্গে আমাদের মা হাসিনা আক্তার যে জীবিত তাও তারা দেখতে পারতেন। তাহলে আমিও এভাবে হামলার শিকার হয়ে হাসপাতালে পড়ে থাকতাম না।’

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘হামলার শিকার আবুল কালাম থানায় এসেছিলেন। তাকে চিকিৎসা গ্রহণের পর অভিযোগ নিয়ে আসতে বলেছি। কারণ তার অবস্থা তখন ভালো ছিল না। অভিযোগ পাওয়ারই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া সহজ হবে।’

দৌলতপুর সাব রেজিস্ট্রার অফিসের সাব রেজিস্ট্রার মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘দলিলের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি এসে আবেদন করলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।’ এ দলিলটি করার ক্ষেত্রে তদন্ত না করা প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।

 

প্রকাশ :আগস্ট ৭, ২০১৯ ৪:২০ অপরাহ্ণ