দেশজনতা অনলাইন : সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে ঝুঁকিপূর্ণ এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। রোগীর চাপ সামলাতে হাসপাতালগুলো হিমশিম খাচ্ছে। বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। স্বাভাবিকভাবেই ডেঙ্গু নিয়ে জনমনে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এই প্রেক্ষাপটে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের প্রধান কীটতত্ত্ববিদ ডা. ভূপেন্দর নাগপাল বলছেন, ‘এডিস স্মার্ট মশা, ফগিংয়ে কাজ হয় না।’
ডেঙ্গুর জন্য দায়ী এডিস মশা ধ্বংসে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ব্যবহৃত ওষুধের অকার্যকারিতার অভিযোগ, নতুন ওষুধ আমদানি নিয়ে বিতর্ক—সব মিলিয়ে টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘ফগার মেশিন দিয়ে রাস্তা বা উন্মুক্ত জয়গায় কীটনাশক ছিটিয়ে এডিস মশা মারা যায়—এটা কেবলই একটি মিথ।’ তিনি এর বদলে বাড়িঘর পরিষ্কার রাখা এবং সকাল-সন্ধ্যা অ্যারোসল স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছেন। সঠিক ওষুধ সঠিক মাত্রায় সঠিকভাবে না দিতে পারলে এডিসের লার্ভা নষ্টে খুব বেশি সাফল্য পাওয়া যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ফগিংয়ের মাধ্যমে যে ওষুধ দেওয়া হয় তাতে ৯৫ শতাংশ ডিজেল বা কেরোসিন থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব ওষুধ শ্বাসের সঙ্গে আমরা টেনে নিচ্ছি আর তাতে করে শ্বাসতন্ত্রসহ হৃদযন্ত্রের জটিলতা হয়। তাই ডব্লিউএইচও ফগিংয়ের পরামর্শ দেয় না।
তবে দেশের কীটতত্ত্ববিদরা ডা. নাগপালের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন।
ডা. নাগপাল এডিস মশা নিধনে এর প্রজননস্থল ধ্বংসের দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন। বলেন, ‘এডিস মশা পানির উপরিভাগে ডিম পাড়ে এবং সেগুলো সারাবছর টিকে থাকে।’
তিনি বলেন, “এডিস মশা কেবল বর্ষা মৌসুমে ডিম পাড়ে—এমন ধারণা ভুল। প্রকৃত তথ্য হচ্ছে এই মশা বছরের ৩৬৫ দিনই ডিম পাড়ে। এসব ডিম এক বছরেও নষ্ট হয় না। আর পানি পেলে সেই ডিম থেকেই মশা জন্ম নেয়। তাই ‘ভেক্টর কন্ট্রোল’ করা ছাড়া এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।”
এডিসের প্রজননস্থল চিহ্নিত করাটাই আসল বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এডিস মশা ঘরের কোনায়, অন্ধকারে আর্দ্রতাপূর্ণ জায়গায়, যেমন পর্দার পেছনে, খাট ও টেবিল চেয়ারের নিচে থাকতে পছন্দ করে। আর এডিসের লার্ভা ধ্বংস করতে এক গ্রাম টেমিফস ১০ লিটার পানিতে খুব কার্যকর। এটি ব্যবহার করতে পারলে সেখানে অন্তত ৩ সপ্তাহের মধ্যে পুনরায় এডিস জন্মাবে না।’
তিনি আরও বলেন, যদি শহরের নির্মাণাধীন ভবনের প্রজননস্থানগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাহলে ডেঙ্গু রোগের ৪০ শতাংশ প্রাদুর্ভাব কমানো সম্ভব।
নির্মাণাধীন ভবনে একাধিক ব্রিডিং স্পট থাকে উল্লেখ করে ডা. নাগপাল বলেন, সপ্তাহে একদিন যদি কেরোসিন বা ডিজেল জাতীয় তেল এখানে স্প্রে করা যায়, তাহলে এডিস ধ্বংস করা সম্ভব।
এদিকে ফগিং নিয়ে কথা না বললেও মশার প্রজননস্থান ধ্বংসের বিষয়ে জোর দিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, এডিস মশার প্রজননস্থান ধ্বংস করা না গেলে এই রোগের প্রকোপ আরও বাড়তে পারে।
তিনি বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে, যদি সোর্স রিডাকশন করা যায় তাহলেই এটাকে থামানো যাবে। আর যদি কোনও কারণে এটা নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তাহলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এটা চলবে, সেপ্টেম্বর হচ্ছে পিক টাইম। তাই এখানে সোর্স রিডাকশন করাটাই মশা নির্মূলের একমাত্র পদ্ধতি।
ডা. নাগপালের সঙ্গে একমত হওয়ার সুযোগ নেই মন্তব্য করে কীটতত্ত্ববিদ মুনজুর এ চৌধুরী বলেন, দেশে এখন একটি ‘এপিডেমিক সিচুয়েশন’ চলছে, এখানে যেসব ইমার্জেন্সি মেজার নিতে হবে, তার মধ্যে এডাল্ট মশাকে মেরে ফেলতে হবে। স্পেশালি যেসব মশার মধ্যে ভাইরাস ঢুকে গেছে, সেগুলো যদি কোনও সুস্থ মানুষকে কামড়ে দেয় তাহলে রোগ ছড়াবে। সুতরাং এডাল্ট মশা মারা ‘মাস্ট’।
তিনি বলেন, আর যদি দেশের সব প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করা যায়—যদিও সেটা সম্ভব না—তাহলেও তো অনেক এডাল্ট মশা থাকবে যেগুলো ইতোমধ্যে ভাইরাস সংক্রমণে সক্ষম।
তার ভাষ্য, যদি ঠিকমতো ফগিং করা যায় তাহলে তো কিছুসংখ্যক হলেও মশা মারা যাবে; এখন তো এর বিকল্প নেই। ফগিং নিশ্চয়ই কাজ করে, ফগিংয়ে তো মশা মরে যদি সঠিকভাবে, সঠিকমাত্রায় ছিটিয়ে দেওয়া যায়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডেঙ্গু বিষয়ক কর্মসূচির ব্যবস্থাপক অধ্যাপক ডা. এমএম আক্তারুজ্জামান বলেন, এডিস মশার ডিম শুকনো পরিবেশেও ৮ মাস থেকে এক বছরের মতো সক্রিয় থাকে। তিনি বলেন, এডিস মশা যে শহরে বা যে এলাকাতে বিস্তার করে একবার, সে এলাকায় আর নিস্তার নেই।
রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. গুলজার হোসেন উজ্জ্বল বলেন, ফগার মেশিনে এডিস মশা মরে না। বরং এমন কিছু কীটপতঙ্গ মরে যায় যেগুলো কিনা এডিস মশাকে মারতে পারতো—এ কথাগুলো আমার নয়। সিঙ্গাপুরের ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ টিমের প্রধান অধ্যাপক গুবলারের। তার ভাষায়, পৃথিবীতে যে দেশে ডেঙ্গু ঢুকেছে সেখান থেকে আর বের হয়নি, অধ্যাপক গুবলারের ভাষায় এই যুদ্ধ ‘এন্ডলেস’। তাই সবচেয়ে সহজ হলো আবাস বা প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করা।
যদিও নাম প্রকাশে আইইডিসিআর-এর একজন কর্মকর্তা বলেন, নিশ্চয়ই ফগিংয়ে মশা মরে। ডা. নাগপালের মতের সঙ্গে আমার দ্বিমত রয়েছে।
আবার আইইডিসিআরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, ফগিংয়ে মশা মরে না—এটা তো নতুন কথা নয়, পুরাতন কথা, অনেক আগের কথা।
ডা. নাগপালের সঙ্গে একমত পোষণ করে তিনি বলেন, ফগিং ইফেক্টিভ নয়।
ডা. রহমান বলেন, ফগিং যেখানে দেওয়া হয় সেখান থেকে মশা উড়ে গিয়ে অন্য জায়গায় চলে যায়, ফলে ইফেক্টিভলি মশা মরে না, এটাই ফগিংয়ের ফেইলর। বরং ফগিং পরিবেশের ক্ষতি করে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য কীটনাশক ব্যবহার ৩ নম্বর টুলস। মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য ১. পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা, ২. জৈবিক নিয়ন্ত্রণ, ৩. কীটনাশকের ব্যবহার এবং ৪. কমিউনিটি ইনভলবমেন্ট দরকার। এই ৪টিই ব্যবহার করা প্রয়োজন।
তবে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে কীটনাশক বা ফগিং বন্ধ করা যাবে না। কারণ, এখন উড়ন্ত মশা যেগুলো ভাইরাস দ্বারা ইনফেক্টেট তাদের মেরে ফেলা খুবই জরুরি। আর উড়ন্ত মশাগুলো মেরে ফেলার জন্য ফগিং অন্যতম।
এর সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা ও সোর্স রিডাকশনে কাজ চালাতে হবে। মশা নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সম্পৃক্ত করার ওপর জোর দেন তিনি।
ডেঙ্গুর জন্য দায়ী এডিস মশা ধ্বংসে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ব্যবহৃত ওষুধের অকার্যকারিতার অভিযোগ, নতুন ওষুধ আমদানি নিয়ে বিতর্ক—সব মিলিয়ে টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘ফগার মেশিন দিয়ে রাস্তা বা উন্মুক্ত জয়গায় কীটনাশক ছিটিয়ে এডিস মশা মারা যায়—এটা কেবলই একটি মিথ।’ তিনি এর বদলে বাড়িঘর পরিষ্কার রাখা এবং সকাল-সন্ধ্যা অ্যারোসল স্প্রে করার পরামর্শ দিয়েছেন। সঠিক ওষুধ সঠিক মাত্রায় সঠিকভাবে না দিতে পারলে এডিসের লার্ভা নষ্টে খুব বেশি সাফল্য পাওয়া যাবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ফগিংয়ের মাধ্যমে যে ওষুধ দেওয়া হয় তাতে ৯৫ শতাংশ ডিজেল বা কেরোসিন থাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব ওষুধ শ্বাসের সঙ্গে আমরা টেনে নিচ্ছি আর তাতে করে শ্বাসতন্ত্রসহ হৃদযন্ত্রের জটিলতা হয়। তাই ডব্লিউএইচও ফগিংয়ের পরামর্শ দেয় না।
তবে দেশের কীটতত্ত্ববিদরা ডা. নাগপালের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন।
ডা. নাগপাল এডিস মশা নিধনে এর প্রজননস্থল ধ্বংসের দিকে মনোযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেন। বলেন, ‘এডিস মশা পানির উপরিভাগে ডিম পাড়ে এবং সেগুলো সারাবছর টিকে থাকে।’
তিনি বলেন, “এডিস মশা কেবল বর্ষা মৌসুমে ডিম পাড়ে—এমন ধারণা ভুল। প্রকৃত তথ্য হচ্ছে এই মশা বছরের ৩৬৫ দিনই ডিম পাড়ে। এসব ডিম এক বছরেও নষ্ট হয় না। আর পানি পেলে সেই ডিম থেকেই মশা জন্ম নেয়। তাই ‘ভেক্টর কন্ট্রোল’ করা ছাড়া এই রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না।”
এডিসের প্রজননস্থল চিহ্নিত করাটাই আসল বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এডিস মশা ঘরের কোনায়, অন্ধকারে আর্দ্রতাপূর্ণ জায়গায়, যেমন পর্দার পেছনে, খাট ও টেবিল চেয়ারের নিচে থাকতে পছন্দ করে। আর এডিসের লার্ভা ধ্বংস করতে এক গ্রাম টেমিফস ১০ লিটার পানিতে খুব কার্যকর। এটি ব্যবহার করতে পারলে সেখানে অন্তত ৩ সপ্তাহের মধ্যে পুনরায় এডিস জন্মাবে না।’
তিনি আরও বলেন, যদি শহরের নির্মাণাধীন ভবনের প্রজননস্থানগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাহলে ডেঙ্গু রোগের ৪০ শতাংশ প্রাদুর্ভাব কমানো সম্ভব।
নির্মাণাধীন ভবনে একাধিক ব্রিডিং স্পট থাকে উল্লেখ করে ডা. নাগপাল বলেন, সপ্তাহে একদিন যদি কেরোসিন বা ডিজেল জাতীয় তেল এখানে স্প্রে করা যায়, তাহলে এডিস ধ্বংস করা সম্ভব।
এদিকে ফগিং নিয়ে কথা না বললেও মশার প্রজননস্থান ধ্বংসের বিষয়ে জোর দিয়েছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, এডিস মশার প্রজননস্থান ধ্বংস করা না গেলে এই রোগের প্রকোপ আরও বাড়তে পারে।
তিনি বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে, যদি সোর্স রিডাকশন করা যায় তাহলেই এটাকে থামানো যাবে। আর যদি কোনও কারণে এটা নিয়ন্ত্রণ না করা যায় তাহলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এটা চলবে, সেপ্টেম্বর হচ্ছে পিক টাইম। তাই এখানে সোর্স রিডাকশন করাটাই মশা নির্মূলের একমাত্র পদ্ধতি।
ডা. নাগপালের সঙ্গে একমত হওয়ার সুযোগ নেই মন্তব্য করে কীটতত্ত্ববিদ মুনজুর এ চৌধুরী বলেন, দেশে এখন একটি ‘এপিডেমিক সিচুয়েশন’ চলছে, এখানে যেসব ইমার্জেন্সি মেজার নিতে হবে, তার মধ্যে এডাল্ট মশাকে মেরে ফেলতে হবে। স্পেশালি যেসব মশার মধ্যে ভাইরাস ঢুকে গেছে, সেগুলো যদি কোনও সুস্থ মানুষকে কামড়ে দেয় তাহলে রোগ ছড়াবে। সুতরাং এডাল্ট মশা মারা ‘মাস্ট’।
তিনি বলেন, আর যদি দেশের সব প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করা যায়—যদিও সেটা সম্ভব না—তাহলেও তো অনেক এডাল্ট মশা থাকবে যেগুলো ইতোমধ্যে ভাইরাস সংক্রমণে সক্ষম।
তার ভাষ্য, যদি ঠিকমতো ফগিং করা যায় তাহলে তো কিছুসংখ্যক হলেও মশা মারা যাবে; এখন তো এর বিকল্প নেই। ফগিং নিশ্চয়ই কাজ করে, ফগিংয়ে তো মশা মরে যদি সঠিকভাবে, সঠিকমাত্রায় ছিটিয়ে দেওয়া যায়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডেঙ্গু বিষয়ক কর্মসূচির ব্যবস্থাপক অধ্যাপক ডা. এমএম আক্তারুজ্জামান বলেন, এডিস মশার ডিম শুকনো পরিবেশেও ৮ মাস থেকে এক বছরের মতো সক্রিয় থাকে। তিনি বলেন, এডিস মশা যে শহরে বা যে এলাকাতে বিস্তার করে একবার, সে এলাকায় আর নিস্তার নেই।
রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. গুলজার হোসেন উজ্জ্বল বলেন, ফগার মেশিনে এডিস মশা মরে না। বরং এমন কিছু কীটপতঙ্গ মরে যায় যেগুলো কিনা এডিস মশাকে মারতে পারতো—এ কথাগুলো আমার নয়। সিঙ্গাপুরের ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ টিমের প্রধান অধ্যাপক গুবলারের। তার ভাষায়, পৃথিবীতে যে দেশে ডেঙ্গু ঢুকেছে সেখান থেকে আর বের হয়নি, অধ্যাপক গুবলারের ভাষায় এই যুদ্ধ ‘এন্ডলেস’। তাই সবচেয়ে সহজ হলো আবাস বা প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করা।
যদিও নাম প্রকাশে আইইডিসিআর-এর একজন কর্মকর্তা বলেন, নিশ্চয়ই ফগিংয়ে মশা মরে। ডা. নাগপালের মতের সঙ্গে আমার দ্বিমত রয়েছে।
আবার আইইডিসিআরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, ফগিংয়ে মশা মরে না—এটা তো নতুন কথা নয়, পুরাতন কথা, অনেক আগের কথা।
ডা. নাগপালের সঙ্গে একমত পোষণ করে তিনি বলেন, ফগিং ইফেক্টিভ নয়।
ডা. রহমান বলেন, ফগিং যেখানে দেওয়া হয় সেখান থেকে মশা উড়ে গিয়ে অন্য জায়গায় চলে যায়, ফলে ইফেক্টিভলি মশা মরে না, এটাই ফগিংয়ের ফেইলর। বরং ফগিং পরিবেশের ক্ষতি করে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য কীটনাশক ব্যবহার ৩ নম্বর টুলস। মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য ১. পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা, ২. জৈবিক নিয়ন্ত্রণ, ৩. কীটনাশকের ব্যবহার এবং ৪. কমিউনিটি ইনভলবমেন্ট দরকার। এই ৪টিই ব্যবহার করা প্রয়োজন।
তবে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে কীটনাশক বা ফগিং বন্ধ করা যাবে না। কারণ, এখন উড়ন্ত মশা যেগুলো ভাইরাস দ্বারা ইনফেক্টেট তাদের মেরে ফেলা খুবই জরুরি। আর উড়ন্ত মশাগুলো মেরে ফেলার জন্য ফগিং অন্যতম।
এর সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা ও সোর্স রিডাকশনে কাজ চালাতে হবে। মশা নিয়ন্ত্রণে জনগণকে সম্পৃক্ত করার ওপর জোর দেন তিনি।