দেশজনতা অনলাইন : শাশুড়ির দায়ের করা অপরহরণ মামলায় জামিন পেয়েছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বী হরিজন সম্প্রদায়ের যুবক তুষার। একইসঙ্গে হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের দেওয়া অর্থদণ্ড স্থগিত করেছেন।
ব্রাহ্মণের মেয়ে সুম্মিতা দেবনাথ অদিতিকে ভালোবেসে বিয়ের জেরে শাশুড়ির দায়ের করা অপহরণ মামলায় কারাগারে ছিলেন তুষার।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালত বলেন, ‘আমাদের সমাজে এ রকম অসম বিয়ে হলে সমাজচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু আইন তো ভিন্ন। একদিকে আইন একদিকে বাস্তবতা। আমাদের সমাজে উচু-নিচু জাতের একটা সমস্যা রয়েছে। একথা অস্বীকার করার উপায় নেই। স্বামী দলিত সম্প্রদায়ের হলে মেয়ের বাবা যদি মেনে নেয় তবে তার পরিবারকে সমাজচ্যুত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এ বাস্তবতাও ভাবতে হবে।’
বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে আপিলের ওপর শুনানি হবে।
তুষার দাসকে নিম্ন আদালতের দেওয়া ১৪ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন হাইকোর্ট।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে উদ্দেশ্যে করে আদালত বলেন, ‘আপনার এই জজ সাহেব দেখেন সব কিছু একদিনেই করেছেন। এভাবে যদি সারা দেশের বিচারকরা মামলার বিচার করেন, তাহলে নিম্ন মামলার জট থাকার কথা না।’
অপহরণের অভিযোগ প্রমাণ হওয়া প্রসঙ্গে হাইকোর্ট বলেন, ‘যেখানে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি রায়েই বলা হয়েছে। সেখানে অপহরণের অভিযোগে কীভাবে সাজা দেয় ?’
সুষ্মিতার মা তুষারের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের মামলা করেন। মামলায় অপহরণের দায়ে তুষারকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন শরীয়তপুরের নারী ও শিশু নির্য়াতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা জজ আ. ছালাম খান। সুম্মিতা দেবনাথ স্বেচ্ছায় তুষার দাসকে বিয়ে করার কথা বললেও তার কথা আমলে নেননি নিম্ন আদালত।
গত ২৩ জুলাই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তুষার। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। স্বামীকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড থেকে মুক্ত করতে উচ্চ আদালতে যান স্ত্রী সুম্মিতা দেবনাথ।