মহাসচিব বলেন, ‘প্রতিবছর ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় বহুলোকের প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে। এখান থেকে উত্তোরণ ঘটিয়ে সড়ককে নিরাপদ করার জন্য ধীরগতি ও দ্রুতগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেইন চালুর দাবি জানাচ্ছি।’
বিবৃতিতে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, ‘রুটি-মাংস নিয়ে আত্মীয়-পরিজনের বাসায় বিলাতে গিয়ে প্রতি বছর ঈদুল আজহার দিন বিকালে ও ঈদের পরদিন শত শত মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় পতিত হয়।’ এবারের ঈদে এই বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য গণমাধ্যম ও সরকারের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিগত ঈদুল ফিতরের মতো এবারের ঈদেও লম্বা ছুটি পরিকল্পিতভাবে কাজে লাগিয়ে রেশনিং পদ্ধতিতে ঈদযাত্রা নিশ্চিত করা গেলে ভোগান্তি ও দুর্ঘটনামুক্ত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন যাত্রা নিশ্চিত করা সক্ষম হবে বলে মনে করে সংগঠনটি।
সংগঠনের পক্ষ থেকে ২৮ দফা প্রস্তাবনা অনুসরণের দাবি জানানো হয়। প্রস্তাবনাগুলো হলো:
১. জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে ফিটনেসবিহীন যানবাহন, নসিমন-করিমন, ইজিবাইক, অটোরিকশা, ব্যাটারি ও প্যাডেলচালিত রিকশার পাশাপাশি মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ করা।
২. মোটরসাইকেলে ঈদযাত্রা নিষিদ্ধ করা।
৩. গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্প কলকারখানা রেশনিং পদ্ধতিতে ছুটির ব্যবস্থা করা।
৪. টোল প্লাজার সবকটি বুথ চালু করা ও দ্রুত গাড়ি পাসিংয়ের ব্যবস্থা করা।
৫. মহাসড়কের পাশে অস্থায়ী হাটবাজার উচ্ছেদ করা।
৬. মহাসড়কের উপর ও মহাসড়কের আশেপাশে অস্থায়ী পশুরহাট বন্ধ করা।
৭. মহাসড়কে পশুবাহী যানবাহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করা।
৮. দুর্ঘটনা প্রতিরোধে স্পিডগান ব্যবহার ও উল্টোপথের গাড়ি চলাচল বন্ধ করা।
৯. বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক-মহাসড়ক দ্রুত মেরামত করে যান চলাচলের উপযোগী করা।
১০. গতি নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপদ করার ব্যবস্থা নেওয়া।
১১. টিকিট কালোবাজারি বন্ধ করা।
১২. ই-টিকেটিং চালু করা ও অগ্রিম টিকিট প্রদানের নামে হয়রানি বন্ধ করা।
১৩. গণপরিবহন সংকট সমাধানে দীর্ঘমেয়াদী পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
১৪. সুনিদির্ষ্টি কারণ বা অভিযোগ ছাড়া ঈদযাত্রার মাঝপথে যানবাহন থামিয়ে কাগজপত্র চেকিং বন্ধ করা।
১৫. বাসটার্মিনাল ও সড়কে অজ্ঞানপার্টি, মলমপার্টি ও ছিনতাইকারী মুক্ত রাখার পদক্ষেপ গ্রহণ।
১৬. মহাসড়ক অবৈধ দখল ও পার্কিংমুক্ত করা।
১৭. অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করা।
১৮. অযান্ত্রিক যানবাহন ও পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রীবহন নিষিদ্ধ করা।
১৯. ঈদের আগে ও পরে সড়কে যানবাহন থামিয়ে চাঁদাবাজি বন্ধ করা।
২০. লাইসেন্সবিহীন ও অদক্ষ চালক ঈদযাত্রায় নিষিদ্ধ করা।
২১. বিরতিহীন ও বিশ্রামহীনভাবে যানবাহন চালানো নিষিদ্ধ করা।
২২. জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের ফুটপাত, জেব্রাক্রসিং, পদচারী সেতু, আন্ডারপাস, ওভারপাস দখলমুক্ত করে যাত্রীসাধারণের যাতায়াতের ব্যাবস্থা রাখা।
২৩. ঝুঁকিপূর্ণ সড়ক দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা করা।
২৪. ফেরিঘাট, লঞ্চঘাট, নগরীর প্রবেশমুখ ও সড়কের গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারসেকশনসমূহে দ্রুত গাড়ি পাসিংয়ের ব্যবস্থা করা।
২৫. দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহন দ্রুত উদ্ধার আহতদের চিকিৎসা ব্যবস্থা করা।
২৬. অপ্রত্যাশিত যানজটের কবলে আটকে পড়া যাত্রীদের টয়লেট ব্যবহারের সুবিধা রাখা।
২৭. জাতীয় মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ ইন্টারসেকশন, মিডিয়ান গ্যাপ ও বাঁকে যানজট নিরসনের ব্যবস্থা রাখা।
২৮. সড়কে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের ঈদের ছুটি বাতিল করা।