রবিবার সকালে নওগাঁর মান্দার বুড়িদহ গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এছাড়া পৃথক ঘটনায় আরও একজনকে গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে।
গণপিটুনির শিকার ব্যক্তিরা হলেন নওগাঁ সদর উপজেলার খাগড়া ফয়েজ উদ্দিন কলেজ এলাকার সাদ্দাম, আসলাম, সাইফুল, আব্দুল মজিদ, আনিছুর, ফারাদপুর গ্রামের রেজাউল করিম এবং মান্দা উপজেলার আবুল কালাম আজাদ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কুসুম্বা ইউপির বুড়িদহ এলাকার জনৈক রনজিত পুকুরে ছোট মাছ ধরার জন্য ছয় জেলেকে নিয়ে আসেন। চুক্তি ছিল পুকুর মালিক নেবেন মাছের ৭০ শতাংশ এবং জেলেরা পাবেন ৩০ শতাংশ। সকাল থেকে জেলেরা পুকুরে মাছ ধরছিলেন। মাছ ধরার সময় তারা তিনটি বড় মাছ গোপনে বস্তার মধ্যে রেখে দেন। পরে পুকুর মালিক বিষয়টি বুঝতে পেরে তাদের বস্তা দেখতে চাইলে জেলেরা রাজি না হয়ে এক সময় তারা দৌড় দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এতেই ঘটে বিপত্তি। পাড়ার লোকজন ছেলেধরা বলে চিৎকার দিয়ে ধাওয়া করে তাদের ধরে গণপিটুনি দেয়। পরে থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাফফর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ছেলেধরা বিষয়টি গুজব। বাস্তবে তারা নিরীহ জেলে। তারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। গ্রামবাসী ছেলে ধরা গুজবে তাদের ধাওয়া করে আটক করে গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করে জালসহ থানায় নিয়ে আসে।
অন্যদিকে স্থানীয়রা উপজেলার মহানগর স্কুলের সামনে থেকে আবুল কালাম আজাদ নামে আরেক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। তার বাড়ি মান্দার তেঁতুলিয়া গ্রামে।
সম্প্রতি ‘পদ্মা সেতুতে মানুষের মাথা লাগবে’ এমন গুজব ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। নেত্রকোণায় গত বৃহস্পতিবার শিশুর মাথাসহ একজনকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এই ঘটনা চলমান গুজবের আগুনে যেন ঘি ঢেলে দেয়। যদিও পুলিশ বলছে এই ঘটনার সঙ্গে গুজবের কোনো সম্পর্ক নেই।
এরপর দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার একদিনেই অন্তত চারজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ সদরদপ্তর থেকে এ ধরনের ঘটনায় আইন নিজের হাতে তুলে না নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। এভাবে কাউকে সন্দেহ হলে পুলিশের হাতে তুলে দিতে আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। এভাবে হত্যাকাণ্ড ফৌজদারি অপরাধ বলেও সতর্ক করেছে পুলিশ।