নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলার ৪টি আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ও বিএনপিসহ অন্যান্য দলের বর্তমান ও সাবেক সংসদ সদস্যরা এরই মধ্যে প্রচার প্রারণা ও লবিং শুরু করেছেন। নিজের অবস্থান শক্ত করতে গঠন করছেন তৃণমূল পর্যায়ে দলীয় কমিটি, চালিয়ে যাচ্ছেন কর্মী সমাবেশ ও গণসংযোগ। এছাড়া প্রতিটি আসনেই নতুন মুখের কথাও শোনা যাচ্ছে।
ভোলা থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রায় ৩০ জনের সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে যত জনেরই নাম শোনা যাক না কেন এই চার আসনে মূলত বড় দুই দলের ৮ জনের মধ্যেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। আগামী নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ফোরাম, চা আড্ডা ও পথে-ঘাটে আগাম মন্তব্যে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন-
ভোলা-১ আসন: (ভোলা সদর) ভোলা সদর আসনে আগামী নির্বাচনে সরকার দলীয় আওয়ামীলীগের সম্ভব্য প্রার্থী হিসেবে নাম শোনা যাচ্ছে বর্তমান সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদ, আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য এ্যাড. ইউসুফ হোসেন হুমায়ূন, ভোলা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ফজলুল কাদের মজনু মোল্লা, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহবুবুর রহমান হিরণের। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী জোটের শরিক দল বিজেপির চেয়ারম্যান সাবেক এমপি ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব গোলাম নবী আলমগীরের নাম শোনা যাচ্ছেন। এছাড়া এ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন প্রত্যাশী জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি কেফায়েত উল্যাহ নজিব ও জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আজিম গোলদার।
ভোলা-২ আসন: (দৌলতখান-বোরহানউদ্দিন) এ আসনে আগামী নির্বাচনে সরকার দলীয় আওয়ামীলীগের সম্ভব্য প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুল। তিনি ক্ষমতাসীন দলের বাণিজ্য মন্ত্রী ও ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদের বড় ভাইয়ের ছেলে (ভাতিজা)। এছাড়াও সাবেক ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নাজিউর রহমান মঞ্জুর মেঝ ছেলে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুপাতো বোনের ছেলে ড. আশিকুর রহমান শান্ত। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা আবুল কালাম আজাদের নাম শোনা যাচ্ছে। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশি সাবেক এমপি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাফিজ ইব্রাহীম, কেন্দ্রীয় বিএনপির ক্রিড়া বিষয়ক সম্পাদক জাতীয় ফুটবল দলের গোল রক্ষক আমিনুল ইসলাম, জাতীয় শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা রফিকুল ইসলাম মমিন এর নাম শোনা যাচ্ছে। এছাড়া এ আসন থেকে সাবেক জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান হাইকমান্ড ছিদ্দিকুর রহমান মনোনয়ন প্রত্যাশি বলেও গুঞ্জন রয়েছে।
ভোলা-৩ আসন: (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আগামী নির্বাচনে এ আসনে সরকার দলীয় আওয়ামীলীগের সম্ভব্য প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন, ভোলা জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ও সাবেক এমপি মেজর (অবঃ) জসিম উদ্দিন, ভোলা জেলা আওয়ামীলীগের সদস্য ব্যবসায়ী ইঞ্জিনিয়ার মোবাশ্বের আলী স্বপন, সাবেক লালমোহন উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাবেক পানি সম্পদ ও বাণিজ্য মন্ত্রী মেজর (অবঃ) হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বীর বিক্রম, এশিয়া গ্রুপ (বিডি) চেয়ারম্যান ব্যবসায়ী লায়ন এম আর হাওলাদারের (মোসলেহউদ্দিন) নাম শোনা যাচ্ছেন।
এছাড়া এ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন প্রত্যাশি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নুরুন্নবী সুমন এবং জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য জসিম চৌধুরী, জেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক মাওঃ কামাল উদ্দিন, জাতীয় পার্টির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ফজলুল হকের কথাও জানা গেছে।
ভোলা-৪ আসন : (চরফ্যাশন-মনপুরা) এ আসনে সরকার দলীয় আওয়ামীলীগের সম্ভব্য প্রার্থী হিসেবে একক প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য পরিবেশ ও বন উপ-মন্ত্রী আবদুল্যাহ আল ইসলাম জ্যাবক, বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে রয়েছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি নাজিম উদ্দিন আলম, কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, জাতীয় আইনজীবী পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. ছিদ্দিক উল্যাহ মিয়ার নাম শোনা যাচ্ছে।
এছাড়া এ আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন প্রত্যাশি জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান। ভোলার রাজনীতিতে অতীতেও ধর্মকে পুঁজি করে কেউ জনগণের ম্যানডেট নিতে পারে নি। এবারের আসন্ন নির্বাচনেও পারবেন না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। ভোলার রাজনীতি বড় দুই দল নির্ভর হয়ে আছে। স্বাধীনতার পর থেকে বিএনপি বা আওয়ামীলীগ মনোনীত ছাড়া কেউ সংসদ সদস্য হয় নি। এবারের নির্বাচনেও এই বড় দুই দল থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবে বলেও মনে করছেন সাধারণ ভোটাররা। তবে এবারের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ৪টি আসনেই তাদের মনোনীত প্রার্থী দিবেন এমনটাই ভোলা সফরে এসে ঘোষণা দিয়ে গেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ।