দেশজনতা অনলাইন : বিএসটিআই কর্তৃক লাইসেন্স প্রদান করা পাস্তুরিত দুধের নমুনা মহাখালীর আইসিডিডিআরবি, সাভারের ফিড অ্যান্ড ফুড সেফটি ল্যাবরেটরি, বিসিএসআর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এবং ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পরীক্ষা শেষে চারটি ল্যাবের প্রতিবেদন পৃথকভাবে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
দুধে অ্যান্টিবায়োটিক, ডিটারজেন্ট, এসিডিটি, ফরমালিন ও অন্যান্য ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি আছে কিনা তা ল্যাবগুলোতে পরীক্ষা করতে বলেছেন আদালত।
এক রিটের শুনানি নিয়ে রবিবাব (১৪ জুলাই) বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। একইসঙ্গে আগামী ২৩ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারণ রেখেছেন আদালত।
এছাড়া এই রিট মামলায় মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রণালয়কে বিবাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতে বিএসটিআইয়ের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার সরকার এমআর হাসান। অন্যদিকে রিটের পক্ষে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ ও ব্যারিস্টার অনিক আর হক।
এ বিষয়ে ব্যারিস্টার অনিক আর হক বলেন, দুধ পরীক্ষার জন্য বিএসটিআইতে ৯টি প্যারোমিটার রয়েছে। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে যে পরীক্ষা হয়, সেখানকার ল্যাবে ১৯টি প্যারোমিটার আছে। আমি আজ আদালতে বাইরের কয়েকটি দেশের দুধের মান নির্ধারণের উদাহরণ তুলে দেখিয়েছি, তারা দুধ পরীক্ষায় ৩০ ধরনের প্যারোমিটার ব্যবহার করেন। এদিকে দুধের মান পরীক্ষার জন্য বিএসটিআই একটি কমিটি করেছিল। কিন্তু জানুয়ারিতে ওই কমিটি গঠিত হলেও তারা গত ৭ মাসে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। তাই সব বিষয়ে আদালত আমাদের শুনানি নিয়ে পাস্তুরিত দুধ পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।’
প্রসঙ্গত, পাস্তুরিত দুধ নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিস রিসার্চ, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)-এর গবেষণা প্রতিবেদন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাজারে থাকা ৭৫ শতাংশ পাস্তুরিত দুধেই ভেজাল ধরা পড়ছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি। এই প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ। রিট আবেদনের পর গত বছরের ২১ মে বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের নিয়ে কমিটি করে বাজারে থাকা পাস্তুরিত দুধ পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। খাদ্য ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সচিব এবং বিএসটিআইয়ের মহাপরিচালককে দেওয়া এই নির্দেশের পর গত ২৫ জুন বিএসটিআইয়ের আইনজীবী ব্যারিস্টার সরকার এমআর হাসান আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন।