জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা আগামীতে কম দিনে জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসির পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। জেএসসি পরীক্ষা ১০ দিনে, এসএসসি ২০ দিনে এবং এইচএসসি পরীক্ষা ২৮ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে। আগামী পরীক্ষাগুলো থেকেই এ ব্যবস্থা কার্যকর হবে।’
শিক্ষাবোর্ডগুলোর সূত্রে জানা গেছে, জেএসসি পরীক্ষা সম্পন্ন করতে সময় লাগে ১৫ দিন। পাঁচ দিন কমিয়ে এনে এবার থেকে ১০ দিনে তা সম্পন্ন করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এসএসসি পরীক্ষার সম্পন্ন করতে সময় লাগে ২৮ থেকে ৩০ দিন। এই সময় ১০ দিন কমিয়ে এনে ২০ দিনে সম্পন্ন করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করতে সময় লাগে ৪৫ দিন। এই সময় ১৫ দিন কমিয়ে ৩০ দিনে সম্পন্ন করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে ছুটির কারণে বা জরুরি কারণে নির্ধারিত সময় দুই-একদিন সময় বেশি লাগতে পারে।
জানা যায়, গত বছর (২০১৮) জেএসসি পরীক্ষা ১ নভেম্বর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী ২০১৯ সালের জেএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শেষ হরা হবে ১০ নভেম্বরের মধ্যে। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা (তত্ত্বীয়) ২ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে তা সম্পন্ন হয়েছে ২৫ ফেব্রুয়ারি। আগের বছরগুলোতে বেশি সময়ও লেগেছে। এই পরীক্ষার সময় কমিয়ে ২০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে।
এছাড়া গত বছর এইচএসসি পরীক্ষা ১ এপ্রিল শুরু হয়ে শেষ হয় ১১ মে। আগামীতে এ পরীক্ষা এক মাসের মধ্যেই সম্পন্ন করা হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষায় কোনও সময় গ্যাপ না রেখেই আগে থেকেই নেওয়া অব্যাহত রয়েছে। তাই ব্যবহারিক পরীক্ষার সময় কমিয়ে আনার প্রয়োজন হবে না।
শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, পাবলিক পরীক্ষার সময় বিভিন্ন কেন্দ্রের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস বন্ধ থাকে। ১০ থেকে ১৫ দিন সময় কমিয়ে আনার কারণে ওই সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস নেওয়া অব্যাহত রাখা হবে। এতে পরীক্ষার্থী ছাড়া অন্য শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে। পরীক্ষায় গ্যাপ থাকলে শিক্ষার্থীরা অন্যদের প্ররোচণায় প্রশ্ন ফাঁসের অপেক্ষায় থাকে। দ্রুততম সময়ে পরীক্ষা শেষে হলে এসব সমস্যা দেখা দেবে না। এছাড়া অভিভাবকরা কম সময়েই চাপমুক্ত হয়ে যাবেন। এসব কারণে সময় কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জানতে জাইলে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান মু. অধ্যাপক জিয়াউল হক বলেন, ‘পরীক্ষায় যে সময় কমিয়ে আনা হবে, ওই সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্য শিক্ষার্থীরা ক্লাস করার সুযোগ পাবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য একাডেমিক কাজ করার সুযোগ বাড়বে। পরীক্ষার গ্যাপ শিক্ষার্থীদের উপকার করে বলে মনে হয় না। দীর্ঘদিন ধরে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে অভিভাবকরা মানসিক চাপে থাকে। এছাড়া বেশি গ্যাপ থাকলে পরীক্ষা নিয়ে অনৈতিক কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এসব কারণে কম দিনে পরীক্ষা সম্পন্ন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’