নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘তিলে তৈল হয়’ এবং ‘তিলকে তাল করা’ বাক্য দু’টি বাংলা ব্যাকরণের কারক-বিভক্তি ও বাগধারায় বহুল পরিচিত। ক্ষুদ্রাকৃতির তেল বীজ তিল, এখন ব্যাকরণ বইয়ের গণ্ডি পেরিয়ে কৃষকের ভাগ্যের চাকা ঘুরাবার পণ্যে পরিণত হতে পারে। স্বাস্থ্য সম্মত তেল জাতীয় শষ্য তিল কম শ্রম এবং খরচে সব মাটিতে উৎপাদন হওয়ায় কৃষকরা তিল চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
আমন ধান কাটার পর ক্ষেত যখন খালি থাকে তখন তিল চাষ করা যায়। এতে ধানের কোনো ক্ষতি হয়না। তিল চাষে সার ও কীট নাশক লাগেনা বললেই চলে। গরু-ছাগলে তিল খায়না তাই রক্ষণা-বেক্ষনেও কোনো খরচ হয়না। কম শ্রম ও খরচে তিল চাষ করে ব্যাপক উৎপাদন করে সফলতা পেয়েছে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার কৃষকরা। সম্প্রতি মঠবাড়িয়া উপজেলার মিরুখালী গ্রামে কয়েকটি বারি তিল-৩ ক্ষেত পরিদর্শনে গেলে কৃষকরা তিল চাষে তাদের সফলতার কথা জানান।
কৃষক আঃ রাজ্জাক খান(৫০) জানান, ২ বছর ধরে তিনি তিল চাষ করছেন। গত বছর ৫ কাঠা (১৬শতক) জমিতে ৫০ টাকায় আধা কেজি বীজ তিল ক্রয় করে চাষ করে ২ মণ তিল পেয়েছেন। উৎপাদিত তিল দিয়ে তেল বানিয়েছেন আব্দুল রাজ্জাক। এবছর তিনি ৪ কাঠা জমিতে তিল চাষ করেছেন।
একই গ্রামের কৃষক মোঃ মোজাম্মেল হক (৫২) জানান, গত বছর ৫ কাঠা জমিতে চাষ করে দেড় মণ তিল উৎপাদন করে ৬ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এবছর মোজাম্মেল ৯ কাঠা জমিতে তিল চাষ করেছেন। একই গ্রামের মোঃ মামুন খান (৩৫) জানান, এবছর ১৫ কাঠা জমিতে তিল চাষ করতে মাত্র ৬৭০ টাকা খরচ হয়েছে। মিরুখালী ইউনিয়নে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন জানান, কম খরচে উৎপাদন করে বাজারে ভালো দামে বিক্রি করতে পেরে তিল চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়, এবছর উপজেলায় ১ হেক্টর জমিতে তিল চাষ করা হয়েছে। হেক্টরে চাষে ব্যায় হবে সর্বোচ্চ ৪/৫ হাজার টাকা। ১ থেকে দেড় টন তিল উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. শওকত হোসেনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তিল চাষে কৃষকদের আগ্রহ বৃদ্ধির জন্য তিলের ব্যবহার এবং তিল থেকে উৎপাদিত তেল আমাদের স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি করে না এসব বিষয়ে কৃষকদের উদ্ভুদ্ধ করা হচ্ছে।
দৈনিক দেশজনতা/ এমএইচ