নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, অবৈধ অনির্বাচিত সরকারের লোকজন একদিকে লুটপাট করে অর্থনীতি ফোকলা করে দিচ্ছে অন্যদিকে অভাবের তাড়নায় হতদরিদ্র মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। সারাদেশে দরিদ্র মানুষের করুণ দশা এখন। আর সরকার বলছে দেশ নাকি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১২ টার দিকে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রিজভী বলেন, অভাবের তাড়নায় যশোরের শার্শা উপজেলার চালিতাবাড়িয়া দীঘা গ্রামে রবিবার (২৬ মে) রাতে দুই শিশু সন্তানকে বিষ খাইয়ে হত্যার পর এক মা আত্মহত্যা করেছেন। তিন দিন আগে শনিবার অভাবের কাছে হার মেনে নরসিংদীতে দুই সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন এক বাবা। অভাবে জর্জরিত হয়ে এক সপ্তাহে ৯ জনের আত্মহত্যা বা অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। আর পত্রিকায় খবর বেরিয়েছে সরকারী দলের নেতা-কর্মীসহ অন্তত: ৬ লাখ লোক বিদেশে যাচ্ছে ঈদ করতে। যেখানে আগে ঈদ করতে মানুষ যেতো গ্রামের বাড়ীতে।
তিনি বলেন, দেশে সম্পদ বন্টনের এই অসাম্য এবং দুর্নীতি করার অবারিত ব্যবস্থার জন্য দেশে এক লুটেরা গোষ্ঠীর জন্ম হয়েছে। আর অন্যদিকে মানুষ অভাবের কারণে করছে আত্মহত্যা, ধানের দাম না পেয়ে কৃষকরা ক্ষেতে আগুণ দিচ্ছে বা মহাসড়কে ধান ঢেলে দিচ্ছে! গণবিরোধী সরকারের সম্পূর্ণ ব্যর্থতায় এক ভয়াবহ অবস্থা চলছে দেশে।
রিজভী বলেন, বগুড়ার দুপচাচিয়া উপজেলায় দেবখন্ড গ্রামে অল্প জমির মালিক মরিয়ম বেগম তার ক্ষেতের ধান হাটে বিক্রি করে শ্রমিকদের পারিশ্রমিক দিতে ব্যর্থ হয়ে নিজের টেলিভিশন বিক্রি করে মুজুরি পরিশোধ করে। ধানের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে ধান পুড়িয়ে দেয়ার একই রকম দৃশ্য সারাদেশেই সংঘটিত হচ্ছে। চারদিকে দেখা দিয়েছে নৈরাজ্য, অস্বস্তি, ক্ষুধা ও হাহাকার। ধানের ন্যায্য মূল্য নিয়ে সরকার উদাসীন, এ বিষয়ে কোন অগ্রগতি নেই, বরং তা বৃত্তপথে ঘোরপাক খাচ্ছে। প্রতিদিনই কৃষকের মনে অন্ধকার ঘন থেকে ঘনতর হচ্ছে। সরকারী নীতির কারণে ক্ষুধা, হাহাকার, অনাহার ও অর্ধাহারে মানুষের জীবন বিপন্ন ও কৃষককে ধ্বংস করতে কৃষিক্ষেত্রে এই অরাজকতার জন্য দায়ী কৃষি মন্ত্রী এবং খাদ্যমন্ত্রীর আমরা এই মূহূর্তে পদত্যাগ দাবি করছি। কোন সভ্য সরকার হলে ইতিমধ্যে কৃষি মন্ত্রী পদত্যাগ করতেন। সরকারকে বলবো, জোর জবরদস্তি করে আর ক্ষমতায় থেকে দেশের জনগণের প্রতি জুলুম করবেন না। অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। জনগণকে বাঁচতে দিন।