নয়া প্রধানমন্ত্রী কে, এখন সেই নিয়ে সরগরম কনজ়ারভেটিভ পার্টির অন্দরমহল। হাওয়ায় ভাসছে অন্তত ১৪ জনের নাম। ভারতে কংগ্রেসের চরম ব্যর্থতার পরেও সভাপতি পদে বহাল থাকছেন রাহুল গান্ধী। পদত্যাগ করতে হচ্ছে না তাকে। কিন্তু ব্রিটেনের রাজনৈতিক দলগুলি এ বিষয়ে ‘নির্দয়’। কাজ করতে না পারলে জায়গা ছেড়ে দিতে হবে।
২০১৬ সালে ক্ষমতায় এসেছিলেন টেরিজা মে। সেই সময়ে ব্রেক্সিট নিয়ে গণভোটের ফল প্রকাশের পরে ইস্তফা দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। দায়িত্ব নিয়েই টেরিজা বলেছিলেন, নির্দিষ্ট দিনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছেড়ে বেরিয়ে যাবে ব্রিটেন। কিন্তু ইইউয়ের সঙ্গে টানা তিন বছরের টানাপড়েনে টেরিজার মন্ত্রিসভা থেকে একের পর এক মন্ত্রী ইস্তফা দেন। টেরিজার আনা ব্রেক্সিট বিলের খসড়া বারবার খারিজ হয়ে যায় পার্লামেন্টে। আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে সীমান্ত চুক্তিসহ বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে কনজারভেটিভ পার্টির কট্টর ব্রেক্সিটপন্থীদের খুশি করতে পারেননি টেরিজা। অবশেষে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন— ১০,ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে দাঁড়িয়ে কান্নাভেজা গলায় টেরিজা জানিয়েছেন, কনজারভেটিভ দলের নেত্রী তথা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন তিনি।
তার উত্তরসূরি হিসেবে সবার আগে শোনা যাচ্ছে প্রাক্তন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসনের নাম। বরিস ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী পদের দৌড়ে তিনি রয়েছেন। স্বপ্ন দেখছেন হাউস অব কমন্সে একদা কনআরভেটিভ পার্টির নেত্রী অ্যান্ড্রিয়া ল্যাডসামও। গত বুধবার যিনি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। এরা ছাড়াও লড়াইয়ে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট। ২০১৬ সালে ভীষণভাবে ব্রেক্সিট-বিরোধী ছিলেন তিনি। আচমকাই ভোল বদলে ফেলেন। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ‘সোভিয়েত ইউনিয়ন’ এর সঙ্গে তুলনা করে গালমন্দ করতে শুরু করেন।
এছাড়া স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী রোরি স্টুয়ার্ট, এমপি এস্টার ম্যাকভে জানিয়েছেন, তারা লড়াইয়ে থাকছেন। তবে আশ্চর্যজনক ভাবেই চুপ করে রয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ, পরিবেশমন্ত্রী মাইকেল গোভ, এমপি স্যার গ্রাহাম ব্র্যাডি। নিজেরা এখনও কিছু জানাননি। তবে একরকম নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, প্রধানমন্ত্রী পদে দৌড়ে থাকবেন এরাও। কারণ টেরিজার পদত্যাগের পিছনে এদেরই মুখ্য ভূমিকা রয়েছে। যেই ক্ষমতায় আসুন না কেন, ‘ব্রেক্সিট-বোঝা’ কাঁধে তুলে নিতে হবে তাকে।
এসব নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই গত ৬মে থেকে টানা দাম পড়েছে পাউন্ডের। বিপদঘণ্টা বাজিয়ে দিয়েছে ব্রিটিশ বাণিজ্যমহল। কী করবেন নতুন প্রধানমন্ত্রী? সম্ভাব্যদের মতই বা কী? সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে বরিস জনসন বলেছেন, ‘চুক্তি হোক বা না হোক, ৩১ অক্টোবর ইইউ থেকে বেরোচ্ছেই ব্রিটেন। কোনো চুক্তিতে না-গেলেই ভাল চুক্তি আদায় করে নেওয়া যাবে। কাজ করিয়ে নিতে হলে অবজ্ঞাই শ্রেষ্ঠ উপায়।’