দেশজনতা অনলাইন : আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে রাজধানী ঢাকায় বায়ুদূষণ রোধে গৃহীত পদক্ষেপগুলো যথাযথভাবে উঠে না আসায় ফের অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত দুই সিটি করপোরেশনের (ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার উদ্দেশে বলেছেন, আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, আদালতের আদেশ আপনাদের মানতে হবে। নগরীকে বাসযোগ্য করতে যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার তাই করুন।
আগামী ২৬ জুনের মধ্যে এ বিষয়ে পুনরায় অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান দুই নির্বাহীকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান এবং বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
আজ আদালতের তলবে বায়ুদূষণ রোধে পদক্ষেপের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে হাজির হয়েছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই এবং ডাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুল রহমান। তবে তাদের ব্যাখ্যায় আদালত সন্তুষ্ট হতে পারেননি।
এ বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার বলেন, ‘ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা পরিমাপ এবং দূষণ রোধে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তার ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। এর ধারাবাহিকতায় আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছিল। কিন্তু বায়ুদূষণ রোধের উপযুক্ত জবাব ওই প্রতিবেদনে না উঠে আসায় সন্তুষ্ট হতে পারেননি আদালত। তাই গত ৫ মে ঢাকার দুই সিটির প্রধান নির্বাহীকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। আজ তারা আদালতে হাজির হয়ে প্রতিবেদন দাখিল করে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। কিন্তু আদালত সে ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হতে না পেরে তাদেরকে পুনরায় অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে সময় দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিট আবেদন দায়ের করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
সে রিটের শুনানি নিয়ে গত ২৮ জানুয়ারি রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণ বন্ধে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুল জারির পাশাপাশি বায়ুদূষণ রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশও দেন। ১৫ দিনের মধ্যে রাজধানীর যেসব এলাকায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চলছে যেসব এলাকা ঘেরাও করে পরের দুই সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে আদালতকে অবহিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের নির্বাহী কর্মকর্তাদেরকে উক্ত আদেশ পালন করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। যার ধারাবাহিকতায় মামলাটি পুনরায় শুনানিকালে আদালত রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণ রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং এ বিষয়ে আদেশ দেন।
এরপর গত ১৩ মার্চ ঢাকার বায়ুদূষণের মাত্রা পরিমাপ করে দূষণ রোধে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা প্রতিবেদন আকারে দাখিল করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছিলেন।