২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | বিকাল ৩:৪৮

অনায়াস জয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

খেলা ডেস্ক

পরশু ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আজ বাংলাদেশও করল। পার্থক্যটা হচ্ছে বাংলাদেশ ফাইনালে উঠল কোনো ম্যাচ না হেরে। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ উঠেছে শুধু আইরিশদের হারিয়ে, বাংলাদেশের কাছে হেরেছে টানা দুই ম্যাচ।

ডাবলিনে আজ অবশ্য ক্যারিবীয়রা একটু বিপাকেই ফেলেছিল। সেটি ভালোভাবে সামলে বাংলাদেশ পেয়েছে ৫ উইকেটের জয়। কখনোই মনে হয়নি, বাংলাদেশের হাত থেকে ম্যাচটা ফসকে যেত পারে।

এই ত্রিদেশীয় সিরিজে যে দৃশ্যটা নিয়মিত দেখা গেছে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারাচ্ছে আয়ারল্যান্ডকে। আর বাংলাদেশ হারাচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। বাংলাদেশের কাছে আয়ারল্যান্ডকে হারতে হয়নি বৃষ্টির সৌজন্যে। আগামী পরশু প্রকৃতির বাধা না থাকলে মাশরাফিরা নিশ্চয়ই শিকারের তালিকায় আইরিশদেরও বাদ দেবে না!

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে গত ম্যাচের তুলনায় আজ বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল আরেকটু সহজ। ২৪৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৫৪ রান যোগ করে তামিম ইকবাল-সৌম্য সরকার বার্তা দিয়েছিলেন, আজও বড় ব্যবধানে তাঁরা হারাতে চান উইন্ডিজকে। কিন্তু অ্যাশলে নার্স এলোমেলো করে দিলেন সে ভাবনায়। ৫৩ রানের মধ্যে বাংলাদেশের যে ৩ উইকেট পড়ল, প্রতিটিই তাঁর। নার্সের বলে তামিম ২১ রানে আউট হওয়ার পর সৌম্য সরকার-সাকিব আল হাসান এগোচ্ছিলেন ভালোভাবেই। কিন্তু ২১তম ওভারে নার্সের পরপর দুই ধাক্কায় বাংলাদেশ একটু চাপেই পড়ে গিয়েছিল। ২০ ওভারে ১ উইকেটে ১০১ রান তোলা বাংলাদেশের স্কোর হুট করে হয়ে যায় ৩ উইকেটে ১০৭। ক্যারিবীয় ফিল্ডারদের হাত পিচ্ছিল না হয়ে উঠলে বিপদ আরও বাড়তে পারত।

নার্সের আগের ওভারেই অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছিলেন সৌম্য। তার আগে অবশ্য টানা দ্বিতীয়বারের মতো পেয়েছেন ফিফটি। আয়ারল্যান্ড এমনিতেই সৌম্যর জন্য পয়মন্ত দেশ। ২০১৭ সালে এই আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে টানা দুটি ফিফটি পেয়েছিলেন। গত বছর ‘এ’ দলের হয়ে সফরটাও তাঁর কেটেছে দুর্দান্ত। এবারও সৌম্য আছেন দারুণ ছন্দে। বাঁহাতি ওপেনার আরও এগোতে পারতেন সামনে। গত ম্যাচে সেঞ্চুরি ফেলে আসায় বলেছিলেন, সামনে সুযোগ পেলে চেষ্টা করবেন তিন অঙ্ক ছুঁতে। পারলেন না সৌম্য। আজও সুন্দর ইনিংসটার পূর্ণতা দিতে পারেননি, ফিরেছেন ৬৭ বলে ৫৪ রান করে। সেটির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, নার্সেরই বলে খানিক আগে শর্ট কাভারে চেজের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ২৯ রান করা সাকিব। নার্সের এক ওভারে সৌম্য-সাকিব ফিরে যাওয়ায় একটু চাপে পড়েছিল বাংলাদেশ।

নার্সের ধাক্কার পর উপশমের উপায় খুঁজছেন মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুন। এর মধ্যে স্নায়ুচাপেই কিনা রানআউট হতে বসেছিলেন মিঠুন। নার্সের বাজে থ্রোয়ে অল্পের জন্য রক্ষা। মুশফিক-মিঠুনের চতুর্থ উইকেট জুটি ৮৩ রান যোগ করে ধাক্কাটা ভালোভাবেই সামলিয়েছে। হোল্ডারের বলে বোল্ড হয়ে মিঠুন ফিরেছেন হাফ সেঞ্চুরি থেকে ৭ রান দূরে থেকে। মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর সুযোগ ছিল পঞ্চম উইকেট দারুণভাবে সমাপ্তিরেখা টানা। কিন্তু উচ্চাভিলাষী শটে ম্যাচ শেষ করার পুরোনো রোগে পেয়ে বসে মুশফিককে। রোচকে অহেতুক চালাতে গিয়ে ব্রাভোর ক্যাচ হয়ে ফিরেছেন দলীয় সর্বোচ্চ ৬৩ রান করে। মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত ছিলেন ৩০ রান করে।

গত দেড় বছরে যে কটি ত্রিদেশীয় সিরিজ কিংবা টুর্নামেন্ট খেলেছে বাংলাদেশ, প্রতিটির ফাইনালে উঠেছে। কিন্তু জেতা হয়নি একটিও। ২০১৮ সালের ত্রিদেশীয় সিরিজ, নিদাহাস ট্রফি কিংবা গত এশিয়া কাপ—প্রতিটি ফাইনাল বেদনার গল্প হয়ে আছে। এবার আয়ারল্যান্ডে হবে ভিন্ন গল্প? আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাশরাফিরা জিততে পারবেন প্রথমবারের মতো কোনো ফাইনাল?

প্রকাশ :মে ১৪, ২০১৯ ১০:২৮ পূর্বাহ্ণ