খেলা ডেস্ক
৮১ মিনিটে আলেক্সান্ডার আরনল্ডের ক্রসে ডাইভিং হেডে গোল করলেন সাদিও মানে। ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোলের পর স্বভাবজাত উদ্যাপন করলেন মানে। ডাগ আউটের সামনে দাঁড়িয়ে বাতাসে মুষ্টি ছুড়লেন ইয়ুর্গেন ক্লপ। কিন্তু উদ্যাপনটা ওখানেই থাকল, মাত্রা ছাড়াল না।
মাত্রা না ছাড়ার কারণটা ততক্ষণে সবার জানা। প্রিমিয়ার লিগের নিষ্পত্তি এবার শেষ দিনে হয়েছে। ১ পয়েন্টে এগিয়ে থাকা ম্যানচেস্টার সিটি ও লিভারপুল একই সময়ে মাঠে নেমেছে। নিজেদের মাঠে লিভারপুল যখন ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল, ততক্ষণে সবার জানা হয়ে গেছে ব্রাইটনের মাঠ এরই মাঝে ৪-১ ব্যবধানে এগিয়ে সিটি। সহজ কথাটা বুঝে নিতে কারও কষ্ট হয়নি, ওই অবস্থায় এবারও চ্যাম্পিয়ন হতে যাচ্ছে সিটি।
দশ মিনিট পরে সেটাই সত্য হলো। বাকি ১০ মিনিটে ব্রাইটন অবিশ্বাস্য কিছু করে দেখাতে পারেনি। তিন গোল করে ব্রাইটন ম্যাচে সমতা আনতে পারলেই শুধু আজ লিভারপুলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু তেমন কিছু করারা কোনো সম্ভাবনা জাগেনি। ৯৭ পয়েন্ট পেয়েও দ্বিতীয় হতে হলো লিভারপুলকে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে কখনো কোনো দল এত পয়েন্ট পেয়ে শিরোপা ছাড়া মৌসুম শেষ করেনি। মাঝে মাঝে কিছু কিছু রেকর্ড যন্ত্রণা বাড়ায় শুধু!
এর আগেও লিগের একদম শেষ দিনে লিগ জিতেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। ২০১১-১২ মৌসুমের শেষ ম্যাচের আগে সমান পয়েন্ট ছিল সিটি ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। ৩৭ ম্যাচ শেষে ৮৬ পয়েন্ট ছিল দুই দলেরই। শেষ দিনে ঘরের মাঠে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড নেমেছিল স্যান্ডারল্যান্ডের বিপক্ষে। ম্যানচেস্টার সিটি নেমেছিল কুইন্স পার্ক রেঞ্জারসের বিপক্ষে। দুই দলের পয়েন্ট সমান থাকলেও গোল ব্যবধানে এগিয়ে ছিল সিটি। ফলে দুই দল ম্যাচ জিতলেও সিটির ঘরে শিরোপা যাওয়ার কথা। ওয়েইন রুনির গোলে স্যান্ডারল্যান্ডকে হারিয়ে নিজেদের কাজটা করে রাখে ইউনাইটেড।
ইউনাইটেডের ম্যাচে কোনো নাটক না হলেও, শিরোপাদৌড়ের সকল নাটক সেদিন জমেছিল সিটির মাঠে। ম্যাচের ৮৯ মিনিট পর্যন্ত ২-১ গোলে পিছিয়ে থাকা সিটি কিউপিআরের কাছে অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে যাচ্ছে, না হারলেও অন্তত ড্র করছে, এটা ভেবে শিরোপাজয়ের উৎসবও শুরু করে দেওয়ার কথা ভাবছিল ইউনাইটেড। কিন্তু অতিরিক্ত সময়ে সিটির দুই স্ট্রাইকার এডিন জেকো ও সার্জিও আগুয়েরো দুই গোল করে সিটিকে শিরোপা এনে দেন!
এবার সিটি অত নাটকীয়তার মধ্যে যায়নি। ১৭ মিনিটে মানের গোলের পর কিছুক্ষণের জন্য এগিয়ে গিয়েছিল লিভারপুল। ২৭ মিনিটে ব্রাইটন এক গোল করার পর তো স্বপ্নই দেখতে শুরু করেছিল লিভারপুল। কিন্তু পরের মিনিটেই সমতা ফিরিয়েছেন সার্জিও আগুয়েরো। আর দলকে শিরোপার পথে আনেন আয়মেরিক লাপোর্তে(৩৮ মিনিট)। ৬৩ ও ৭২ মিনিটে রিয়াদ মাহরেজ ও ইলকায় গুন্দোগান আরও দুই গোল করে সব নাটকীয়তা ঝেঁটিয়ে বিদায় করেছেন।