প্রক্রিয়া শেষে রবিবার অথবা সোমবার মরহুমের মরদেহ দেশে আনা হবে বলে জানিয়েছেন মরহুমের বড় মেয়ে মুসাররাত হুমায়রা অঙ্গনা।
মাহফুজ উল্লাহর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গত ২ এপ্রিল সকালে ধানমন্ডির গ্রিন রোডে মাহফুজ উল্লাহ তার নিজ বাসায় হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়। পরে শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মাহফুজ উল্লাহকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে নেয়া হয়।
গত ১০ এপ্রিল মাহফুজ উল্লাহকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে ব্যাংকক নেয়া। প্রখ্যাত এই সাংবাদিক হৃদরোগ, কিডনি ও উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন।
মাহফুজ উল্লাহ ১৯৫০ সালের ১০ মার্চ নোয়াখালীতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যা ও সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী হিসেবে ঊনসত্তরের ১১ দফা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ছাত্র রাজনীতির কারণে আইয়ুব খানের সামরিক শাসনামলে তাকে ঢাকা কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়। তিনি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতিও ছিলেন। তবে পরবর্তী সময়ে বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিক হিসেবে পরিচিতি পান।
ছাত্রাবস্থাতেই মাহফুজ উল্লাহ সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। দেশের একসময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাপ্তাহিক বিচিত্রার জন্মলগ্ন থেকেই তিনি জড়িত ছিলেন। মাঝে চীন গণপ্রজাতন্ত্রে বিশেষজ্ঞ হিসেবে, কোলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপদূতাবাসে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ এবং সাংবাদিকতা বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে কাজ করেন। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় বাংলা ও ইংরেজি দৈনিকে কাজ করেছেন তিনি। রেডিও ও টেলিভিশনে অনুষ্ঠান উপস্থাপনাও করেছেন।
মাহফুজ উল্লাহ আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত একজন সক্রিয় পরিবেশবিদ এবং বাংলাদেশে তিনিই প্রথম পরিবেশ সাংবাদিকতা শুরু করেন।
বিভিন্ন বিষয়ে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় লেখা তার বইয়ের সংখ্যা ৫০-এর অধিক এবং এসবের অধিকাংশই পৃথিবীর বিভিন্ন নেতৃস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে সংগৃহীত আছে। গত বছর বিএনপি চেয়ারপারসনের ওপর তার লেখা ‘হার লাইফ হার স্টোরি’ বেশ সাড়া ফেলে।’