নিজস্ব প্রতিবেদক
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার পর দলীয় সিদ্ধান্ত না মেনে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়া মোকাব্বির খান গণফোরামের কাউন্সিলে উপস্থিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নেতাকর্মীরা।
গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন ‘নাটক করেছেন’ অভিযোগ করে দলটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক বলেছেন, ‘এই দলই করবো না’। অন্যদিকে দলটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিলেই যাননি।
শুক্রবার রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। সংসদ সদস্য হিসেবে মোকাব্বির খান শপথ নেওয়ায় তাকে বহিষ্কারের বিয়ষটিও ছিলো কাউন্সিলের এজেন্ডায়। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে মোকাব্বির খান উপস্থিত হন কাউন্সিল মঞ্চে। বসেন দলীয় সভাপতি ড. কামাল হোসেনের পাশে। এতে মঞ্চ ও সামনে বসা কাউন্সিলররা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
কাউন্সিল শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই মঞ্চ থেকে নেমে বেরিয়ে যান প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক। পরে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ড. কামাল হোসেন যে দ্বৈত-নীতিতে দল চালাচ্ছেন সেভাবে রাজনীতি চলে না। মোকাব্বির প্রশ্নে তিনি (ড. কামাল) কোনো পরিষ্কার বক্তব্য দিচ্ছেন না। ড. কামালের সাহস পেয়েই সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ও মোকাব্বির খান সংসদে গিয়েছেন। শপথ নিয়ে কামাল হোসেনের বাসায় বিকেলে ফুল ও মিষ্টি নিয়ে যান মোকাব্বির খান। তিনি তো ফুল মিষ্টি ফিরিয়ে দেননি।
পথিক বলেন, শপথ নেওয়ার কারণে মোকাব্বির খানকে তার চেম্বার থেকে বের করে দিয়ে নাটক করেছেন ড. কামাল হোসেন। তিনিই আবার তাকে সংসদে যেতে বলেছেন। একইভাবে দলীয় কাউন্সিলে মোকাব্বির খানকে আসার দাওয়াত দিয়েছেন তিনিই।
‘দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত ছিল আজকের কাউন্সিলে মোকাব্বির খানকে বহিষ্কার করা হবে। কিন্তু তাকে মঞ্চে বসতে দিয়ে ড. কামাল হোসেন ঠিক করেননি।’
গণফোরাম নেতা পথিক আরও বলেন, কাউন্সিল অধিবেশনে যারা বক্তব্য দিয়েছেন তারা সবাই মোকাব্বিরের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। আর দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু গত ২০ এপ্রিলের সভায় রাগ করে চলে গেছেন। তিনি কাউন্সিলেই যোগ দেননি।
দলের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক খান সিদ্দিকুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, কাউন্সিল অধিবেশনে মোকাব্বির খানকে কে দাওয়াত দিয়েছে সেটা আমার জানা নেই। তবে আমরা গত ২০ এপ্রিল দলীয় বৈঠকের পর মোকাব্বির খানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছি। তিনি এখন পর্যন্ত নোটিশের কোনো জবাব দেননি। তাকে মঞ্চে দেখে সবাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন। মঞ্চে তার বিরুদ্ধে তার সামনে যে ধরনের বক্তব্য এসেছে লজ্জা থাকলে মাটি খুঁড়ে তখনই নিচে চলে যাওয়া উচিত ছিল।
জানা গেছে, দলের সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের ক্ষমতা দেওয়ার মাধ্যমে বিশেষ এই কাউন্সিল শেষ হয়েছে।
গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু গণমাধ্যমকে বলেন, আমি নিজেই বিব্রতবোধ করছি। মোকাব্বিরের আচরণে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া ছাড়া আর কিছু বলার নেই। ড. কামাল হোসেন নিজে কেন বিষয়টা বুঝতে পারছেন না সেটাই আমার বোধগম্য নয়।
তিনি বলেন, মোকাব্বিরের শপথ নেওয়ার পক্ষে দলের কেউ নেই। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।