আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১০ জনে।
মঙ্গলবার কলম্বো পুলিশের মুখপাত্র রুয়ান গুনাসেকারার বরাত দিয়ে ডেইলি মিরর এ তথ্য জানিয়েছে।
রোববারের ওই হামলায় আহত হয়েছে প্রায় পাঁচশ। দেশটিতে আজ জাতীয় শোক দিবেস পালন করা হচ্ছে। আর মধ্যরাত থেকে দেশব্যাপি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে শ্রীলঙ্কার সরকার।
শ্রীলঙ্কার পর্যটনবিষয়ক মন্ত্রী জানিয়েছেন, সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৩৯ জন বিদেশি নাগরিক রয়েছেন। তাছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন আরও ২৮ জন।
এদিকে গতকালও শ্রীলঙ্কায় হামলার চেষ্টা হয়েছে। রাজধানী কলম্বোয় বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বিস্ফোরক ভর্তি প্যাকেট পাওয়ার পর তা নিষ্ক্রিয় করে দেয় শ্রীলঙ্কার বিমানবাহিনীর সদস্যরা।
একইদিন বিকেলে কলম্বোর কোচচিকাদের সেইন্ট অ্যান্থনি চার্চের বাইরে জামপেত্তাহ সড়কে একটি গাড়িতে বিস্ফোরক পাওয়া যায়। এরপর স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের বোমা নিষ্ক্রিয় ইউনিটের সদস্যরা গাড়িতে রেখেই বোমাটির নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ ঘটান। এর আগে রোববার এই চার্চেই হামলা হয়েছিল।
এছাড়া দেশটির ম্যানার সিটির একটি বাগান থেকে ড্রামভর্তি বিস্ফোরক উদ্ধার করার পর সেগুলো ধ্বংস করে দেওয়া হয়।
সিরিজ বোমা হামলার পেছনে আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক রয়েছে বলে দাবি করেছেন সে দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার মুখপাত্র রাজিথা সেনারত্নে। তিনি বলেন, ‘হামলার ঘটনায় ন্যাশনাল তাওহিদ জামাত (এনটিজে) নামের একটি ইসলামী চরমপন্থী দল জড়িত। তবে আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের সহায়তা ছাড়া এ হামলা সফল হতো না।’
এদিকে ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, শীলঙ্কার এই হামলার ঘটনার তদন্তে সহায়তা করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য সে দেশের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাকে (এফবিআই) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় চার মার্কিন নাগরিক নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
প্রসঙ্গত, রোববার ইস্টার সানডে উদযাপনের সময় শ্রীলঙ্কায় দুই দফায় তিন গির্জা ও চারটি বিলাসবহুল হোটেলসহ আট জায়গায় বোমা হামলা হয়।
সকালে প্রথমে হামলার শিকার হয়েছে ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের তিনটি বড় গির্জা সেইন্ট অ্যান্থনি চার্চ, সেইন্ট সেবাস্টিয়ান চার্চ ও জিয়ন চার্চ। ইস্টার সানডের প্রার্থনায় এসব চার্চে সমবেত হয়েছিলেন হাজারো মানুষ।
এছাড়া হামলা হয় কলম্বোর পাঁচ তারকা হোটেল শাংরি লা, কিংসবুরি ও সিনামন গ্র্যান্ড জোটেলে। এসব হোটেলে অনেক বিদেশি পর্যটক ছিলেন।
হামলার ঘটনায় শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি অভিযান চলছে। এ পর্যন্ত ৪০ জনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।