উখিয়া প্রতিনিধি :
উখিয়া দারোগা বাজারে ড্রেন দখল করে যত্রতত্র দোকান পাট নির্মাণ করায় নালা, নর্দমা সড়কে পরিত্যক্ত বর্জ্যর দুর্গন্ধে ক্রেতা, বিক্রেতা সাধারণের স্বাস্থ্যহানীর আশংকা দেখা দিয়েছে উখিয়ার ব্যস্ততম হাট বাজার গুলোতে। উপজেলা প্রশাসনের হাতের কাছের বাজারটিতেও একই অবস্থা। উপ-ইজারাদারের নিয়ন্ত্রণাধীন এসব হাট-বাজারগুলোতে বিক্রেতা সাধারণকে মেনে নিতে হচ্ছে মগের মুল্লুকের আইন। প্রতিবাদ করার জো-নেই। উপ-ইজারাদারের নিয়ন্ত্রণাধীন এসব হাট-বাজারগুলোতে ক্রেতা, বিক্রেতা সাধারণকে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে কেনা-কাটা করতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উখিয়ায় ছোট বড় ৮টি বাজার প্রতি অর্থ বছরে প্রকাশ্য নিলামে ইজারা দিয়ে উপজেলা প্রশাসন কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করলেও সরকারী নীতিমালা উপেক্ষিত হচ্ছে চরমভাবে। উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত এককালের ঐতিহ্যবাহী উখিয়া সদর দারোগাবাজারে একটি নির্ধারিত স্থান থাকলেও অসাধু ইজারাদার সিন্ডিকেট প্রধান সড়কের উপর নির্বিঘ্ন টোল আদায় করা হচ্ছে। ফলে সড়কে ভাসমান দোকান পাটে ভরপুর হয়ে ফুটপাত বেদখল হওয়ার কারণে পথচারী চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়ে এসব ভাসমান দোকান পাট উচ্ছেদ করলেও তা বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। প্রভাবশালী দাপুটে ইজারাদারের নগ্ন হস্তক্ষেপে বহাল তবিয়তে চলছে সড়কের উপর হাটবাজার। ফলে নিত্য যানজট স্কুল, কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসা-যাওয়া করতে ঝুঁকি নিতে হচ্ছে।
বাজারের ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম, প্রবীন ব্যবসায়ী পরিমল সেন জানান, বাজারের ড্রেনের ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ার কারণে নালা, নর্দমাগুলোতে দূষিত পানির গন্ধে অপ্রতিকুল পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। বাজারের নিয়মিত ক্রেতা মহিউদ্দিন, আব্দুল মান্নান, মাষ্টার শামশুল আলম সহ বেশ কয়েকজন অভিযোগ করে জানান, বাজার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ইজারাদারের দায়-দায়িত্ব থাকলেও এখানে তা মানা হচ্ছে না। গত সোমবার ২৮ মে ঘুর্ণিঝড় মোরায় ক্ষতিগ্রস্থ উখিয়া বাজার তছনছ হয়ে গেলেও এ পর্যন্ত পরিষ্কারের ছোয়া লাগেনি। বাজারে বর্জ্যরে স্তুপ নালা নর্দমার দূষিত পানির গন্ধে ক্রেতা, বিক্রেতাদের জীবন নাভিশ্বাসে উঠেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মাছ, মাংসের বাজার শেডের মধ্যখান দিয়ে স্থানীয়রা কাঁচা ড্রেন সৃষ্টি করে তাদের ব্যবহৃত পানি, মলমূত্র ওই ড্রেন দিয়ে প্রবাহিত করছে। ফলে মাছ, মাংসের বাজারটি অস্বাস্থ্যকর স্থানে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মাছ ব্যবসায়ী ফরিদ আহমদ ও মাংস ব্যবসায়ী মুসলিম মিয়া জানান, মাছ মাংস ক্রয় করতে ইচ্ছুক ক্রেতা সাধারণকে ময়লা ও দূষিত পানি পেরিয়ে আসা-যাওয়া করতে হচ্ছে। এখানে এসব ক্রেতা আসছে তারাই নিতান্তই অপরাগ পক্ষে আসছে। বাজারের উপ-ইজারাদার ভুলো সওদাগর জানান, মাছ মাংসের বাজারের মধ্যখানে অপরিকল্পিত কাঁচা ড্রেন অপসারণের ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বেশ কয়েকবার অবহিত করা হয়েছে। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও বাজারের বর্জ্য অপসারণের ব্যাপারে বাজার ইজারাদার তৌহিদুল আলমের নিকট জানতে চাওয়া হলে তিনি যত দ্রুত সম্ভব বর্জ্য অপসারণের আশ্বস্থ করলেও গত ৮ দিনেও বাজারটি পরিষ্কার করা হয়নি বলে প্রত্যক্ষদর্শী ক্রেতা, বিক্রেতা সাধারণের অভিযোগ।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন জানান, হাট-বাজার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ইজারাদারের দায়িত্ব ও কর্তব্য। যথাসময়ে বাজার পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন করা না হলে ওই ইজারাদারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে স্থানীয় ক্রেতারা জানান, বাজারের নালাগুলো একমাসে পরিস্কার করতে দেখা যায়নি।
দৈনিক দেশজনতা/এন আর