খেলা ডেস্ক
নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ হতে বাকি আর দুই মিনিট। লুক শ’র ডিফেন্সচেরা পাস বক্সের ভেতর দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে আনলেন মার্কাস র্যাশফোর্ড। পাশে থাকা দুই ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে ডান পায়ের দারুণ এক শটে বল জালে জড়ালেন। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড শিবিরে তখন ক্ষীণ আশা, আবার কি প্যারিসের রূপকথার মতো কিছু হবে? নাহ, তেমন কিছু আর করার সময় পায়নি ওলে গানার সোলশারের দল। এফ এ কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উলভারহ্যাম্পটনের কাছে ২-১ গোলে হেরেই বিদায় নিয়েছে তাঁরা। ইউনাইটেড বিদায় নিলেও সার্জিও আগুয়েরোর শেষ মুহূর্তের গোলে সোয়ানসি সিটিকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়ে সেমিতে উঠেছে ম্যানচেস্টার সিটি।
মলিনেক্স স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধে গোল করতে পারেনি কোন দলই। ১৩ মিনিটে গোলের সুযোগ এসেছিল র্যাশফোর্ডের সামনে। বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া র্যাশফোর্ডের শট ঠেকিয়ে দেন রুডি। ২৮ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত উলভসও, রুবেন নেভেসকে হতাশ করেন রোমেরো। বিরতির দুই মিনিট আগে আবার ইউনাইটেডের রক্ষাকর্তা রোমেরো, বাঁচিয়ে দেন ডিয়োগো জোতার শট।
দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণের ধার বাড়ায় উলভস। একের পর এক আক্রমণে ইউনাইটেড রক্ষণকে দম ফেলবার সুযোগ দেয়নি তাঁরা। ৫৮ মিনিটে জোয়া মৌতিনহোর বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন রোমেরো। ৭০ মিনিটে অবশেষে পরাস্ত হন রোমেরো। ডান পায়ের জোরালো এক শটে উলভসকে এগিয়ে দেন রাউল হিমেনেজ। ছয় মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন জোতা। দারুণ এক পাল্টা আক্রমণ থেকে পাওয়া বলে গোল করতে ভুল করেননি তিনি।
দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে ইউনাইটেড ছিল মরিয়া। তবে কিছুতেই গোলের দেখা পাচ্ছিলেন না র্যাশফোর্ডরা। শেষ পর্যন্ত সান্ত্বনাসূচক গোলটি আসে ৯৫ মিনিটে। লুক শ’য়ের দারুণ এক পাসে পোস্টের ছয় গজ দূরে বল পেয়েছিলেন র্যাশফোর্ড। তার ডান পায়ের শট ঠেকাতে পারেননি উলভস কিপার। এই গোলের কিছুক্ষণ পরই রেফারি শেষ বাঁশি বাজান। শেষ পর্যন্ত ২-১ গোলে জয় নিয়েই সেমিতে উঠল উলভস। শেষবার তাঁরা এফ এ কাপের সেমিতে খেলেছিল ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে। সোলশার দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম টানা দুই ম্যাচ হারল ইউনাইটেড। ১৯৭৩ সালের পর এই প্রথম এফ এ কাপে উলভসের কাছে হারল ইউনাইটেড।
অন্য ম্যাচে দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত সেমিতে উঠেছে ম্যানচেস্টার সিটি। ২০ মিনিটে পেনাল্টি থেকেই সোয়ানসিকে এগিয়ে দেন ম্যাট গ্রিমস। নয় মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন বেরসান্ট কেলিয়া। দুই গোলে পিছিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে সিটি।
৬৯ মিনিটে সিটির হয়ে এক গোল শোধ করেন বের্নারদো সিলভা। ৭৮ মিনিটে পেনাল্টি মিস করেন আগুয়েরো। পোস্টে লেগে ফিরে আসা বল অবশ্য উলভস গোলরক্ষক ক্রিস্টোফার নর্দফেলদের পায়ে লেগে জালে জড়ায়। ৮৩ মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত সিটি, গ্যাব্রিয়েল হেসুসের হেড দারুণভাবে বাঁচিয়ে দেন সোয়ানসি কিপার। ৮৮ মিনিটে আগুয়েরোর হেড আর ঠেকাতে পারেননি তিনি। সিলভার ক্রসে লাফিয়ে উঠে আগুয়েরোর হেড জালে জড়ালে ৩-২ গোলের জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে সিটি। আগুয়েরো অফসাইড ছিলেন কিনা, এ নিয়ে অবশ্য রেফারির সাথে বেশ কিছুক্ষণ তর্ক করেছেন সোয়ানসি ফুটবলাররা। পেপ গার্দিওলার অধীনে এই প্রথম দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও জিতল সিটি।