খেলা ডেস্ক
পেপ গার্দিওলার ২৫ তম শিরোপা জয়? রাখুন এক দিকে! ম্যানচেস্টার সিটির সব প্রতিযোগিতা মিলে ছয় পেনাল্টি শুটআউটে ছয়বারই জয়? আপাতত তা ভুলে যান। ম্যানচেস্টার সিটি চেলসিকে হারিয়ে লিগ কাপ জিতেছে বটে, কিন্তু আজকে তা অন্তত আড়াল হয়ে যাচ্ছে। আজ ওয়েম্বলিতে যা হলো, ইংলিশ ফুটবল তো বটেই, পেশাদার ফুটবলেও এমন কিছু আপনি দেখেছেন কি না সন্দেহ!
ম্যাচের তখন শেষ দিক। নির্ধারিত সময়ের খেলা গোলশুন্য ড্রতে শেষ আগেই্, চলছে অতিরিক্ত সময়ের কথা। চেলসি-সিটি, খুব বেশি সুযোগ পায়নি কেউই। প্রথমার্ধে আগুয়েরো কঠিন একটা সুযোগ পেয়েছিলেন সিটির হয়ে, কিন্তু দুরুহ কোণ থেকে বল পোস্টে রাখতে পারেননি। দ্বিতীয়ার্ধে চেলসিই পরিষ্কার সুযোগ পেয়েছিল, কিন্তু কান্তে বা পেদ্রো কাজে লাগাতে পারেননি। যোগ করা সময়ে আগুয়েরো অমন অলৌকিকভাবে মিস না করলে এগিয়ে যেতে পারত সিটি। ম্যাচ শেষ হওয়ার মাত্র কয়েক মিনিট বাকি তখন, ওয়েম্বলি অপেক্ষায় টাইব্রেকারের।
নাটকের শুরুটা হলো তখনই। চেলসি গোলরক্ষক কেপা আরজিবালাহার ক্র্যাম্প হলো আগুয়েরোর একটা সেভ করতে গিয়ে, প্রায় কাতরাতে কাতরাতেই শুয়ে পড়লেন মাটিতে। ওপাশ থেকে চেলসি কোচ মরিজিও সারি তাঁকে ইশারা দিচ্ছেন নেমে যাওয়ার। সারি সেটা স্বাভাবিকভাবেই চাইতে পারেন, বদলি গোলরক্ষক উইলি কাবায়েরোর যে পেনাল্টি-স্পেশালিস্ট হিসেবে খ্যাতি আছে। দুই বছর আগে সিটিকেই একবার টাইব্রেকারে জিতিয়ে শিরোপা পাইয়ে দিয়েছিলেন এই লিগ কাপেরই।
কিন্তু এরপর যা হলো, তাতে শুধু সারি নন, স্তম্ভিত গোটা স্টেডিয়াম। কেপা ইশারা দিয়ে বললেন তিনি ঠিক আছেন, উঠে যেতে চান না। সারি আবারও ইঙ্গিত দিলেন নেমে যাওয়ার, বুঝিয়ে দিলেন পরিবর্তনটা ট্যাকটিক্যাল। কাবায়েরোও গালভস পরে তৈরি। কেপা আবারও ইশারা দিলেন তিনি মাঠে থাকতে চান। রেফারি একবার কথাও বললেন, এরপর সারিকে গিয়ে বললেন খেলোয়াড় উঠে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। ক্ষোভে দুঃখে সারি তখন পারলে স্টেডিয়ামই ছেড়ে যান। শেষ পর্যন্ত সেটা অবশ্য হয়নি।
এসবের মধ্যেই শুরু হয়ে গেল টাইব্রেকার। কেপার সামনে নিজেকে প্রমাণ করার পর্বতপ্রমাণ চাপ। প্রথম কিকটাই মিস করলেন চেলসির জর্জিনহো, আগের ১২টি পেনাল্টির প্রতিটিতেই যাঁর গোল আছে। সিটির হয়ে গোল দিলেন গুন্ডোয়ান, চেলসির হয়ে আজপিলিকুয়েতা। সিটির হয়ে আগুয়েরো মিস প্রায় করেই ফেলেছিলেন, কিন্তু ঠিক দিয়ে লাফ দিয়েও সেভটা করতে পারেননি কেপা। চাপটা যে তাঁর ওপর বেশি হয়ে যাচ্ছে, তা বোঝাই যাচ্ছিল। এমারসন গোল করলেন, এরপর সানের কিকটা দারুণভাবে ঠেকিয়ে দিলেন কেপা। টাইব্রেকারের প্রথম তিনটি শেষে দুই দল সমতায়। কিন্তু ডেভিড লুইজের শট ফিরে এলো পোস্টে লেগে, বার্নার্দো সিলভা মিস করলেন না। হ্যাজার্ড গোল দেওয়ার পর অবস্থাটা এমন দাঁড়াল, শেষ কিকে স্টার্লিং গোল করলেই সিটি চ্যাম্পিয়ন। সুযোগটা মিস করলেন না, দারুণ এক কিকে সিটিকে পাইয়ে দিলেন এই মৌসুমে তাদের প্রথম শিরোপা।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেপা-নাটকে আড়াল হয়ে গেল সবকিছু!