নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টার ভবনে অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে ২২ জনের লাশ শনাক্তে তাদের স্বজনদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ শুরু হয়েছে।
আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে যান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি)একটি দল।তারা সেখানে উপস্থিত লাশের স্বজনদের নমুনা সংগ্রহ শুরু করেন।
ঢামেক সূত্র জানায়, চকবাজারের ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪৫ জনের লাশ শনাক্ত করা হয়েছে। বাকি ২২টি লাশ শনাক্তে স্বজনদের ডিএনএ টেস্ট করা হবে। ডিএনএ টেস্টের পরই তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যাবে।
মেডিকেল সূত্র জানায়, শনাক্ত হওয়া ৪৫ লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর সম্পন্ন হয়েছে। সেগুলো নিজ নিজ এলাকায় দাফনেরও প্রস্তুতি চলছে। বাকি লাশগুলোর চেহারা এতটাই বিকৃত হয়ে গেছে যে, শনাক্ত করা যাচ্ছে না। তাদের শনাক্তের জন্য স্বজনদের ডিএনএ নমুনা লাগবে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার (মিডিয়া) শারমিন জাহান গণমাধ্যমকে বলেন, বাকি লাশগুলো শনাক্ত করতে স্বজনদের কাছ থেকে ডিএনএ নেয়া হবে। এ জন্য স্বজনদের শরীর থেকে রক্ত নেয়া লাগবে।
জানা যায়, তারা সেখানে ২২ মরদেহ এবং স্বজনদের থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করবে।পরে সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে ডিএনএ টেস্ট শেষে প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এ বিষয়ে সিআইডির অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিএনএ অ্যানালিস্ট নুসরাত জানান, আমরা এখন বাকি ২২ লাশ থেকে ডিএনএ’র নমুনা সংগ্রহ করব। পাশাপাশি নিহতদের মরদেহের খোঁজে আসা স্বজনের ডিএনএ’র নমুনা সংগ্রহ করব।সেগুলো সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষার পর পুলিশের কাছে প্রতিবেদন আকারে জমা দেয়া হবে।
ঢামেক সূত্রে জানা যায়, ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল মর্গের ফ্রিজ নষ্ট থাকায় অশনাক্ত ২২টি মরদেহের মধ্যে মিটফোর্ড হাসপাতালে ৫টি, সোহরাওয়ার্দীতে ৫টি, কুর্মিটোলায় ৩টি, হৃদরোগ হাসপাতালে ৫টি ও ঢাকা মেডিকেল জরুরি বিভাগের ফ্রিজে ৩ মরদেহ পাঠানো হয়েছে।এ নিয়ে মোট ২২টি মরদেহ এখনও শনাক্ত হয়নি। ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে মরদেহগুলো বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া জানান, এখন পর্যন্ত ৪৫ জনের লাশ শনাক্ত করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
যে ৪৫ লাশের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে, তারা হলেন- রাজু (৩০), তার ভাই মাসুদ রানা (৩৫), সিদ্দিকুল্লাহ (৪৫), আব বকর সিদ্দিক (২৭), আলী মিয়া (৭৫), মোশাররফ হোসেন (৩৮), কামাল হোসেন (৫২), ইয়াসিন খান রনি (৩২), জুম্মন (৬৫), এনামুল হক (২৮), মজিবর হাওলাদার (৪৫), মুফতি ওমর ফারুক (৩৫), মোহাম্মদ আলী (৩২) ও তার ভাই আবু রায়হান (৩১), তার ছেলে আরাফাত (৩), ইমতিয়াজ ইমরোজ (২৪), হেলাল (৩০), ওয়াফিউল্লাহ (২৫), সোনিয়া (২৮), স্বামী মিঠু (৩৫), তাদের ছেলে শাহিদ (৩), রহিম দুলাল (৪৫), হিরা, নাসির, মঞ্জু, আনোয়ার, কাওসার, শায়লা খাতুন, আরমান হোসেন রিমন, মামুনুর রশীদ, আবু তাহের, রুবেল হোসেন, সৈয়দ সালাউদ্দিন, মুসা, ইলিয়াস মিয়া, মিজানুর, আসিফ, মো. হোসেন বাবু, খলিলুর রহমান সিরাজ, নূর ইসলাম হানিফ এবং নবীউল্লাহ খান।
এ ছাড়া অন্য লাশের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে বলে ঢামেক সূত্রে জানা গেছে।