২২শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং | ৭ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | রাত ১:২৯

যা থাকছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ইশতেহারে

দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি আজ তাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করছে।

আওয়ামী লীগ সকাল ১০টায় প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এবং বেলা ১১টায় গুলশানে হোটেল লেকশোরে ইশতেহার ঘোষণা করবে বিএনপি।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করবেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্যদিকে বিএনপির ইশতেহার ঘোষণা করবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সবার দৃষ্টি এখন প্রধান দুই দলের ইশতেহারের দিকে।

আওয়ামী লীগের ইশতেহারে দুটি বিষয়ে বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে। প্রথমত, ‘আমার গ্রাম-আমার শহর’ শিরোনামে অঙ্গীকারে প্রতিটি গ্রামে আধুনিক নগর সুবিধা পৌঁছে দেয়ার রূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে।

দ্বিতীয়ত, তারুণ্যের শক্তি-বাংলাদেশের সমৃদ্ধি- এই শিরোনামে করা অঙ্গীকারে তরুণ ও যুবসমাজকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তর এবং কর্মসংস্থানের নিশ্চয়তার কথা বলা হয়েছে।

অন্যদিকে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে তরুণ, নারী এবং বয়স্ক নাগরিকদের বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ইশতেহার প্রস্তুত করেছে বিএনপি।এতে সুশাসনের দিকেও বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আপসহীন অবস্থান, জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ১১ শতাংশে উন্নীতকরণসহ নানা প্রতিশ্রুতি থাকছে ইশতেহারে।

আওয়ামী লীগের ইশতেহারে গণতন্ত্র, নির্বাচন ও কার্যকর সংসদ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপনে ২০২০ ও ২০২১ সালকে মুজিববর্ষ ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ।

ইশতেহারের শেষের দিকে এ বিষয়ে বিস্তারিত কর্মসূচি তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া ২০৩০ সালে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়ন, ২১০০ সাল পর্যন্ত বদ্বীপ বা ডেল্টা পরিকল্পনা এবং শেখ হাসিনার বিশ্বজনীন স্বীকৃতির বিষয়গুলো রয়েছে।

ইশতেহার প্রণয়ন কমিটির একাধিক সদস্য জানান, এবারের ইশতেহারের মূল স্লোগান হচ্ছে- ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ’। এতে ২১টি বিশেষ অঙ্গীকার করা হয়েছে।

বিএনপির ইশতেহারে মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রের সম্মানিত নাগরিক হিসেবে ঘোষণা, তাদের নির্ভুল তালিকা প্রস্তুত এবং মূল্যস্ফীতির নিরিখে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ভাতা বৃদ্ধি করাসহ নানা প্রতিশ্রুতিও থাকছে।

আওয়ামী লীগের ইশতেহারে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন (২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত) সরকারের সময়টাকে সংকট উত্তরণ ও দিনবদলের যাত্রা হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। বর্তমান শাসনামলকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশকে বিশ্বের বিস্ময় হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও খাতের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অর্জন এবং ভবিষ্যতে কী করা হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হয়েছে।

অন্যদিকে, ১৯৯১ সাল থেকে প্রতিটি নির্বাচনের আগে বিএনপির ইশতেহার ঘোষণা করতেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এবার তিনি কারাবন্দি থাকায় দলীয় প্রধানের অনুপস্থিতিতেই বিএনপির ইশতেহার ঘোষণা করতে হচ্ছে।

ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে সংবিধান সংস্কার করে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য, জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা, ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন, সংবিধানে গণভোট ব্যবস্থা প্রবর্তন, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার নিয়োগ, প্রতিহিংসার রাজনীতি না করা, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, বিশেষ ক্ষমতা আইন ১৯৭৪ বাতিল ইত্যাদিসহ নানা প্রতিশ্রুতি থাকছে বিএনপির ইশতেহারে।

জানা গেছে, বিএনপির ইশতেহারে তরুণ দম্পতি ও উদ্যোক্তাদের স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য ২০ বছর মেয়াদি ঋণ চালু, শিক্ষিত বেকারদের বেকার ভাতা চালু, শিক্ষার্থীদের ওপর থেকে ভ্যাট বাতিল এবং ভ্যাটবিরোধী, কোটা সংস্কার এবং নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের মামলা প্রত্যাহার এবং তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি থাকছে। এছাড়া বিএনপির ইশতেহারে শিক্ষা খাতে জিডিপির ৫ শতাংশ অর্থ ব্যয়, শিক্ষা চ্যানেল চালু, বিদেশি খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিগ্রি অর্জনে বৃত্তি, ছাত্রসংসদ নির্বাচন, মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করা, প্রশ্ন ফাঁস প্রতিরোধে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রথম ৩ বছরে দুর্নীতিমুক্ত ব্যবস্থায় মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে দুই লাখ মানুষকে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি থাকছে।

প্রকাশ :ডিসেম্বর ১৮, ২০১৮ ৯:২১ পূর্বাহ্ণ