কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালক আমজাদ হোসেন আর নেই। ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে ব্যাংককে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান বলে তার পরিবার সূত্র নিশ্চিত করেছে।
গত ১৮ নভেম্বর সকালে নিজের বাসভবনে আমজাদ হোসেন ব্রেনস্ট্রোক করলে তাকে দ্রুত রাজধানীর ইমপালস হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
শুরুর দিকে তার অবস্থা কিছুটা ভালো থাকলেও পরে এ নির্মাতার শারীরিক অবস্থা বেশ সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে।
এদিকে প্রখ্যাত এ চিত্রপরিচালকের উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪২ লাখ টাকার চেক প্রদান করেন। এরপর ২৭ নভেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে আমজাদ হোসেনকে ব্যাংককের বামরুগ্রাদ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই কিংবদন্তি।
আমজাদ হোসেনের জন্ম ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট, জামালপুরে। শৈশব থেকেই তিনি সাহিত্যের প্রতি অনুরাগী ছিলেন। পঞ্চাশের দশকে ঢাকায় এসে সাহিত্য ও নাট্যচর্চার সঙ্গে জড়িত হন।
যাত্রার শুরুটা ছিল মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘তোমার আমার’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে। এরপর তিনি অভিনয় করেন মুস্তাফিজ পরিচালিত ‘হারানো দিন’ চলচ্চিত্রে।
আমজাদ হোসেনের লেখা নাটক ‘ধারাপাত’ নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন সালাহউদ্দিন। এতে আমজাদ হোসেন নায়ক হিসেবে অভিনয় করেন। এরপর তিনি জহির রায়হানের ইউনিটে কাজ শুরু করেন।
এভাবেই দীর্ঘদিন কাজ করতে করতে ১৯৬৭ সালে নিজেই চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। নাম ‘জুলেখা’। তার পরিচালিত ব্যাপক দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্র হচ্ছে ‘বাল্যবন্ধু’, ‘পিতাপুত্র’, ‘এই নিয়ে পৃথিবী’, ‘বাংলার মুখ’, ‘নয়নমনি’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, ‘ভাত দে’, ‘হীরামতি’, ‘প্রাণের মানুষ’, ‘সুন্দরী বধূ’, ‘কাল সকালে’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’ ‘গোলাপী এখন বিলেতে’ ইত্যাদি।
১৯৮১ সালে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত পালন করেন আমজাদ হোসেন। গুণী এই পরিচালক ১৯৭৮ সালে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ এবং ১৯৮৪ সালে ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।