বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উদ্যোগে আলোচনা সভা, স্বেচ্ছায় রক্তদান ও পুষ্পস্তবক অর্পণসহ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে।
জাতীয় এ দিবসের শুরুতে শুক্রবার ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, চিকিৎসক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বুকে কালো ব্যাচ ধারণ করেন।
সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ব্লকে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর ম্যূরালে এবং সকাল ৯টায় মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার নেতৃত্বে শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও কর্মচারীরা পুষ্পস্তবক অপর্ণের মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।
এ সময় উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. সাহানা আখতার রহমান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মুহাম্মদ রফিকুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, সিন্ডিকেট মেম্বার অধ্যাপক ডা. কাজী শহীদুল আলম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. এ বিএম আব্দুল হান্নান, প্রক্টর অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোজাফফর আহমেদ, শিশু কার্ডিওলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, পরিচালক (আইকিউএসি) অধ্যাপক ডা. মো. শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মো. আসাদুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান, অধ্যাপক নকুল কুমার দত্ত, হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ, হেপাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, গ্রাজুয়েট নার্সিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মেবেল ডি রোজারিও, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক ডা. জিল্লুর রহমান ভূঁইয়া, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) মো. আবদুস সোবহান, বিএসএমএমইউ’র সহযোগী অধ্যাপক ডা. শিউলী চৌধুরী, সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. আবু তাহের, সহযোগী অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী, সহযোগী অধ্যাপক ডা. রেজাউল করিম কাজল, সহযোগী অধ্যাপক ডা. চঞ্চল কুমার ঘোষ, সহযোগী অধ্যাপক ডা. বিজয় কুমার পাল, সহযোগী অধ্যাপক ডা. তৌহিদ মো. সাইফুল ইসলাম দিপু, চিফ অ্যাস্টেট অফিসার ডা. এ কে এম শরীফুল ইসলাম, স্বাচিপ নেতা সহকারী অধ্যাপক ডা. আরিফুল ইসলাম জোয়ারদার টিটু, সহকারী পরিচালক ডা. পবিত্র কুমার দেবনাথ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অপর্ণের পর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়াসহ প্রশাসানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং দোয়া-মোনাজাতে অংশগ্রহণ করেন।
এরপর সকাল সাড়ে ১০টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বি ব্লকের বঙ্গবন্ধুর ম্যূরালের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রান্সফিউশন মেডিসিন বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।
সকাল ১১টায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ডা. মিল্টন হলে এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় আলোচক হিসেবে ছিলেন শহীদ ডা. আবদুল আলীম চৌধুরীর সহধর্মিণী ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, বিএমএ-এর সাবেক সভাপতি ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হাসান, বিএমএ-এর সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন প্রমুখ।
অলোচনা সভায় শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী বলেন, ‘শহীদদের রক্তে ভেজা বাংলাদেশে শহীদদের অবমাননা হতে পারে না। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধীদের নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এটা কি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে উপহাস করা নয়? বুদ্ধিজীবীসহ শহীদদের সঙ্গে বেইমানী করা নয়? স্বাধীনতাবিরোধীরা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ পাওয়ায় শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ শহীদদের পরিবারবর্গের সদস্যদের স্বজন হারানোর বেদনা শতগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। এ নিষ্ঠুর অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।’
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৪ আগস্ট বাঙালি জাতিকে মেধাশূন্য করার জন্যই পাকিস্তানের সৈন্যরা বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল। স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী বর্তমানেও দেশের ভেতরে-বাইরে সক্রিয় থেকে নানা চক্রান্ত ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এ চক্র অধিক তৎপর হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশকে রক্ষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।’ চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি যাতে আবারও ক্ষমতা আসতে পারে সে জন্য দেশবাসীকে তাদের মহামূল্যবান ভোটটি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের জোটকে প্রদানের আহ্বান জানান তিনি।