টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে গত ১ ডিসেম্বর তাবলিগ জামাতের দুপক্ষের সংঘর্ষের পর শনিবার বিকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মুরব্বিদের সঙ্গে মতবিনিময় করার পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমরা মন্ত্রণালয়ে উভয়পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত জানালাম, যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে কোনো জোড় ও বিশ্ব ইজতেমা হবে না। সারা দেশে জেলায় জেলায় যে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়, সেটাও বন্ধ থাকবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওই দিনের সংঘর্ষ ও হতাহতের ঘটনায় যে মামলা হয়েছে তা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, ইজতেমা এবং তাবলিগ সম্পর্কে দেশের মানুষের ভালো ধারণা ছিল। কিন্তু সম্প্রতি তাবলিগ জামাতের দুটি গ্রুপ হয়ে যায়। তাদের মধ্যে ভিন্নমত দেখা দেয়। ফলে বিভিন্ন জায়গায় মারামারির মতো ঘটনা ঘটতে থাকে। এমতাবস্থায় বিশ্ব ইজতেমা করা হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা নির্বাচনের পর উভয়পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে ইজতেমার তারিখ নির্ধারণ করব। তার আগ পর্যন্ত কোনো রকম ইজতেমা, জোড় ইজতেমার কাজ স্থগিত থাকবে। কিন্তু আমরা কী দেখলাম?
মন্ত্রী বলেন, এরপরও যেহেতু ইজতেমা ময়দানে একটা হত্যাকাণ্ড হয়েছে, আরও তিনজন তাবলিগের সাথী মৃত্যুশয্যায় রয়েছেন এবং আরও বেশকিছু ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ ব্যাপারে থানা এবং কোর্ট মিলিয়ে ৩টি মামলা হয়েছে, এই মামলাগুলো তদন্তের পর যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তার বিচার করা হবে।
এ সময় আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী, স্থানীয় সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, তাবলিগ জামাতের মুরব্বিরা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইজতেমায় মুসল্লিরা এখানে আসেন ইবাদতের জন্য, ধর্মীয় কাজে। তারা মাঠের কাজের জন্য, তাবলিগের মেহনতের জন্য এসেছে। এরা কীভাবে মারামারি করতে পারে এর জন্য প্রশাসনের কেউ প্রস্তুত ছিল না। আমরা ভেবেছিলাম তারা ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করে প্রস্তুতি সভা করবে। কিন্তু তারা তা না করে ভাঙচুর করে এবং এখানে যারা ছিলেন তাদের আহত করলেন। এটা সত্যিই দুঃখজনক ঘটনা।
তিনি আরও বলেন, দুপক্ষ আবার বসে তাদের মধ্যে যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে তা ক্লিয়ার করবে এবং ইজতেমা আবার হবে এটা আমরা বিশ্বাস করি। মন্ত্রী ইজতেমার মাঠে সংঘর্ষে ভাঙচুরের বিভিন্ন আলামত পরিদর্শন করেন এবং তাবলিগের মুরব্বিদের সঙ্গে কথা বলেন।