একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাগেরহাট-২ (সদর ও কচুয়া) আসনে মহাজোট থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বঙ্গবন্ধু পরিবারের তৃতীয় প্রজন্ম শেখ সারহান নাসের তন্ময় এলাকায় তারুণ্যের আইকন হিসেবে পরিণত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চাচতো ভাই ও বাগেরহাট-১ আসনের এমপি শেখ হেলালের ছেলে শেখ তন্ময় শুধু তার সংসদীয় এলাকাতেই নয়, দেশের সংবাদ মাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সাড়া ফেলে দিয়েছেন।
বঙ্গবন্ধুর নাতি তরুণ সুদর্শন শেখ সারহান নাসের তন্ময় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আসায় দলের নেতাকর্মী সমর্থকরা যেমন উজ্জ্বীবিত, তেমনি বাগেরহাটের সাধারণ মানুষও দারুণ উৎফুল্ল। আসন্ন নির্বাচনে শেখ পরিবারের সদস্য শেখ তন্ময় অংশ নেয়ায় তিনি যেখানেই যাচ্ছেন দলমতের উর্দ্ধে থেকে সবাই তাকে এক নজর দেখার জন্য ভিড় করছেন দলমতের উর্ধ্বে সব শ্রেণীপেশার মানুষ।
প্রথমবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে শেখ তন্ময় হেভিওয়েট প্রার্থীর তালিকায় স্থান করে নিয়েছেন। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারনা শুরু হবার আগেই দলীয় সভা, ধর্মীয় ও সামাজিক কোন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাগেরহাট শহরের বাসা থেকে বের হলেই শেখ তন্ময়কে ঘিরে ধরে সাধারন মানুষ। কোন রকম বিরক্ত না হয়েই খুব সহজেই সাধারন মানুষের সাথে একাকার হয়ে যান তিনি। তরুন-তরুনীসহ সর্বশ্রেনীর ভোটারদের মুখেমুখে এখন শেখ তন্ময়ের জয়গান। তার রাজনীতিতে আসা, ভবিষ্যতে দেশ নিয়ে তার ভাবনা কী তা জানতে বাংলাদেশ প্রতিদিন ও তরুণ প্রজন্মের প্রার্থী শেখ তন্ময় একান্তে মুখোমুখি হয়েছিল।
পারিবারিক সিদ্ধান্তেই কি রাজনীতিতে এসেছেন ?এমন প্রশ্নের উত্তরে শেখ তন্ময় বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়ে বড় হয়েছি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (বড় ফুফু) অনুপ্রেরণায় রাজনীতি করতে আগ্রহী হয়েছি। তাছাড়া আমার ছোট ফুফু শেখ রেহানা রাজনীতিতে আসতে আমাকে সাহস যুগিয়েছেন। আর বাবা শেখ হেলাল উদ্দীন তো রাজনীতিতে দুই যুগ থেকে আছেনই। শৈশব থেকে পরিবারের মধ্যে দেখে আসা রাজনীতির চর্চা আমাকে রাজনীতিতে আসতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
তিনি আরও বলেন, প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার পর দলের মধ্যে একতা শক্তিশালী হয়েছে। আমি নিজে যে কোনদিন রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়ব বুঝতে পারিনি। রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে এসে দলের নেতাকর্মী সমর্থকদের ভালবাসা পেয়ে আমি সত্যিই আনন্দিত। আমাকে পেয়ে তারা অনেক প্রত্যাশা নিয়ে কাজ করছেন। বাগেরহাটে আমি যেন সুস্থ, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ তৈরি করতে পারি এমনটাই আমার অঙ্গিকার থাকবে।
আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ গত কয়েকটি নির্বাচনের থেকে অনেক ভাল দাবি করে বলেন, বর্তমান সরকার নির্বাচনের জন্য সুন্দর একটা পরিবেশ তৈরি করেছেন। উদাহরণ হিসেবে যদি বলি আমার প্রতিপক্ষ প্রার্থীরা আসন্ন নির্বাচনে নির্বিঘ্নে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন, জনসংযোগ করছেন। তাদের আমরা কোন বাধা দিচ্ছিনা।
নির্বাচিত হলে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি হবে জানতে চাইলে? এই প্রশ্নের উত্তরে শেখ তন্ময় বলেন, আমি তরুণ প্রজন্মের একজন প্রতিনিধি। প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগ আমাকে বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া) আসনে মনোনয়ন দিয়েছে। তরুণ প্রজন্মের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক উদ্যোগ নিয়েছেন। তথ্য প্রযুক্তিতে তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে তরুণদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। গ্রামের কিশোর তরুণীরা যাতে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে পারে সেজন্য আগামীতে প্রত্যেক জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী এই সরকার আবার ক্ষমতায় গেলে অর্থনীতির অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে তরুণদের বেকারত্ব ঘুচাতে তাদের নতুন নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে নানামূখি পদক্ষেপ নেয়া হবে।
তিনি বলেন, আমি ছাত্রজীবনে সাংবাদিকতা বিভাগের একজন ছাত্র ছিলাম। আমি সাংবাদিকতা বিভাগে ছাত্র থাকা অবস্থায় কলাম লিখতাম। আমি আমার উচ্চতর ডিগ্রীটাও সাংবাদিকতার উপর করেছি। আধুনিক গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রে গনমাধ্যম জাতির চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমের (মিডিয়া) গুরুত্ব অপরিসীম।
তিনি আরও বলেন, গণমাধ্যমে যারা কাজ করেন তাদের সবারই একটি দায়িত্ব আছে, আমি যদি ভুল করি তা ধরিয়ে দেয়া। ভাল কাজ জনগনের মাঝে তুলে ধরা। আজকে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমাদের কিছু মত পার্থক্য থাকতে পারে, বিরোধীদল আছে, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি আছে। আজকে দেশকে সাম্প্রদায়িক শক্তি থেকে বের করে নিয়ে এসে তরুণদেরকে সাথে নিয়ে সুন্দর সম্ভবনাময় দেশ উপহার দিতে চাই। আমাকে দল এখানে মনোনয়ন দিয়েছে। আমার দায়িত্ব কিভাবে বাগেরহাটকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় এবং এখানকার মানুষ শান্তিতে থাকতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখা। তাছাড়া কিভাবে নির্বাচিত হয়ে তরুণ প্রজন্মের জন্য বাংলাদেশের ভাল প্রতিনিধি হতে পারি সেই চেষ্টা করা।
শেখ তন্ময় জানান, আমার এই পথচলায় কিছু ভুলত্রুটি হতে পারে, হবে। তাই আমি চাই আপনারা আমাকে সহযোগিতা করবেন। সরকারের নির্বাচিত জনপ্রনিধিরা বিগত দিনে যেমন কাজ করেছেন, আমিও নির্বাচিত হয়ে সেই সকল ভাল কাজে নিজেকে যুক্ত করতে। আমার পরিবারের সদস্যরা রাজনীতির বাইরে এসে সাংবাদিকতা, খেলাধুলায় অবদান রেখেছেন। রাষ্ট্র পরিচালনা বা ভাল সমাজ গড়তে যেসব গুনবলি প্রয়োজন। আমি হয়ত রাজনীতি করিনা বা মাঠে ভাল স্লোগান বক্তব্য দিতে পারিনা। কিন্তু আমার পরিবার থেকে শেখানো হয়েছে যে যা জানো তা দিয়ে তুমি তোমার দায়িত্ব পালন কর। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয়ভাবে দলের নেতাকর্মীরা মনে করেছেন আমার রাজনীতিতে আসা উচিৎ তাই আমি রাজনীতিতে এসেছি। রাজনীতিতে না আসলে হয়ত আমি সাংবাদিকতায় থাকতাম অথবা ক্রিকেটার বা সংগীত শিল্পী হতে পারতাম। যেহেতু আমি রাজনীতিতে এসেছি আমার ভুল ত্রুটি হলে তা ধরিয়ে দেবেন আমি আমার সাধ্য অনুযায়ি দায়িত্ব পালন করে যাব।
তিনি বলেন, বাগেরহাটের মানুষ কিভাবে শান্তিতে থাকতে পারে, স্থানীয় জনগন যেন তাদের উন্নয়নটা বুঝে নিতে পারে তার জন্য সাংবাদিকদের সহযোগিতা নিয়ে সামনে এগোতে চাই। আপনারা বাগেরহাটের মানুষ আপনারা জানেন এখানকার মানুষের কি প্রয়োজন আছে কি প্রয়োজন নেই। আমি আসন্ন নির্বাচনে বিজয়ী হই বা না হই আপনাদের সাথে নিয়ে আগামীতে বাগেরহাটবাসীর পাশে থাকতে চাই।