একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজ দলের যারা বিভিন্ন আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন, তাঁদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারে ‘বিশেষ অনুরোধ’ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। এক চিঠিতে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেছেন, ‘আপনার কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ, ঐক্যবদ্ধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে মহাজোট প্রার্থীর পক্ষে আপনার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে মহাজোটকে বিজয়ী করার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করবেন। আপনার ত্যাগ, শ্রম ও আন্তরিকতা সবকিছুই আমার বিবেচনায় আছে।’
আজ শনিবার দুপুরে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ গণমাধ্যমে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠান। বিজ্ঞপ্তিতে দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষর দেওয়া একটি চিঠি রয়েছে।
দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে যারা প্রার্থী হন, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তাঁরা ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে চিহ্নিত হন।
চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীদের বলেছেন, বিএনপি জামায়াতের হিংস্র থাবা থেকে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করে বাংলাদেশকে টেকসই গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কারণে আমরা সমমনা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। তিনি বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের প্রাণপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে আবারও বাংলাদেশের জনগণের সেবা করার সুযোগ পাবে। সেই বিজয়ের অংশীদার হবেন আপনিও। আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, আওয়ামী লীগ যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে, তাহলে নৌকা মার্কাকে পরাজিত করার সাংগঠনিক শক্তি আর কারও নেই।
‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আশা করি, আগামী নির্বাচনে আপনার নির্বাচনী এলাকায় আওয়ামী লীগ ও মহাজোট মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে আপনার সকল সাংগঠনিক দক্ষতা, শক্তি ও সামর্থ্য আওয়ামী লীগের বিজয়কে সুনিশ্চিত করবে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের গত এক দশকের অর্জিত উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে সংগঠনের একজন আদর্শবান, ত্যাগী ও বিশ্বস্ত নেতা হিসেবে সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের নিয়ে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা ও সার্বিক কর্মকাণ্ডে আপনার স্বতঃস্ফূর্ত ও সক্রিয় অংশগ্রহণ একান্তভাবে প্রত্যাশা করছি।
এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রায় ৮০ জনের মতো বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন। নির্বাচন কমিশনের যাচাই-বাছাইয়ে কয়েকজন বাদ পড়েছেন। এ ছাড়া কেউ কেউ মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারও করেছেন। এসব বাদ দিয়ে এখনো পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রায় অর্ধশত বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচন করার জন্য মাঠে আছেন। তাঁদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে এই চিঠি দিয়েছেন।