মুক্তিযুদ্ধের উপ-সর্বাধিনায়ক (ডেপুটি চিফ অব স্টাফ) এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) একে খন্দকার ফের রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছেন। তিনি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামে যোগ দিচ্ছেন।
আজ দুপুর ১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি গণফোরামে যোগ দিচ্ছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গণফোরামের প্রশিক্ষণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পথিক।
একে খন্দকার বিমানবাহিনীর প্রধান ছিলেন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা একে খন্দকারকে মন্ত্রী করা হয়। তাকে দেয়া হয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়।
একটি বই প্রকাশ নিয়ে একে খন্দকারের সঙ্গে আওয়ামী লীগের দূরত্ব বাড়ে। বইটির নাম ১৯৭১: ভেতরে বাইরে। বইটি প্রকাশ হওয়ার পর আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল নেতাদের তোপের মুখে পড়েন এ মুক্তিযোদ্ধা।
এর পর থেকেই তিনি রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন।
যোগদানের বিষয়ে গণফোরাম নেতা পথিক জানান, একে খন্দকারের পাশাপাশি আজ গণফোরামে যোগ দিচ্ছেন একুশে টেলিভিশনের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুস সালাম।
গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন তাদের স্বাগত জানাবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণফোরামের এক নেতা জানান, রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা গণফোরামে যোগ দেয়ার বিষয়ে আগে থেকে কিছু বলতে রাজি হচ্ছেন না। তবে গণফোরাম তথা জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে আরও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও রাজনীতিবিদ যোগ দেবেন। তাদের বেশিরভাগই আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন।
এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে ড. রেজা কিবরিয়া গণফোরামে যোগ দেন। তিনি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে হবিগঞ্জ-২ আসনে নির্বাচন করতে চাইছেন।
গত সোমবার গণফোরামে যোগ দিয়েছেন সেনা ও বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ১০ কর্মকর্তা।
তারা হলেন- সেনাবাহিনী অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল খন্দকার ফরিদুল আকবর, শেখ আকরাম আলী, মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ, এএফএম নুরুদ্দীন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর মাসুদুল হাসান, মো. এমরান, মো. বদরুল আলম সিদ্দিকী।
বিমানবাহিনীর কর্মকর্তারা হলেন- অবসরপ্রাপ্ত স্কোয়াড্রন লিডার ফোরকান আলম খান, মো. হাবিব উল্লাহ ও মো. মাহমুদ।
শনিবার দুপুরে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে এসে দলটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়েছেন্ আওয়ামী লীগ নেতা আ ম সা আমিন।
আ ম সা আমিন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ২০০১ সালে কুড়িগ্রাম-২ আসন থেকে নির্বাচন করে পরাজিত হন।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ গণফোরামে যোগ দিচ্ছেন একে খন্দকারসহ কয়েকজন।
একে খন্দকার বিমানবাহিনী থেকে অবসরগ্রহণের পর রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। তিনি স্বাধীনতা বীরত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। এমএজি ওসমানীর পরেই উপপ্রধান সেনাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
বিমানবাহিনীর প্রথম ছিলেন একে খন্দকার। ১৯৭৭ সালে জিয়াউর রহমানের সরকারের সময় ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান।
১৯৮৬ সালের অক্টোবর থেকে ১৯৯০ সালের মার্চ পর্যন্ত তিনি এরশাদ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী ছিলেন।
এর আগে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশের হাইকমিশনার ছিলেন। বাংলাদেশ সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের চেয়ারম্যান হিসেবে দুই বছর দায়িত্ব পালন করেন একে খন্দকার।
২০০৮ সালের পর তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী হন। ২০১৪ সালে তার বই ‘১৯৭১ : ভেতরে বাইরে’ প্রকাশিত হয়। এটি রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি করে। এতে প্রকাশিত কিছু তথ্যের কারণে ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ আনেন আওয়ামী লীগ নেতারা।