মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, সৌদির ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার ঘটনায় প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে সরাসরি দায়ী করেনি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ। কিন্তু কয়েকদিন আগেই তুরস্কের কাছ থেকে পাওয়া সব তথ্য-প্রমাণ এবং কনস্যুলেটের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে পাওয়া ভিডিও বিশ্লেষণ করে সিআইএ জানিয়েছিল, ক্রাউন প্রিন্স সালমানের নির্দেশেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
খাশোগির কণ্ঠ থামিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদির রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত এক প্রিন্সকে এভাবেই নির্দেশনা দিয়েছিলেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ বলছে, টেলিফোনে সৌদি যুবরাজ এ নির্দেশনা দেন তারই ভাই যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূতকে। মার্কিন কর্মকর্তারা গণমাধ্যমের খবরে জানিয়েছেন, এ ধরনের একটি অপারেশন প্রিন্সের নির্দেশ ছাড়া ঘটেনি। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। আপনাদের উচিত তাদেরকেই এ বিষয়ে প্রশ্ন করা।
গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে অবস্থিত সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন জামাল খাশোগি। এরপর থেকেই তার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি। তুরস্ক প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিল যে, খাশোগিকে কনস্যুলেটের ভেতরেই হত্যা করা হয়েছে।
প্রথমদিকে তুরস্কের এই দাবি অস্বীকার করলেও পরে সৌদির তরফ থেকে খাশোগিকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করা হয়। তবে এই হত্যাকাণ্ডে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সম্পৃক্ততার বিষয়টি বরাবরই অস্বীকার করে আসছে সৌদি।
ফ্লোরিডার মার-এ-লাগোতে সিআইএর মূল্যায়ণ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে ট্রাম্প বলেন, তারা এ বিষয়ে নিশ্চিত কোন সিদ্ধান্তে উপনীত হয়নি। তাদের এমনটা মনে হয়েছে। আমার কাছে প্রতিবেদন আছে যে, তারা কোন সার-সংক্ষেপ করেনি। আমি জানি না যে, কেউ ক্রাউন প্রিন্সের বিরুদ্ধে এমন দাবি প্রমাণ করতে পারবে কিনা।
তবে চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকেই ভিন্ন সুরে কথা বলেছিলেন ট্রাম্প। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, খাশোগির হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি হয়তো খুব ভালোভাবেই জানতে পারেন সৌদি প্রিন্স। তিনি আরও বলেছেন, আমার মনে হয় এই মর্মান্তিক ঘটনার বিষয়ে ক্রাউন প্রিন্সের ধারণা আছে। হয়তো সে করেছে অথবা করেনি।
গত ১৭ নভেম্বর হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি সারাহ স্যান্ডার্স সাংবাদিকদের বলেন, খাশোগি হত্যার বিষয়ে পরিচালক গিনা হাসপেল এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর সিআইএর আলোচনার বিষয়ে ভরসা আছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের।
সৌদি প্রিন্সের নির্দেশেই যে এমন হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে সে বিষয়ে সরাসরি কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে কর্মকর্তাদের বিশ্বাস এই হত্যাকাণ্ডে প্রিন্সের সম্মতি ছিল। অপরদিকে, সৌদির তরফ থেকে বলা হচ্ছে যে, এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কিছুই জানতেন না প্রিন্স সালমান। উপসাগরীয় দেশটির পাবলিক প্রসিকিউটর এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হয়েছেন খাশোগি। কনস্যুলেটের ভেতরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে তাকে হত্যা করা হয়।